পেট ফোলাভাব কমাতে কার্যকরী ৮ উপায়

টিবিএন ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৯ ২০২৫, ৯:৪০

পেট ফোলাভাব অনেক সময় কয়েকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ছবি: হেলথ.কম

পেট ফোলাভাব অনেক সময় কয়েকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ছবি: হেলথ.কম

  • 0

পেট ফুলে যাওয়া এমন একটি অবস্থা যেখানে আপনার পেট ভরা এবং শক্ত মনে হয়। এমন অনুভূতি হয় যেন এটি গ্যাসে ভরা।

পেট ফোলাভাব একটি সাধারণ সমস্যা। অনেকেই বিভিন্ন সময় এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। এটি অস্বস্তি বাড়ায় এবং দৈনন্দিন কাজকর্মেও প্রভাব ফেলতে পারে। তবে কিছু সহজ ও কার্যকরী উপায় অনুসরণ করলে পেট ফোলাভাব কমানো সম্ভব।

পেট ফুলে যাওয়ার লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত গ্যাস, পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি, অল্প পরিমাণে খাওয়ার পরেও পেট ভরা অনুভূতি এবং পেট গড়গড় করা। কারণের ওপর নির্ভর করে এই অবস্থা ২৪ ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

দেখে নিন পেট ফোলাভাব কমানোর ৮টি কার্যকর উপায়-

হাঁটুন: ১০-১৫ মিনিট দ্রুত হাঁটা পেট ফোলাভাব কমাতে অনেক সাহায্য করতে পারে। কারণ হাঁটার সময় শরীরের গতি গ্যাস চলাচল করে যা আটকে থাকা গ্যাস বা বুদবুদ বের করে পেট হালকা করে দেয়।

পেট ম্যাসেজ করুন: হালকাভাবে পেট এবং মলাশয় পথে ম্যাসেজ আটকে থাকা গ্যাসের বুদবুদ বের হতে সাহায্য করে, যা পেট ফোলার সমস্যা কমায়। মালিশ করার সময় পেটের নিচের ডানদিকে শুরু করে বৃত্তাকারে আলতো হাত বুলিয়ে বাম দিকে ও নিচে নামান।

হালকা চাপ দিয়ে মালিশ করলে আটকে থাকা গ্যাস বের হয়ে অন্ত্রে স্বাভাবিক চলাচল ফিরে আসে। প্রতিবার ৫-১০ মিনিট মালিশ করুন। তবে ব্যথা লাগলে ম্যাসেজ করা বন্ধ রাখুন।

গরম পানিতে গোসল: গরম পানিতে গোসল করা পেট ফোলাভাব কমানোর দ্রুত উপায় হতে পারে। গরম পানির তাপ পেটের পেশি শিথিল করে, যার ফলে আটকে থাকা গ্যাস সহজে শরীর থেকে বের হতে পারে এবং অস্বস্তি কমায়।

এ ছাড়া ১৫-২০ মিনিট গরম পানিতে শুয়ে আরাম করলে মানসিক চাপ কমে এবং হজম প্রক্রিয়া ভালো হয়। চাপ কমালে অন্ত্রের পেশি ঢেউয়ের মতো স্বাভাবিক সংকোচন করতে পারে, যা খাবার, গ্যাস ও বর্জ্য সহজে পেটে চলাচল করতে সাহায্য করে।

হালকা ব্যায়াম করুন: যেকোনো ধরনের শারীরিক কাজ, যেমন হাঁটা বা বাগান করা, অন্ত্রকে সক্রিয় করে গ্যাস বের করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট মাঝারি ধরনের ব্যায়াম শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেট ফোলাভাব প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি বা তরল পদার্থ পানের অভ্যাস করা উচিত। কারণ পানি পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেট ফোলাভাব থেকে রক্ষা করে। তাই মিন্ট বা আদার চা খেতে পারেন। এ ছাড়া সাধারণ পানি ধীরে ধীরে পান করার চেষ্টা করুন।

কার্বনেটেড পানীয় এড়িয়ে চলুন: সোডা, বা অন্যান্য কার্বনেটেড পানীয়তে থাকা কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস তৈরি করে এবং পেট ফুলে যাওয়ার কারণ হতে পারে। তাই চিকিৎসকরা সাধারণ পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ছোট, আরও ঘন ঘন খাবার খান: বেশি খাবার একবারে খেলে হজম করার পদ্ধতি ভারী হয়ে পড়ে, যার ফলে খাবার পেট ও অন্ত্রে ঠিকমত হজম হতে পারেনা এবং খাবারের পরে পেট ফোলার সমস্যা হয়। তাই দিনের মধ্যে ছোট ছোট ভাগে খাবার খেলে হজম প্রক্রিয়া বেশি চাপ না পড়ে এবং পেট অতিরিক্ত ভর্তি হয় না।

খাবার ধীরে ধীরে খাওয়া, ভালো করে চিবানো এবং খাবারের মধ্যে তাড়াহুড়ো না করার মাধ্যমে হজম ভালো হয় এবং পুষ্টি সঠিকভাবে শোষিত হয়। খাবারের পরে একটু হাঁটাহাঁটি করলে হজম ত্বরান্বিত হয় এবং গ্যাস জমার কারণে ফোলাভাব কমানো যায়।

লবণ পরিহার করুন: অতিরিক্ত লবণ শরীরে পানি ধরে রাখে, যার ফলে পেট ফোলা এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ফোলাভাব দেখা দেয়। সয়া সস, ক্যানজাত খাবার, সালাদ ড্রেসিং এবং রেস্তোরাঁর খাবারে স্বাদের জন্য দেয়া টেস্টিং সল্ট পেট ফোলাভাবের কারণ হয়ে থাকে। তাই লবণ খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত।