নিউ ইয়র্কে প্রতি টন কোকোর দাম গত সপ্তাহে পৌঁছায় ৩ হাজার ৫৬৯ ডলারে। অবশ্য এ সপ্তাহে দাম কিছুটা কমে ৩ হাজার ৫৫২ ডলারে নেমেছে। চকলেটের এই কাঁচামালের এমন চড়া দাম ২০১১ সালের মার্চের পর এবারই সর্বোচ্চ।
বাজার বিশেষজ্ঞরা চকলেট কিংবা চকলেট জাতীয় পণ্যের বিশ্বব্যাপী সরবরাহ কমে যাওয়ার জন্য কোকোর এই বর্ধিত দামকে দায়ী করেছেন।
সফট কমোডিটিস অ্যানালিস্ট জুডিথ গ্যানেস রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি মনে হয় না, ইতিহাসে কখনও আমাদের পরপর তিন বছর কোকোর ঘাটতি ছিল। কোকো মূলত অ্যাফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চলের ফসল। বিশ্বের বেশিরভাগ কোকো ওই অঞ্চলে উৎপাদন হয়। তবে এই চড়া দামে ফসলটির উৎপাদন কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।’
খাদ্য ও আবহাওয়া বিশ্লেষকরা এক সতর্ক বার্তায় বলেছেন, কোকো উৎপাদনের উচ্চ ব্যয় ও চরম আবহাওয়ার কারণে কোকো উৎপাদনে শীর্ষে থাকা দুই দেশ আইভরি কোস্ট এবং ঘানার উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে। এই দুই দেশেই সবচেয়ে কম সার ব্যবহার করে সবচেয়ে বেশি কোকো উৎপাদন করা হতো।
বিশ্লেষকেরা আগামী নভেম্বর থেকে ওই অঞ্চলে খরার আশঙ্কা করছেন। সাধারণত এল নিনো আবহাওয়ায় পশ্চিম অ্যাফ্রিকায় বৃষ্টি অত্যন্ত কমে যায়।
ব্লুমবার্গের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আইভরি কোস্টের কোকো বিনের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে কমপক্ষে ২০ শতাংশ কমবে। ঘানার ইতিহাসে এই উৎপাদন গড়ের সবচেয়ে নিচে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কোকোর ঘাটতিতে বিশ্বের অন্যতম প্রধান চকোলেট প্রস্তুতকারক সুইজারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান লিন্ডট ও অ্যামেরিকার পেনসিলভেনিয়ার প্রতিষ্ঠান হার্শি কোংকে এরইমধ্যে চকলেট ও চকলেট জাতীয় পণ্যের দাম বাড়ানোর বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
চকলেট ইন্ডাস্ট্রির এই সংকট শুধু উৎপাদিত পণ্যের পরিমাণকেই নয় বরং এর গুণমানকেও প্রভাবিত করতে পারে।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, দাম বাড়ানোর পাশাপাশি চকলেট কোম্পানিগুলো তাদের চকলেট বারের আকারও ছোট করতে পারে।