৫৬ বছর বয়সী পরীক্ষার্থী লিয়াং শি স্থানীয় মিডিয়াকে জানান, নিজের ফলাফলে আরও একবার হতাশ হয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন কখনও পূরণ হবে কী-না তা নিয়ে বেড়েছে অনিশ্চিয়তা।
তিনি বলেন ‘আমি আগে বিশ্বাস করতাম না যে ব্যর্থ হবো। কিন্তু ধীরেধীরে কেমন যেন ভেঙে পড়তে শুরু করেছি… এ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব কী-না তা নিয়েও চিন্তাভাবনা করছি। হয়তো পরের বছর ছেড়েও দিতে পারি।’
তবে পরের বছর পরীক্ষায় অংশ নিয়ে যদি তিনি ব্যর্থ হন তবে নিজের নাম থেকে ‘লিয়াং’ ফেলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এর আগে লিয়াং তার উচ্চশিক্ষা অর্জন স্পৃহার জন্য স্থানীয় মিডিয়া কাভারেজ পেয়েছেন। ১৯৮৩ সাল থেকে কয়েক ডজন পরীক্ষায় অংশ নেয়ার পরেও ব্যর্থ হন তিনি। এরপরেও দেখছেন মর্যাদাপূর্ণ কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন।
১৯৮৩ সালে প্রথম প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ১৬ বছর বয়সে ঢোকেন চাকরিতে। যে কারখানায় কাজ করতেন সেটি দেউলিয়া হয়ে গেলে ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে নিজস্ব কাঠের ব্যবসা শুরু করেন লিয়াং। শিগগির তিনি হয়ে ওঠেন সফল একজন ব্যবসায়ী; শুরু করেন নির্মাণ সামগ্রী ব্যবসা। তবে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করতে থাকেন।
২০০১ সালে চায়না সরকার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার বয়সসীমা অপসারণ করলে তিনি আবারও নিজের থেমে থাকা শিক্ষা যাত্রা শুরু করেন। এর আগে ২০১৪ সালে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য পেপারস-কে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি কলেজে না গেলে আপনি ব্যর্থ। উচ্চশিক্ষা ছাড়া জীবন অসম্পূর্ণ থেকে যায়।’
চলতি বছরের ৭ জুন ‘গাওকাও’ পরীক্ষায় আবারও অংশ নেন লিয়াং। পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখতে ছেড়ে দেন মদ্যপান ও মাহজং খেলা।
চায়নায় এ বছর প্রায় ১৩ মিলিয়ন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। দেশটির ‘নাম্বার ওয়ান গাওকাও হোল্ডআউট’ বেশ কঠিন একটি পরীক্ষা। হাইস্কুল ছেড়ে আসা শিক্ষার্থীদের চাইনিজ, গণিত ও ইংরেজি এবং পছন্দের বিজ্ঞান অথবা মানবিক বিষয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়।
দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে মাত্র ৪১.৬ শতাংশ পরীক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান।