রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোর স্থাপন নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরকারের মতবিরোধের গুজব নাকচ করেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো মতপার্থক্য নেই। সেনাপ্রধানের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে আমরা এক সমতলে অবস্থান করছি।’
রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি। এদিন রাখাইন অঞ্চলকেন্দ্রিক মানবিক করিডোর ইস্যু নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান।
খলিলুর রহমান বলেন, ‘পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যা বলেছেন, তা স্লিপ অফ টাং। সাথে সাথেই সংশোধন করে উনি 'পাথওয়ে' বলেছেন। করিডরের কথা কখনোই তিনি বলেননি।’
তিনি জানান, রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাব বিবেচনায় রয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তি হয়নি। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ত্রাণ সরবরাহের একটি 'চ্যানেল বা পাথওয়ে' তৈরির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মানবিক চ্যানেল আমরা দেবো কী দেবো না এটা আমাদের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। মানবিক চ্যানেল নিয়ে আমেরিকা বা চীন কারও থেকেই বাংলাদেশের ওপর কোনো চাপ নাই। মানবিক চ্যানেল তৈরি হলে তার পুরো দায়বদ্ধতা থাকবে জাতিসংঘের ওপর। বাংলাদেশ শুধু বর্ডারে নিরাপত্তা দেবে।’
জাতীয় নিরাপত্তা বলেন, ‘রাখাইনের ৯০ শতাংশ ভূখণ্ড আরাকান আর্মির দখলে থাকায় জান্তা সরকারের সমান্তরালে তাদের সঙ্গেও আলোচনা করা হচ্ছে। আরাকান আর্মিও প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর উদ্যোগ নেয়া হবে।’
এসময় তিনি জানান, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আরাকান আর্মিকে সরাসরি বলে দিয়েছি কোনো রকম এথনিক ক্লিনজিং আমরা মেনে নেবো না। আরাকানের অবস্থা যত দিন অস্থিতিশীল থাকবে, ততদিন পর্যন্ত প্রত্যাবাসনের আলোচনা সম্ভব হবে না।’
এই বক্তব্যের মাধ্যমে খলিলুর রহমান রাখাইন করিডোর ইস্যুতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরকারের মধ্যে কোনো মতবিরোধ নেই বলে স্পষ্ট করেছেন এবং জাতিসংঘের প্রস্তাবিত মানবিক সহায়তা চ্যানেল নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন।