অ্যামেরিকান নীতিতে সন্ত্রাসবাদ বিবেচনায় নেয়ার আহ্বান ১৭ বাংলাদেশি-অ্যামেরিকানের

টিবিএন ডেস্ক

জুলাই ৪ ২০২৩, ২৩:০৫

অ্যামেরিকান নীতিতে সন্ত্রাসবাদ বিবেচনায় নেয়ার আহ্বান ১৭ বাংলাদেশি-অ্যামেরিকানের
  • 0

বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াত জোট এবং তাদের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠনের মাধ্যমে সংঘটিত ব্যাপক সন্ত্রাসবাদের বিষয়টিকে অ্যামেরিকান নীতিতে বিবেচনায় নেয়ার আহবান জানিয়েছেন অ্যামেরিকার বিভিন্ন সংগঠনের বাংলাদেশি-আমেরিকান নেতারা।

বিবৃতিতে তারা বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৌশলকে জোরালোভাবে সমর্থন করেন।

তারা বলেন, ‘বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আমরা আপনার (জো বাইডেন) প্রশাসনের উদ্বেগের প্রশংসা করলেও, অ্যামেরিকান নীতিতে অবশ্যই বাংলাদেশে ব্যাপক সন্ত্রাসবাদের ঘটনা বিবেচনা করতে হবে, যা সরাসরি বিএনপি-জামায়াত জোট এবং জোটের পৃষ্ঠপোষকতায় অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠন দ্বারা সংঘটিত হয়েছে।’

তারা বলেন, ‘মুসলিম দেশ ও অঞ্চলের ঐতিহাসিক ও সামাজিক-রাজনৈতিক মাত্রা বিবেচনা না করে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে অ্যামেরিকান পররাষ্ট্রনীতির বারবার ব্যর্থতার বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া এবং লিবিয়া অ্যামেরিকার পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতার উজ্জ্বল উদাহরণ। আমরা বাংলাদেশে তা চাই না। অনুগ্রহ করে আমাদের বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করার অনুমতি দিন।’

তারা বলেন, ‘বাংলাদেশে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত এবং ভালো অংশগ্রহণমূলক চারটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, শুধু অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানই উদার গণতান্ত্রিক ফলাফলের নিশ্চয়তা দেয় না। বিশেষ করে, ২০০১ এবং ২০০৮ সালের দুটি অবাধ নির্বাচনের মধ্যে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসী ঘটনাগুলো ইঙ্গিত করে যে, ২০০৪ সালে একটি অবাধ (এবং তথাকথিত সুষ্ঠু) নির্বাচন প্রকৃতপক্ষে বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থাকে পরিবর্তন করবে না, যদি না স্টেকহোল্ডারদের নিরাপত্তা, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে একটি টেকসই সমাধান খুঁজে পাওয়া এবং সংখ্যালঘু ও রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের নির্বাচনপরবর্তী রাজনৈতিক অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা না দেয়া যায়।’

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘২০০১ সালের অক্টোবরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন চারদলীয় ইসলামী জোট জয়লাভ করে। বিজয়ের পরপরই, ওই জোট বাংলাদেশের ১১টি পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা জুড়ে হিন্দু এবং আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বিরুদ্ধে নৃশংস আক্রমণ চালায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার কারণে হিন্দু ও বিরোধী কর্মীদের টার্গেট করা হয়েছিল। সহিংসতার ফলে ব্যাপক লুটপাট এবং বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া, হিন্দু নারীদের ধর্ষণ এবং হিন্দুদের উচ্ছেদ করা হয়।

‘এটি ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে চলতে থাকে, কিছু ক্ষেত্রে জোট নেতাদের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় অব্যাহত থাকে।’

বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্দেশে তারা বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা আপনার প্রশাসনের কিছু পদক্ষেপ এবং কিছু আইন প্রণেতার বক্তব্য বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্যের মতো লক্ষ্য করছি এবং এই পদক্ষেপগুলো অ্যামেরিকা-বাংলাদেশ সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমরা এসব ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং বিনীতভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে প্রতিফলিত করে এমন পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি, যা বাংলাদেশকে সহিংসতামুক্ত একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।’

তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্র দুটি বিরোধী শক্তিতে সম্পৃক্ত, একটি বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ উদার আদর্শের সঙ্গে এবং অন্যটি রাজনৈতিক জঙ্গিবাদের সঙ্গে মিশ্রিত ধর্মীয় উগ্রবাদে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং অপরটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপি-জামায়াত অক্ষ। সাম্প্রতিক অ্যামেরিকান নীতি এবং বক্তৃতা শুধু সন্ত্রাসবাদীদের অনুপ্রাণিত করছে এবং উদারপন্থি শক্তিকে মারাত্মকভাবে বিভ্রান্ত করছে।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন নির্বাচিত বাংলাদেশি-অ্যামেরিকান কর্মকর্তা কাউন্সিলম্যান ড. নুরুন নবী, এনজে মেয়র মাহাবুবুল আলম তৈয়ূব, স্টেইট প্রতিনিধি আবুল খান, কাউন্সিলম্যান আবু আহমেদ মুসা এবং কাউন্সিলম্যান নুরুল হাসান, সম্প্রীতি ফোরামের অধ্যাপক এবিএম নাসির, ইউএসএ বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রকৌশলী রানা হাসান মাহমুদ ও প্রকৌশলী স্বীকৃতি বড়ুয়া, বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার ভেটেরান্স ১৯৭১ ও ইউএসএ ইনকর্পোরেটেড গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, ক্যালিফোর্নিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের নজরুল আলম, অ্যামেরিকা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ফাহিম রেজা নূর, মিশিগান বঙ্গবন্ধু পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার আহাদ আহমেদ, ইউএসএ কমিটি ফর ডেমোক্র্যাটিক অ্যান্ড সেক্যুলার বাংলাদেশের জাকারিয়া চৌধুরী, জর্জিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের মাহাবুবুর রহমান ভূঁইয়া, অ্যামেরিকার বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের খুরশীদ আনোয়ার বাবলু, গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসি বঙ্গবন্ধু পরিষদের দস্তগীর জাহাঙ্গীর, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ড. আব্দুল বাতেন, ম্যাসাচুসেটস বঙ্গবন্ধু পরিষদের সফেদা বসু, গণতান্ত্রিক নেতা মোরশেদ আলম, পেনসিলভানিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের আবু তাহের বীর প্রতীক, অ্যাকাডেমিক গ্রুপের প্রফেসর জিয়াউদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর মিজান আর মিয়া, প্রফেসর জামিল তালুকদার, প্রফেসর শাহাদাত হোসেন এবং সাউথ নিউ জার্সি বঙ্গবন্ধু পরিষদের নূরন্নবী চৌধুরী ।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন