
বাড়িতে বসেই যে পরীক্ষায় বুঝবেন হার্টে ব্লকেজ আছে কি না

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯ ২০২৫, ৮:৩২

ঘরে বসেই বুঝবেন হার্ট ব্লকেজের সাধারণ লক্ষণগুলো। ছবি: আয়ুস্মান হসপিটাল
- 0
হার্ট ব্লকেজ ধীরে ধীরে গড়ে উঠলেও, শরীর আগেভাগেই কিছু সতর্ক সংকেত পাঠাতে শুরু করে। সময়মতো লক্ষণগুলো চিনে নিতে পারলে অনেক বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব।
হৃদযন্ত্র আমাদের দেহে ইঞ্জিনের মতো। নিরবচ্ছিন্নভাবে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে পুরো দেহে প্রাণ জোগায় এটি। তবে এই ইঞ্জিনের রাস্তায় বাধা তৈরির ফলে বেজে ওঠে বিপদের সংকেত।
হার্ট ব্লকেজ মূলত হৃদপিণ্ডে রক্ত সরবরাহকারী ধমনীতে জমা চর্বি বা অন্যান্য উপাদানের কারণে সৃষ্টি হয়। হার্ট ব্লকেজ ধীরে ধীরে গড়ে উঠলেও, শরীর আগেভাগেই কিছু সতর্ক সংকেত পাঠাতে শুরু করে। সময়মতো লক্ষণগুলো চিনে নিতে পারলে অনেক বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব। চলুন, জেনে নিই কীভাবে ঘরে বসেই বুঝবেন হার্ট ব্লকেজের সাধারণ লক্ষণগুলো-
রক্তচাপের দৈনিক পরীক্ষা এক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ ইঙ্গিত দেয়। ক্রমাগত রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া অনেক সময় আর্টারিগুলো শক্ত হওয়ার জানান দেয়। ফলে হৃদপিণ্ডকে রক্ত পাম্প করতে বেশি পরিশ্রম করতে হয়।
হৃদস্পন্দন এবং ছন্দের ওপর নজর রাখাটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, খুব দ্রুত বা খুব ধীর হৃদস্পন্দন ধমনীতে পরিবর্তন অথবা হৃদযন্ত্রের উপর চাপের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।
সিঁড়িতে ওঠার পরীক্ষা আপনার ব্লকেজ পরীক্ষার সহজ ঘরোয়া মাপকাঠি। হার্টের ফিটনেস বোঝার সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া পরীক্ষা চারতলা বা প্রায় ৬০ ধাপ সিঁড়ি একটানা উঠা। এতে বোঝা যায় শরীর কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।
যদি ৯০মিনিটের মধ্যে সিঁড়ি বেয়ে উঠে যেতে পারেন, শ্বাসকষ্ট না হয়, বুকে চাপ বা মাথা ঘোরা না আসে—তাহলে আপনার হার্ট সাধারণত ভালো কাজ করছে। তবে যদি সিঁড়ি ওঠার সময় শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, বুকে টান ধরে, পা ভারী লাগে বা মাথা ঝিমঝিম করে তাহলে এটি রক্তনালিতে ব্লকেজ বা হার্টে অক্সিজেন প্রবাহ কমে যাওয়ার প্রাথমিক সংকেত হতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে দেরি না করে বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া প্রয়োজন।
এছাড়া এঙ্কেল-ব্র্যাকিয়াল ইনডেক্স টেস্টও বাড়িতে করা যেতে পারে। এই টেস্টে হাত এবং পায়ের গোড়ালির রক্তচাপ মাপা হয়। হাতের রক্তচাপ সাধারণত স্বাভাবিক থাকে। তবে যদি পায়ের রক্তচাপ (গোড়ালির) হাতের তুলনায় কম হয়, তাহলে এটি ধমনীতে ব্লকেজ বা রক্তপ্রবাহে বাধা থাকার ইঙ্গিত দেয়।
এই লক্ষণগুলো ওপর নজর রাখাটা খুবই জরুরি। বুকে চাপ, ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট অথবা অতিরিক্ত ঘাম হওয়া - এগুলো সবই রক্তনালী ব্লকেজ সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে এবং সেগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত নয়।
বর্তমানে, বাড়িতে স্মার্টওয়াচ বা মোবাইল অ্যাপ কিংবা ইসিজি ডিভাইসও আপনার ব্যক্তিগত ‘হার্ট স্ক্যানার’ হয়ে উঠতে পারে। এগুলো হৃদযন্ত্রের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ রেকর্ড করে এবং জানায় যে ধমনীতে কোনো বাধার কারণে হৃদযন্ত্রে অতিরিক্ত চাপ বাড়ছে কিনা।
তবে হার্টের শুধু নিয়মিত যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ কমানোর অভ্যাসের মাধ্যমে ধমনীতে প্লাক জমা হওয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব।
এছাড়া সময় মতো স্বাস্থ্য পরীক্ষা আপনাকে দীর্ঘকাল ধরে হৃদরোগ থেকে দূরে রাখতে পারে এবং হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে।