টিউমার না কি সিস্ট, খালি চোখে সাধারণ মানুষের পক্ষে তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয় না সব সময়ে। শরীরের কোনও অংশকে হঠাৎ ফুলে উঠতে দেখলে ক্যানসারের আতঙ্কে ভুগতে থাকেন অনেকে, কেউ আবার বিষয়টিকে আমল দেন না।কেউ আবার সিস্টকে টিউমার ভাবেন, টিউমারকে সিস্ট।
কিন্তু কোন ফোলা আসলে কী, তার কারণই বা কী, সে সম্পর্কে যথাসম্ভব অবগত থাকা উচিত। নিজের মানসিক শান্তির পাশাপাশি সতর্কতা অবলম্বন করতেও সুবিধা হবে।
সিস্ট এবং টিউমারের পার্থক্য বুঝতে হবে। জানতে হবে তাদের প্রকৃতি। গঠন, বৃদ্ধির হার, উপসর্গ, ইত্যাদি বিবেচনা করে শনাক্ত করা যায় কোনটি কী।
সিস্ট
সিস্ট আসলে এক ধরনের তরলে ভর্তি থলি। সিস্ট সাধারণত ত্বকের নীচে তৈরি হয়। ডিম্বাশয়, স্তন বা শরীরের একাধিক অংশে সিস্টের জন্ম হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্যথা থাকে না। কখনও সংক্রমণ হলে ফুলে যেতে বা ব্যথা হতে পারে। কিন্তু সাধারণত অস্ত্রোপচার বা ওষুধে সহজেই সেরে যায়। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে সিস্টের ভেতরে ম্যালিগন্যান্ট কোষ তৈরি হয়, সে ক্ষেত্রে বিপদের আশঙ্কা থাকে।
টিউমার
কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে টিউমার তৈরি হয়। এটি দু’রকম হতে পারে— বিনাইন টিউমার (ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে না) এবং ম্যালিগন্যান্ট টিউমার (ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে)। বিনাইন ধীরে বাড়ে, শরীরের অন্য অংশে ছড়ায় না। ম্যালিগন্যান্ট দ্রুত বাড়ে ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে।
দেহের কোন ফোলা কোন প্রকৃতির
সিস্ট আর টিউমার শনাক্ত করার মূল হাতিয়ার হল, হাত দিয়ে দেখা।
যদি দেখা যায়,ফোলার একটি অংশে চাপ দিলে সেটি উল্টো দিকে অল্প সরে যাচ্ছে তা হলে সেটি সিস্ট।
তবে টিউমার নড়েচড়ে না। শক্ত হয়ে আটকে থাকে। আবার সব টিউমারই ক্যানসার নয়। যদি দেখা যায়, টিউমার দ্রুত বাড়ছে, বা উপরে ঘা হয়েছে, অথবা রক্তপাত হচ্ছে, তা হলে সেগুলি সাধারণত ম্যালিগন্যান্ট হয়।
তবে শরীরের কোনও অংশ ফুলে উঠলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ, বায়োপসি ছাড়া সঠিক শনাক্তকরণ সম্ভব নয় কখনও।
দেহের কোন অংশে ফোলাভাব দেখলে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। তবে অবহেলা করাও ঠিক নয়। সময়মতো পরীক্ষা করালে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সমস্যা ধরা পড়ে ও সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।