অ্যাবরশন পিল মিফেপ্রিস্টোন নিয়ে ঘূর্ণিপাক

টিবিএন ডেস্ক

এপ্রিল ৮ ২০২৩, ১৯:৪৮

মিফেপ্রিস্টোন পিল। ফাইল ছবি

মিফেপ্রিস্টোন পিল। ফাইল ছবি

  • 0

মিফেপ্রিস্টোন নামের একটি অ্যাবরশন পিল বাজারজাতের বিষয়ে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) অনুমোদন স্থগিত করেছেন টেক্সাসের একজন ফেডারেল জাজ। তবে ফেডারেল জাজের এ রায়ের বিপক্ষে অবশ্য শুক্রবার রাতেই আপিল করেছে বাইডেন প্রশাসন।

সুপ্রিম কোর্ট গত জুনে গর্ভপাত বিষয়ক সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করে। এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবারের এই আদেশ অ্যাবরশন অধিকার অ্যাক্টিভিস্টদের জন্য এক বড় ধাক্কা। 

অ্যামেরিকার ডিস্ট্রিক্ট জাজ ম্যাথিউ ক্যাক্সম্যারিক ৬৭ পৃষ্ঠার আদেশে শুক্রবার বলেন, মিফেপ্রিস্টোন নামের পিলটি বিক্রিতে এফডিএর দুই দশক পুরানো অনুমোদন ফেডারেল আইনের লঙ্ঘন। এছাড়া সংস্থাটির নেয়া পরের পদক্ষেপগুলোও বেআইনি। 

তবে একই সঙ্গে বিচারক বাইডেন প্রশাসনকে আপিল করার সুযোগ দিতে সাত দিনের জন্য আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত রাখেন। 

আদালতের আদেশের কঠোর নিন্দা জানিয়ে শুক্রবার গভীর রাতে একটি বিবৃতি দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এতে তিনি বলেন, ’আদালত এ মামলায় ওষুধ অনুমোদনকারী বিশেষজ্ঞ সংস্থা এফডিএর উপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে। এটি কার্যকর হলে এফডিএর অনুমোদনের আর কোনো মূল্য থাকবে না। এমনকি ওষুধ বাজারজাতের প্রক্রিয়াটিকে রাজনৈতিক এবং নৈতিক আক্রমণ থেকে নিরাপদে রাখার চেষ্টাও ব্যর্থ হয়ে যাবে।‘  

বাইডেন বলেন, ‘এ মামলা এবং আদেশটি নারীদের মৌলিক স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছে। আমাদের নারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলার জন্যই এমন নজিরহীন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।‘ 

অ্যান্টি-অ্যাবরশন রাইটস মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের অনুরোধে বিচারক ক্যাক্সম্যারিক কিছুদিনের জন্য মিফেপ্রিস্টোন পিলে এফডিএর অনুমোদন প্রত্যাহার বা স্থগিত করার আদেশ দেয়া থেকে বিরত ছিলেন। 

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে নিয়োগ পাওয়া ক্যাক্সম্যারিকের আদেশটি কার্যকর হলে দেশব্যাপী প্রচুর নারী ওষুধটি পাওয়ার সুযোগ হারাবেন। যে সব স্টেইটে অ্যাবরশনের অনুমোদন রয়েছে সেখানকার নারীরাও সমস্যার মুখে পড়বেন। 

অ্যামেরিকার অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যারিক গারল্যান্ড শুক্রবার রাতে এক বার্তায় বলেন, ‘বিচার বিভাগ কোনোভাবেই টেক্সাসের নর্থ ডিস্ট্রিক্টের ডিস্টিক্ট কোর্টের সঙ্গে একমত নয়। অ্যালায়েন্স ফর হিপোক্রিট মেডিসিন এবং এফডিএর পক্ষ থেকে এই রায় স্থগিত করতে আপিল করা হবে।‘ 

তিনি জানান, মিফেপ্রিস্টোনকে নিরাপদ এবং কার্যকর হিসেবে বর্ণনা করে দুই দশক আগের এফডিএর অনুমোদনকে বাতিল করে দিয়েছে ক্যাক্সম্যারিকের আদেশ। 

অ্যাবরশনকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে গত বছর একটি আইন প্রণয়ন করে আইডাহো প্রশাসন, যা এ বছর কার্যকর হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় অন্তত এক ডজন স্টেইটে অ্যাবরশনের উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তবে একই সঙ্গে সংবিধান অনুযায়ী গর্ভপাতের অধিকারের দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন জোরদার হচ্ছে। 

এদিকে ক্যাক্সম্যারিকের আদেশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মিফেপ্রিস্টোন নিয়ে ঠিক বিপরীতমুখী আদেশ দেয়েছেন ওয়াশিংটন স্টেইটের একজন ফেডারেল জাজ। এ আদেশে বলা হয়, পিলটি পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। 

একই ওষুধ নিয়ে দুই ফেডারেল জাজের সাংঘর্ষিক রায় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল শুনানিতে টান টান উত্তেজনা ছড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

২০ বছরেরও বেশি আগে মিফেপ্রিস্টোনকে অনুমোদন দেয় এফডিএ। মিসোপ্রস্টাল নামের আরেক ওষুধের সঙ্গে এটি সেবন করলে ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভাবস্থাতেও গর্ভপাত করা সম্ভব। 

গত নভেম্বরে এই অ্যাবরশন পিলের অনুমোদন বাতিলের জন্য একদল চিকিৎসক ও মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েট মামলা করেন। ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের জাজ ক্যাক্সম্যারিককে এ মামলার বিচারকের দায়িত্ব দেয়া হয়।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন