হঠাৎ প্রিয়জনের হার্ট অ্যাটাক, জীবন বাঁচাতে অবিলম্বে যা করবেন

টিবিএন ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭ ২০২৫, ১১:৩৯ হালনাগাদ: ডিসেম্বর ৩ ২০২৫, ১৪:৫৩

সময়মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিলে হার্ট অ্যাটাক প্রাণঘাতীরূপ ধারণ করে। ছবি: হিন্দুস্তান টাইমস

সময়মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিলে হার্ট অ্যাটাক প্রাণঘাতীরূপ ধারণ করে। ছবি: হিন্দুস্তান টাইমস

  • 0

ইমপ্যাক্ট স্টোরিজ নামে একটি পডকাস্টে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ আলোক চোপড়া জানান তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তা না পাওয়া গেলে হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাঁচাতে যা করা যাতে পারে।

হৃৎপিণ্ডে রক্ত প্রবাহ বন্ধ বা বাধাগ্রস্ত হলে হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে। সময়মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিলে হার্ট অ্যাটাক প্রাণঘাতীরূপ ধারণ করে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, ইমপ্যাক্ট স্টোরিজ নামে একটি পডকাস্টে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ আলোক চোপড়া জানান তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তা না পাওয়া গেলে হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাঁচাতে যা করা যাতে পারে।

হার্ট অ্যাটাকের সময় হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রাথমিক পদক্ষেপগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রথমে, সবাইকে সরিয়ে ফেলুন, কারণ রোগীর চারপাশে ভিড় থাকলে সাহায্য করা কঠিন হয়। তাদের কিছুটা স্থান ও বাতাস নেওয়ার সুযোগ দিন।

এরপর রোগীকে শুইয়ে দিন, যেখানে এক পা একপাশে এবং অন্য পা আরেক পাশে থাকবে। সাধারণভাবে, বিশেষজ্ঞরা হাঁটু গেড়ে বসে পুরো ওজন ব্যবহার করে সিপিআর দিয়ে থাকেন।

সিপিআর করার সময় রোগীর বুকের ওপর যথাযথভাবে চাপ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করার জন্য রোগীকে এমনভাবে শুইয়ে রাখতে হবে যাতে বুকের মাঝখানায় (স্টার্নাম বা বুকের হাড়) হাত দিয়ে পুরো ওজন ব্যবহার করে চাপ দেওয়া সম্ভব হয়।

এই অবস্থায় স্টার্নাম বা বুকের হাড় কমপক্ষে ৩ থেকে ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত সংকুচিত করতে হয়। এর ফলে অনেক সময় পাঁজরের হাড় ভেঙে যেতে পারে, তবে পরে এটি ঠিক করা সম্ভব।

হার্ট অ্যাটাকের সময় রোগীর রঙও পরিবর্তিত হতে পারে। সাধারণত মৃত্যুর সময় তারা নীলাভ বা গাঢ় দেখায়। তবে যখন রঙ স্বাভাবিক হয়ে আসে, তখন বোঝা যায় যে হৃৎপিণ্ড আবার কাজ করছে।

তবে এসময়ের মধ্যে সিপিআর চালিয়ে যেতে হবে এবং এক মিনিটের জন্যও থামানো যাবে না। প্রতিটি ধাপ সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে করতে হবে। সাধারণত পাঁচ থেকে দশ মিনিটের মধ্যে যদি কোন পরিবর্তন না আসে, তাহলে বোঝা যায় যে রোগী মারা গেছেন।

ড. চোপড়া প্রস্তাবিত পদ্ধতিটি মূলত কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর)। সিপিআর দেয়ার সময় বুকের মাঝখানে জোরে চাপ দেওয়া হয়, যাতে হার্ট থেমে গেলে কৃত্রিমভাবে রক্ত পাম্প করে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বজায় রাখা যায়। অর্থাৎ, যখন কারও হৃৎপিণ্ড বন্ধ হয়ে যায় (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট), তখন এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাময়িকভাবে হার্টের কাজ চালিয়ে নেওয়া হয়।

মায়ো ক্লিনিকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিপিআর দেওয়ার মানে হলো রোগীর বুকে দ্রুত এবং জোরে চাপ দেওয়া। প্রতি মিনিটে প্রায় ১০০ থেকে ১২০ বার চাপ দিতে হয়, যেগুলোকে কমপ্রেশন বলা হয়।

যদি কেউ সিপিআর এ প্রশিক্ষিত হন এবং আত্মবিশ্বাসী থাকেন, তবে প্রথমে ৩০ বার বুকের কমপ্রেশন দিতে হবে এবং এরপর দুটি রেসকিউ ব্রেথ দিতে হবে। এছাড়া, যদি কাছাকাছি কোনও জীবন রক্ষাকারী মেশিন, অটোমেটেড এক্সটারনাল ডিফিব্রিলেটর (এইডি) পাওয়া যায় এবং রোগী অচেতন অবস্থায় থাকেন, তবে সেটিও ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই মেশিনটি হার্ট বন্ধ হয়ে গেলে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হার্টকে পুনরায় সচল করার চেষ্টা করে করে থাকে।

দ্রষ্টব্য: এই নিবন্ধটি শুধুমাত্র তথ্য প্রদানের উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। এটি কোনোভাবেই চিকিৎসকদের পরামর্শের বিকল্প নয়। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যেকোনো প্রশ্ন বা সমস্যার ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।