অ্যানেসির একটি পার্কে বৃহস্পতিবার সকালে এ হামলা হয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম পুলিশের বরাতে জানিয়েছে, হামলাকারী ৩১ বছর বয়সী সিরিয়ান নাগরিকের নাম আবদালমাশি এইচ। তিনি গত বছরের শেষ দিকে সুইডেন থেকে ফ্রান্সে এসে অ্যাসাইলামের আবেদন করেন।
সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, আবদালমাশি সিরিয়ার খ্রিষ্টান। তার সুইডিশ স্ত্রী ও ৩ বছরের এক সন্তান রয়েছে। হামলার সময় তার কাছে একটি প্রার্থনার গ্রন্থ ও গলায় ক্রস ঝোলানো ছিল।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পার্কে কয়েক শিশু সকাল ১০টার দিকে খেলছিল। সঙ্গে ছিলেন তাদের অভিভাবক ও কেয়ারটেকাররা। এ সময় ওই ব্যক্তি ছুরি নিয়ে শিশুদের আঘাত করতে থাকে। এরপর দৌঁড়ে গিয়ে এক বয়স্ক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করে পালানোর চেষ্টা করেন।
ততক্ষণে পুলিশ গিয়ে পায়ে গুলি করে তাকে হেফাজতে নেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে দুই শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লিভারপুলের সাবেক ফুটবলার অ্যান্টনি লে ট্যালেক বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি পার্কে দৌড়াচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি উল্টো দিক থেকে অনেকে দৌড়ে আসছে আর আমাকে পালিয়ে যেতে বলছে… এরপর দেখি এক ব্যক্তি আমার কাছাকাছি চলে এসেছে, তাকে ধাওয়া করছে পুলিশ। আমি একটু দূরে সরে গেলাম। ওই ব্যক্তি এক গ্র্যান্ডমা ও এক গ্র্যান্ডপা-এর দিকে ছুটে যান ও গ্র্যান্ডপার উপর হামলা করেন।’
ট্যালেক বলেন, ‘আমি পুলিশকে বললাম তাকে গুলি করতে। ওই ব্যক্তি বৃদ্ধ লোকটিকে দুইবার আঘাত করে। এরপর পুলিশ তাকে গুলি করতে থাকে।’
সিটি মেয়র ফ্র্যাঙ্কোইস অ্যাস্ট্রোগ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। পুলিশের দ্রুত হস্তক্ষেপের কারণে হামলাকারীকে ধরা গেছে বলে বাহিনীর প্রশংসা করেছেন ফ্রান্সের স্বররাষ্ট্রমন্ত্রী যেরাল্ড ডারমানিন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রো জানিয়েছেন, এই হামলা কাপুরুষতা।
তিনি বলেন, ‘পুরো জাতি আজ হতবাক। যারা আহত হয়েছেন, তাদের ও তাদের পরিবারের এবং ইমার্জেন্সি সার্ভিসকর্মীদের প্রতি আমার সহানুভূতি ও প্রার্থনা রইল।’
প্রাথমিক তদন্তে হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। তবে হামলাকারীর অতীত রেকর্ডে সহিংসতার কোনো ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা মেলেনি।
ইসলামিক চরমপন্থি কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা আছে কিনা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।