শিশুর বিকাশগত প্রতিবন্ধিত্ব বাড়ছে অ্যামেরিকায়

টিবিএন ডেস্ক

জুলাই ১৩ ২০২৩, ১৮:৪৪

অ্যামেরিকায় বাড়ছে শিশুর বিকাশগত প্রতিবন্ধিত্ব। ছবি: সংগৃহীত

অ্যামেরিকায় বাড়ছে শিশুর বিকাশগত প্রতিবন্ধিত্ব। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) বৃহস্পতিবারের একটি নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যামেরিকার প্রতি ১০ শিশুর মধ্যে অন্তত একজন বিকাশগত প্রতিবন্ধিত্বে ভুগছে। অ্যামেরিকান শিশুদের মধ্যে বিকাশগত প্রতিবন্ধিত্বে ভোগা শিশুর সংখ্যা ২০২১ সালে রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার পর, নতুন প্রতিবেদন জনমনে শংকা সৃষ্টি করেছে।

সিডিসির দাবি, ভুক্তভোগী শিশুদের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধিত্ব, অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার বা অন্য বিকাশগত উন্নয়নে দেরি হচ্ছে।

সংস্থাটির ন্যাশনাল হেলথ ইন্টারভিউ সার্ভের সবশেষ ফল অনুযায়ী, অ্যামেরিকার ৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৮.৫৬ শতাংশ শিশুর বিকাশগত প্রতিবন্ধিত্ব ধরা পড়েছে।

সিডিসির ন্যাশনাল সেন্টার ফর হেলথ স্ট্যাটিস্টিকসের স্ট্যাটিস্টিশিয়ান ও প্রতিবেদনের প্রধান লেখক বেনজামিন যাব্লতস্কি বলেন, ‘আমরা সবার মধ্যে এই প্রতিবন্ধিত্বের ব্যাপকতা বুঝতে চেয়েছি। শুধু তখনই আমরা আমাদের পরিবার ও শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত পরিষেবা নিশ্চিত করতে পারব।’

সিডিসির এর আগের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অ্যামেরিকান শিশুদের মানসিক বিকাশ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, যেসব শিশু আগে থেকেই এডিএইচডি, অটিজম ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধিত্বে ভুগছিল তাদের বিকাশগত প্রতিবন্ধিত্ব আরও বেড়েছে।

নতুন প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধিত্ব বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারের হার পরিসংখ্যানগত দিক দিয়ে তেমন বাড়েনি। রিপোর্টে দেখা যায়, ১.৬৫ শতাংশ শিশু বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধিত্ব ও ৩.০৫ শতাংশ শিশু অটিজমে আক্রান্ত।

তবে শংকা সৃষ্টি করেছে বিকাশগত প্রতিবন্ধিত্বের পরিসংখ্যান।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে সর্বোচ্চসংখ্যক অভিভাবক রিপোর্ট করেছেন তাদের সন্তানের অটিজম বা বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধিত্ব নয়, বরং রয়েছে ‘অন্য বিকাশগত বিলম্ব’। এই ধরনের প্রতিবন্ধিত্বে শিশুরা সেরিব্রাল পলসি বা শব্দ গঠনের মতো গ্রুপিং করতে পারে না। একই ধরনের আরও সমস্যার সম্মুখীন হয় তারা।

বিকাশগত প্রতিবন্ধিত্বে ভোগা শিশুদের হার ২০১৯ সালে ছিল ৫.০৮ শতাংশ, যা ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬.০৬ শতাংশে।

যাব্লতস্কি বলেন, ‘অনেক সময় শিশু মস্তিষ্কের এই বিকাশের বিলম্বই অটিজমের মতো ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। আবার অনেক সময় দেখা যায়, এই শিশুরা বয়সের চেয়ে ছোট বা বড় আচরণ করে। অর্থাৎ তারা বয়সের বাইরে চলে যায়।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিকাশগত প্রতিবন্ধিত্বের হার অ্যামেরিকান মেয়ে শিশুদের মধ্যে তুলনামূলক কম। অ্যামেরিকান ছেলে শিশুদের মধ্যে ১০.৬৭ শতাংশ ও মেয়ে শিশুদের মধ্যে ৫.৩১ শতাংশ এই প্রতিবন্ধিত্বে ভুগছে।

অ্যামেরিকান-এশিয়ান শিশুদের মধ্যে এই হার সবচেয়ে কম। এশিয়ান বংশোদ্ভূত অ্যামেরিকান শিশুদের ৪.৫৮ শতাংশ বিকাশগত প্রতিবন্ধিত্বে ভুগছে। হিস্পানিক, কৃষ্ণাঙ্গ ও হোয়াইট শিশুদের প্রতিবন্ধিত্বের হারও কম।

সিডিসির উইসকন্সিনের অটিজম ডিজাবিলিটিস মনিটরিং নেটওয়ার্কের প্রাইমারি ইনভেস্টিগেটর ডারকিন জানিয়েছেন, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের শিশুরা বিকাশগত প্রতিবন্ধিত্বে বেশি ভুগছে। শিশুর অপরিপক্ক অবস্থায় জন্ম ও লেড পয়জনিংয়ের মতো ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ও এর সঙ্গে জড়িত।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন