কিউবায় দিন দিন ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকা লোকজনের সংখ্যা বাড়ছে। হাভানার ৭৭ বছর বয়সী হামবার্তো অ্যাভিলা তাদের একজন। রোববারের নির্বাচনে ভোট দেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। নির্বাচনের যে অংক, তা ইউনিভারসিটির অবসরপ্রাপ্ত এই প্রফেসরের কাছে পরিষ্কার।
তিনি বলেন, 'আমার কাছে মনে হয়… যে কয়টি আসন, সেই কয়জন প্রার্থী। আসলে এখানে তো কোনো নির্বাচন নেই। এই নির্বাচনে ভোট দেয়ার মানে হচ্ছে- প্রার্থী মনোনয়ন কমিটি যা করেছে তাই-ই নিশ্চিত করা, এছাড়া আর কিছু না।
কিউবায় প্রার্থী মনোনীত করার জন্য সরকার মনোনয়ন কমিটি গঠন করে। নির্বাচনে জিততে হলে প্রার্থীকে নিজ এলাকায় বৈধ ভোটের শতকরা ৫০ ভাগের বেশি ভোট পেতে হবে। তবে নির্বাচনে প্রচার চালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিউবা বলে আসছে- এই ব্যবস্থা জাতীয় ঐক্য সুসংহত করেছে এবং নির্বাচনে খরচ কমিয়েছে। কিন্তু সমালোচকরা বলে থাকেন, এতে নির্বাচনে স্বচ্ছতার ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে এবং একদলীয় শাসনব্যবস্থাকে পাকাপোক্ত করেছে। এই অবস্থায় নতুন সংসদের বিশ্বাসযোগ্যতা যেমন প্রশ্নের মুখে পড়বে, তেমনি অর্থনৈতিক সংকট আরও গভীর হবে।
১৯৫৯ সালে বিপ্লবের পর থেকে কিউবা সমাজতান্ত্রিক ধারায় শাসিত হয়ে আসছে। জার্মান ইনস্টিটিউশন অব গ্লোবাল অ্যান্ড এরিয়া স্টাডিজের ল্যাটিন অ্যামেরিকার বিশেষজ্ঞ বার্ট হফম্যান জানিয়েছেন, পরিস্থিতি আগের যে-কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
চার দশকের মধ্যে কিউবায় এবারই সবচেয়ে বেশি ভোট না দেয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গত নভেম্বর স্থানীয় নির্বাচনে শতকরা ৩১ ভাগ ভোটার, ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিলেন। রাজধানী হাভানার বাইরের কয়েকটি গ্রুপ লোকজনকে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করে তুলছে। তারা বলছে, বর্তমান ব্যবস্থা নির্বাচনের নামে নিতান্তই প্রহসন। এ নিয়ে তারা সামাজিক মাধ্যমে নানারকম ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
এর বিপরীতে কিউবার সরকার লোকজনকে ভোট দেয়ার জন্য উৎসাহিত করছে। তারা বলছে, রোববারের এই নির্বাচন কিউবার ঐক্যের নির্বাচন; তারা একে দেশপ্রেম ও সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি সমর্থন বলে মনে করছেন। কিউবার তরুণ প্রজন্ম এবং বয়সীদের অনেকেই সরকারের এই যুক্তিকে মেনে নিচ্ছেন।