আঁখি তার রোগী নয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘সেন্ট্রাল হাসপাতাল আমাকে নিয়ে মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছে।’
ডা. সংযুক্তা সাহা মঙ্গলবার তার বাড়িতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আঁখিকে ভর্তি করার সময় তারা (সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) আমার কাছ থেকে মৌখিক বা লিখিত সম্মতি নেয়নি।’
তিনি প্রশ্ন করেন যে ‘তার (আঁখি) অপারেশনের সময় আমি বাংলাদেশে ছিলাম না... আমি সেখানে না থাকলে আমি কীভাবে দায়ী থাকব?’
আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন গত ১০ জুন ছয়জন চিহ্নিত ব্যক্তি এবং আরও বেশ কয়েক জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসার’ অভিযোগে একটি মামলা করেন। তিনি দাবি করেন ভুল চিকিৎসার ফলে তাদের নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এরপর ১৮ জুন প্রসূতি আঁখিও মারা যান।
আঁখির স্বামীর মামলার পর ১৫ জুন সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই চিকিৎসক ডা. শাহজাদী ও ডা. মুন্নাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়, আঁখি গত তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. সংযুক্তা সাহার তত্ত্বাবধানে ছিলেন এবং তার অবস্থা স্বাভাবিক বলে জানা গেছে।
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা আশ্বস্ত করে আঁখির পরিবারকে বলেছিলেন, তিনি নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান প্রসব করাবেন।
এরপর গত ১০ জুন রাত ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে ওই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে প্রসব ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন আঁখি।
হাসপাতালে ভর্তির সময় ডা. সংযুক্তা উপস্থিত না থাকলেও তার সহকারী জানান, তিনি অপারেশন থিয়েটারে কাজ করছিলেন। পরে ডা. শাহজাদী ও ডা. মুন্না হাসপাতালে ডেলিভারি পরিচালনা করেন, যা নবজাতকের মৃত্যুর কারণ।
ডা. সংযুক্তা সাহা মঙ্গলবার প্রেস ব্রিফিয়ে জানান, আঁখির অপারেশনের সময় তার উপস্থিতি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ঘটনার আগ পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে নিয়ে গর্বিত ছিল। এখন তারা তাদের অবহেলা আড়াল করার জন্য আমার সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।’
তিনি দাবি করেন মাহবুবা রহমান আঁখি তার নিয়মিত রোগী ছিলেন না।
আঁখি ও তার শিশুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করেন ডা. সংযুক্তা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১৬ জুন সেন্ট্রাল হাসপাতালকে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট (আইসিইউ) এবং জরুরি বিভাগে অসন্তোষজনক পরিষেবার কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
এছাড়া হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে লিখিত অনুমোদন না দেয়া পর্যন্ত হাসাপাতালটিতে কোনো বিশেষজ্ঞ পরিষেবা না দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।