হটফ্ল্যাশ চিকিৎসায় প্রথম ওষুধের অনুমোদন দিল এফডিএ

টিবিএন ডেস্ক

মে ১৩ ২০২৩, ২০:২১

ফেজোলিনেন্ট্যান্ট ওষুধ: ছবি: অ্যাস্টেলাস ফার্মা

ফেজোলিনেন্ট্যান্ট ওষুধ: ছবি: অ্যাস্টেলাস ফার্মা

  • 0

মেনোপজে পৌঁছানো প্রায় প্রতিটি নারী হটফ্ল্যাশের মতো জটিলতার মুখোমুখি হন। এ সমস্যা দূর করার চিকিৎসাপদ্ধতি বেশ বিরল। তবে অ্যামেরিকায় এই প্রথম মেনোপজের সময় হটফ্লাশের চিকিৎসায় একটি ওষুধের অনুমোদন দিয়েছে ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)।

ফেজোলিনেন্ট্যান্ট নামের ওষুধটি ভিওযা ব্রান্ডনেইমের অধীনে বিক্রি হবে।  

দিনে একবার করে খেতে হবে ফেজোলিনেন্ট্যান্ট বড়ি। এটি হরমোনমুক্ত বলে যেসব নারীর স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক বা রক্ত ​​জমাট বাঁধার পূর্ব ইতিহাস রয়েছে তারাও এটি অনায়াসে গ্রহণ করতে পারবেন। 

এফডিএ বলছে, ওষুধটি মস্তিষ্কের উত্তাপ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে কাজ করে, ফলে হটফ্লাশের মাত্রা ও তীব্রতা দুই-ই কমে আসে। 

ফেজোলিনেন্ট্যান্টের অনুমোদনের আগে মেনোপজের সঙ্গে সম্পর্কিত হট ফ্ল্যাশের প্রধান চিকিৎসা ছিল মূলত হরমোন রিপ্লেসমেন্টথেরাপি (এইচআরটি) এবং কিছু অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস।

ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথের (এনআইএইচ) তথ্য অনুযায়ী, একজন নারীর সবশেষ পিরিয়ডের ১২ মাস কেটে যাওয়ার পরেও পিরিয়ড না হলে মেনোপজ হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়। মেনোপজের আগের পর্যায়কালকে পেরিমেনোপোজও বলা হয়। এই সময়টি বেশ কয়েকবছর দীর্ঘ হতে পারে। আর এ সময় ধরে নারীরা হটফ্ল্যাশের মতো লক্ষণ অনুভব করতে পারেন।

বেশিরভাগ নারী তার ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সে মেনোপজ ট্রানজিশন অনুভব করেন

ইউএস অফিস অন উইমেন’স হেলথের তথ্য বলছে, প্রায় ৫ শতাংশ নারী ৪০-৪৫ বছর বয়সের মধ্যেই অকাল মেনোপজের মুখোমুখি হন।

মেনোপজের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত হটফ্লাশ এবং রাতে ঘামা। এছাড়া অনেকে উদ্বেগ, যোনি-শুষ্কতা, যৌন মিলনে ব্যথা অনুভব, যৌন সক্রিয়তা হ্রাস, অনিদ্রা ও হাড়ের জয়েন্টে ব্যথায় ভুগে থাকেন। 

ডিরেক্টর অফ দ্য অফিস অব রেয়ার ডিযিজ, পেডিয়াট্রিক, ইউরোলজিক অ্যান্ড রিপ্রোডাক্টিভ মেডিসিন, এফডিএ’স সেন্টার ফর ড্রাগ ইভাল্যুশন অ্যান্ড রিসার্চের পরিচালক ডক্টর জ্যানেট মেনার্ড এক বিবৃতিতে বলেন, ’মেনোপজের ফলে হট ফ্ল্যাশ নারীর শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এবং তাদের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে। ফেজোলিনেন্ট্যান্ট ওষুধটি এর চিকিৎসাকে নিরাপদ ও কার্যকর করবে।‘

ভিওজার প্রস্তুতকারক অ্যাস্টেলাস ফার্মার বায়োফার্মা ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্সি ইংলিশ জানান, হট ফ্ল্যাশের লক্ষণগুলো নারীরা বহু বছর ধরে অনুভব করছেন। তাই নারীদের জন্য নন হরমোনাল থেরাপির ব্যবস্থা করা কোম্পানির অগ্রাধিকার ছিল।

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন মেনোপজের কথা বলি তখন একটা বিষয় উপেক্ষা করি। সেটি হলো মেনোপজে ট্রানজিশন পর্বটি গড়ে সাত বছরে হয়। আমরা সামগ্রিকভাবে নারীদের দিকে তাকালে দেখতে পাব ৬০-৮০ শতাংশ নারী মেনোপজ ট্রানজিশনের সময় হটফ্ল্যাশ অনুভব করেন। মেনোপজের পরেও পোস্টমেনোপজাল পিরিয়ডে ১০ বছর পর্যন্ত একজন নারী হটফ্ল্যাশ অনুভব করতে পারেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ’আমি মনে করি মানুষের বোঝা উচিত এটা একটি নন হরমোনাল থেরাপি। এটি প্রথম শ্রেণির থেরাপি এবং এটি নারীদেরকেই তাদের চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নেয়ার সুযোগ দেয়।’

ক্লিনিকাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, ফেজোলিনেন্ট্যান্ট ওষুধ ব্যবহারকারী নারীদের ক্ষেত্রে হট ফ্ল্যাশের মাত্রা ৫০ শতাংশ কমেছে।

ওষুধটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেমন ভেওযা গ্রহণকারীরা চিকিৎসার প্রথম ৯ মাসে প্রতি তিন মাস অন্তর রক্ত পরীক্ষা করাবেন এবং যাদের লিভার ও কিডনির সমস্যা আছে তারা ওষুধটি খাবেন না। 

এফডিএর তথ্য অনুসারে, ভেওযা খেলে পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, অনিদ্রা, পিঠে ব্যথা, লিভারের ক্ষতির মতো কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। 

এলেস্টাস ফার্মা জানিয়েছে, তিন সপ্তাহের মধ্যে ওষুধটি অ্যামেরিকার বিভিন্ন ফার্মেসিতে পাওয়া যাবে।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন