এমপি আনোয়ারুল আজিমের ব্যক্তিগত সহকারি (পিএস) আব্দুর রউফ কলকাতা পুলিশের মাধ্যমে জেনে বাংলাদেশের সংবাদ সংস্থা বাসসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তার পিএস জানান, গত ১২ মে দুপুরে দর্শনা-গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এমপি আনার। সন্ধ্যায় কলকাতার অদূরে ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকার বরাহনগর থানার ১৭/৩ মন্ডলপাড়া লেনের স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে পৌঁছান।

পরদিন দুপুরে ওই বাড়ি থেকে কিছুটা হেঁটে বিধানপার্ক কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে গিয়ে একটি গাড়িতে ওঠেন। সন্ধ্যায় গোপাল বিশ্বাসের মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ম্যাসেজ আসে, এমপি আজিম রাতে ফিরছেন না, দিল্লি যাচ্ছেন। এ সময় যেন তাকে আর ফোন না করা হয়। তিনি দিল্লি পৌঁছে নিজেই ফোন করবেন- এমনটাও ম্যাসেজে লেখা ছিল।

এরপর আজিমকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি। তিনদিন পর ১৫ মে সকাল সোয়া ১১টায় তিনি শেষ ম্যাসেজে জানান, দিল্লি পৌঁছে গেছেন। তার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন। কলকাতার বরাহনগর থানায় ১৮ মে লিখিত মিসিং ডায়েরিতে এসব তথ্য উল্লেখ করেন ভারতে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস।

১৯ মে পরিবারের পক্ষ থেকে এমপির সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকার বিষয়টি রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে অভিহিত করা হয়। এরপর বাংলাদেশ ও ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সংসদ সদস্য আজিমের সন্ধানে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে। এরই মধ্যে, বুধবার তার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

আরও পড়ুন: পেনসিলভেনিয়ায় লিনেন কোম্পানিতে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২

আজিমের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আব্দুর রউফ কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে নিশ্চিত হয়ে আরও জানান, গত ৮ দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর নিউটাউন থেকে উদ্ধার হয়েছে সংসদ সদস্যের মৃতদেহ। বুধবার নিউটাউনের বিলাসবহুল আবাসন থেকে উদ্ধার হয় ওই তার খণ্ডিত দেহ।

এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু কে বা কারা খুন করল, কেনই বা খুন করল এখনো পর্যন্ত তা স্পষ্ট নয়। ইতোমধ্যে ভারতের আইন প্রয়োগকারি সংস্থার পক্ষ থেকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে আবাসনে সিসিটিভি ফুটেজ। ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমেও অনুরূপ খবর দেয়া হয়েছে। এমপি আজিমের স্ত্রী, কন্যা, ভাতিজা এখন কলকাতায় অবস্থান করছেন।

এমপি আজিমের জন্ম ১৯৬৮ সালে ৩ জানুয়ারি। তিনি কালীগঞ্জে পৌরসভার নিশ্চিন্তপুর এলাকার বাসিন্দা। আনার বিবাহিত এবং দুই কন্যার পিতা। পেশায় ব্যবসায়ী আনার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে তিনি তৃতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরআগে তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।