মিফেপ্রিস্টোন ইস্যু গড়াল সুপ্রিম কোর্টে, আগের আদেশ স্থগিত

টিবিএন ডেস্ক

এপ্রিল ১৫ ২০২৩, ১৯:৫২

মিফেপ্রিস্টোন ইস্যু গড়াল সুপ্রিম কোর্টে, আগের আদেশ স্থগিত
  • 0

মিফেপ্রিস্টোন অ্যাবরশন পিল নিয়ে টেক্সাস আদালতের আদেশের কার্যকারিতা আগামী বুধবার পর্যন্ত স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের জাস্টিস স্যামুয়েল আলিটো। ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) পক্ষে ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিসের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ স্থাগিতাদেশ দেয়া হয়।

এর ফলে আগামী বুধবার পর্যন্ত টেক্সাসে মিফেপ্রিস্টোন বাজারজাত করা এবং বিক্রিতে কোনো বাধা থাকছে না। এছাড়া এই অ্যাবরশন পিল বিষয়ে বিবেচনা করতেও বিচারকেরা আরও কিছু সময় পাবেন। 

এর আগে টেক্সাসে অ্যাবরশন পিল মিফেপ্রিস্টোন বন্ধের আদেশ দেয় ফেডারেল জাজ। এই আদেশ শনিবার সকাল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। 

এফডিএ-র পক্ষে ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস অ্যাবরশন পিল বিষয়ে ফিফথ সার্কিটের আদেশ স্থগিতে তাৎক্ষণিক প্রশাসনিক আদেশ দেয়ার অনুরোধ জানায়। এতে বলা হয়, মিফেপ্রিস্টোন বিষয়ে বিচারিক আদালতের আদেশ কার্যকর হলে ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পের জন্য ব্যাপক হুমকি তৈরি হবে এবং যেসব নারীর ওষুধটি জন্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হবে।

এবিসি নিউযের বরাতে জানা যায়, ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিসের এই অনুরোধ বিবেচনায় নিয়ে ফেডারেল জাজের আদেশে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সিনিয়র কাউন্সেল এরিন হওলে বলেন, ‘এই স্থগিতাদেশ আদালতকে দুই পক্ষের যুক্তি বিবেচনা করার জন্য যথেষ্ট সময় দেবে।‘ 

তিনি বলেন, ‘আমরা অপেক্ষায় আছি এফডিএ-র কোথায় কোথায় ঘাটতি রয়েছে তা সঠিকভাবে জানতে। নারীদের অ্যাবরশন পিল কেনার অধিকার রক্ষায় আদালত কী সিদ্ধান্ত দেয় তার অপেক্ষায় রয়েছে পুরো স্টেইট।‘

অ্যামেরিকায় গর্ভপাতের জন্য প্রচলিত দুটি ওষুধের একটি এই মিফেপ্রিস্টোন। দুই যুগেরও বেশি সময় আগে এই ওষুধের অনুমোদন দেয় এফডিএ। মিসোপ্রস্টাল নামের আরেক ওষুধের সঙ্গে এটি সেবন করলে ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভাবস্থাতেও গর্ভপাত করা সম্ভব। 

মিফেপ্রিস্টোনের অনুমোদন বাতিলের জন্য গত নভেম্বরে টেক্সাসের একদল চিকিৎসক ও মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েট মামলা করেন। ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের জাজ ক্যাক্সম্যারিককে এ মামলার বিচারকের দায়িত্ব দেয়া হয়।

ক্যাক্সম্যারিক গত শুক্রবার মামলার আদেশে বলেন, মিফেপ্রিস্টোন বিক্রিতে এফডিএর দুই দশক পুরোনো অনুমোদন ফেডারেল আইনের লঙ্ঘন। এছাড়া সংস্থাটির নেয়া পরের পদক্ষেপগুলোও বেআইনি। 
 


তবে একই সঙ্গে বিচারক বাইডেন প্রশাসনকে অ্যাপিল করার সুযোগ দিতে সাত দিনের জন্য আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত রাখেন। এরপরই অ্যাপিল করে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট। 

ইউএস সার্কিট কোর্ট অফ অ্যাপিল বুধবার মধ্যরাতের ঠিক আগে রায় ঘোষণা করে। তাতে জানায়, ২০০০ সালে এফডিএ মিফেপ্রিস্টোনের যে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছিল সেটি অব্যাহত থাকতে পারে।

তবে ২০১৬ সালে ওষুধটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার সীমা যেভাবে বাড়ানো হয়েছিল সেটি আটকে দিয়েছে আদালত। ওই বছরে গর্ভাবস্থার সাত সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত মিফেপ্রিস্টোন ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয় এবং এ জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।   

তিন বিচারকের প্যানেল ২-১ ভোটে ওষুধ গ্রহণের ক্ষেত্রে সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়টি আটকে দেয়।

যে দুই বিচারক বিধিনিষেধ কঠোর করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন তারা হলেন কার্ট এঙ্গেলহার্ড এবং অ্যান্ড্রু ওল্ডহ্যাম। তারা দুজনেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে নিয়োগ পেয়েছেন। 

তৃতীয় বিচারক ক্যাথরিনা হেইনসের নিয়োগ হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সময়ে। তিনি এ মামলায় বিচারিক আদালতের রায়কে আপাতত সম্পূর্ণভাবে স্থগিত করার পক্ষে মত দেন। 
 


মিফেপ্রিস্টোনকে বাজার থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নিলে জনস্বাস্থ্যের ওপর গুরুতর প্রভাব পড়ার আশংকা করছে বাইডেন প্রশাসন। বিষয়টি আপিল কোর্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারক মেনে নিয়েছেন। তবে তারা ২০১৬ সাল থেকে এর ব্যাপক ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার বিষয়টির সমালোচনা করেন।

ক্যাক্সম্যারিকের আদেশের কঠোর নিন্দা জানিয়ে সে রাতেই বিবৃতি দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, ‘আদালত এ মামলায় ওষুধ অনুমোদনকারী বিশেষজ্ঞ সংস্থা এফডিএর উপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে। এটি কার্যকর হলে এফডিএর অনুমোদনের আর কোনো মূল্য থাকবে না। এমনকি ওষুধ বাজারজাতের প্রক্রিয়াটিকে রাজনৈতিক এবং নৈতিক আক্রমণ থেকে নিরাপদে রাখার চেষ্টাও ব্যর্থ হয়ে যাবে।‘ 

 


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন