ভাগনার চিফ বেলারুশে

টিবিএন ডেস্ক

জুন ২৭ ২০২৩, ২২:২৯

ভাগনারের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগিনি প্রিগোযিন। ছবি: সংগৃহীত

ভাগনারের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগিনি প্রিগোযিন। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

রাশিয়ার বিতর্কিত প্রাইভেট মিলিশিয়া গ্রুপ ভাগনারের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগিনি প্রিগোযিন এখন বেলারুশে আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো। প্রেসিডেন্টের বরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বেল্টা এ খবর জানিয়েছে।

রাশিয়ায় ভাগনার বিদ্রোহের পর গা ঢাকা দিয়েছিলেন প্রিগোযিন। তিনি কোথায় আছেন তা কেউ নিশ্চিত করতে না পারলেও ধারণা করা হচ্ছিল, বেলারুশই তার বর্তমান আশ্রয়স্থল। সেখানে তিনি ভাগনার রিক্রুটমেন্ট ক্যাম্প গড়ে তুলবেন বলেও গুঞ্জন ওঠে।

তবে বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তার দেশে নতুন করে কোনো ভাগনার ক্যাম্প গড়ে উঠবে না। তবে ভাগনার সেনারা চাইলে তাদের নিজেদের ক্যাম্প ব্যবহার করতে পারবেন।

লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘আমরা তাদেরকে আমাদের একটি খালি পড়ে থাকা সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছি। সেখানে চারদিকে বেড়া দেয়া আছে, অবকাঠামোগত অনেক কিছুই আছে। তারা চাইলে সেখানে তাবু টানাতে পারেন।’

তিনি জানান, মস্কোর সঙ্গে চুক্তির অংশ হিসেবে ভাগনার সেনাদের নিয়ে প্রিগোযিন তার দেশে নির্বাসনে রয়েছেন। নির্বাসনকালে ভাগনারের যুদ্ধ সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা থেকে তিনি শিখতে চান।

তবে বেলারুশে তাদের অবস্থান ও কর্মকাণ্ডের ওপর কর্তৃপক্ষের কড়া নজরদারি থাকবে বলেও জানান প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো।

ভাগনার সেনারা নিয়মিত রাশিয়ান সেনাদের সঙ্গে মিলে ইউক্রেইনের বাখমুতে হামলা চালিয়েছে।

তবে ইউক্রেইনে সামরিক অভিযান ভুলভাবে পরিচালনার জন্য দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং চিফ অফ দ্য জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভকে বিভিন্ন সময় দায়ী করেছেন ভাগনার চিফ।

প্রিগোযিনের নেতৃত্বে গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার পর্যন্ত বিদ্রোহ করে ভাগনার। বাহিনীর ২৫ হাজার মিলিশিয়া সেনা রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রোস্টভ- অন-ডনের দখল নেয়। তাদের দাবি ছিল, ‘জীবনের বিনিময়ে’ হলেও তারা পুতিনের সামরিক বাহিনীর উপর প্রতিশোধ নেবে।

ভাগনারের টেলিগ্রাম চ্যানেলে শনিবার পোস্ট করা এক বার্তায় বলা হয়, ‘পুতিন ভুল করেছেন। তিনি নিজের জন্যই বিপদ ডেকে এনেছেন। খুব শিগগিরই আমরা নতুন প্রেসিডেন্ট পাব।’

রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হামলায় ভাগনার বাহিনীর কয়েক মিলিশিয়া নিহতের প্রতিবাদ হিসেবে প্রিগোযিন এমন ঘোষণা দেন।

তবে মস্কোর উদ্দেশে যাত্রা করা ইউনিটটি প্রায় অর্ধেক পথ অতিক্রম করে ভরোনেয শহর পার হয়ে লিপেটস্কে পৌঁছানোর পর পিছিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।

এ বিষয়ে সোমবারের বার্তায় প্রিগোযিন জানান, বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্টের মধ্যস্থতায় রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে বিদ্রোহ অবসানের সিদ্ধান্ত নেয় ভাগনার।

১১ মিনিটের ভিডিওবার্তায় তিনি সুর পাল্টে জানান, বিদ্রোহের লক্ষ্যবস্তু কোনোভাবেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ছিলেন না।

তিনি বলেন, ‘মার্চের উদ্দেশ্য ছিল ভাগনারের বিনাশ ঠেকানো এবং সেইসব অফিসারদের জবাবদিহিতে বাধ্য করা, যাদের অপেশাদার পদক্ষেপের কারণে বিপুল ক্ষতি হয়েছে।’

সশস্ত্র বিদ্রোহ উসকে দেয়ার অভিযোগে ঘটনার পরই প্রিগোযিনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করে রাশিয়ান ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি)।

তবে মঙ্গলবার সিকিউরিটি সার্ভিসের বরাতে রাশিয়ার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, ভাগনার বিদ্রোহ সংক্রান্ত ফৌজদারি মামলা তুলে নেয়া হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ভাগনার সেনারা তাদের ভারি সামরিক সরঞ্জাম রাশিয়ান সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করবে।

এর আগের দিনই ভাগনার চিফ ভিডিও বার্তায় জানিয়েছিলেন, তার বাহিনী চলতি মাস শেষে ভেঙে দিতে চাইছে রাশিয়ার সরকার।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন