ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি: কী করবেন বাংলাদেশিরা?

টিবিএন ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৫ ২০২৫, ২৩:২৭ হালনাগাদ: ডিসেম্বর ১০ ২০২৫, ৬:০৭

আইসের এজেন্টরা ২০২৫ সালের ২৬ জানুয়ারি ইলিনয়ের লিয়ন্স এলাকায় এক সন্দেহভাজনকে আটক করেন। ছবি: ব্লুমবার্গ

আইসের এজেন্টরা ২০২৫ সালের ২৬ জানুয়ারি ইলিনয়ের লিয়ন্স এলাকায় এক সন্দেহভাজনকে আটক করেন। ছবি: ব্লুমবার্গ

  • 0

অবৈধভাবে বসবাস করা কিংবা অপরাধে দোষী সাব্যস্ত অভিবাসীদের ধরতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইস। এতে করে আতঙ্কিত বিভিন্ন কমিউনিটির সদস্যরা। ব্যতিক্রম নন বাংলাদেশি কমিউনিটির লোকজনও।

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর গণবিতাড়নকে নিজের এজেন্ডার শীর্ষে রেখেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। অবৈধভাবে বসবাস করা কিংবা অপরাধে দোষী সাব্যস্ত অভিবাসীদের ধরতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইস। এতে করে আতঙ্কিত বিভিন্ন কমিউনিটির সদস্যরা। ব্যতিক্রম নন বাংলাদেশি কমিউনিটির লোকজনও।

এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশিদের করণীয় কী, সে বিষয়ে টিবিএনের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন নিউ ইয়র্কভিত্তিক অভিবাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ এন. মুজুমদার।

তিনি টিবিএন অ্যানালাইসিসের সঞ্চালক রানা আহমেদকে বলেন, ‘প্রথম এভাবে বলি, কতজন বাংলাদেশি ডিটেইন (আটক) হইছে, যেটা আপনিও বলেছেন, আইস ডিসক্লোজ (প্রকাশ) করে না কতজনকে করেছে, বাট বিভিন্ন সোর্স থেকে পাইছেন, ধরেই নিলেন সেভেন্টি ফাইভ পিপলকে নিয়েছে…। আমি বলি, যাদের নিয়ে গেছে, তারা সবাই যে ডিপোর্ট (বিতাড়ন) হবে, এমন কোনো কথা না। কারণ অনেকে ডিউ প্রসেসে এনটাইটেলড। ডিউ প্রসেস হচ্ছে যারা দুই বছরের বেশি যুক্তরাষ্ট্রে আছেন এবং যারা বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন কোনো ভিসা নিয়ে, তাদের ডিউ প্রসেস দেওয়া হবে। অর্থাৎ কোর্টে নেওয়া হবে।

‘দেখা হবে কোনো রিলিভ আছে কি না, তাদের আইনজীবী কোনো রিলিভ বা রেমিডি (প্রতিকার) নিয়ে আসতে পারে কি না। দ্যাট’স ওয়ান থিং। সো ঘাবড়াইতে হবে না, যাদেরকে অ্যারেস্ট করা হইছে, যদি তারা দীর্ঘদিন থেকে থাকে, অ্যাসাইলাম কেইস পেনডিং থাকে, মাল্টিপল কেইস পেন্ডিং থাকে, তাদের জন্য বেস্ট ডিল হবে, তারা যেন স্ব স্ব আইনজীবীর মাধ্যমে লিটিগেট (মামলা) করে দেয়ার ইজ আ চান্স তারা আসবে।’

সাম্প্রতিক একটি ঘটনার উদাহরণ দিয়ে এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আরেকটা কথা বলি, জ্যাকসন হাইটস থেকে তাদের নামও বলব না, কোন লইয়ার সেটাও বলব না আমরা, দুইজনকে ইমিগ্রেশনে হাজিরা দিতে গিয়া, একজন অ্যাসাইলাম হাজিরা, একজন সিটিজেনশিপ দিতে গিয়া, একজনকে সেখানে ডিটেইন করা হইছে। যতটুকু ফ্যামিলি থেকে আমি শুনছি পারসোনালি, ফ্যামিলির বক্তব্য হচ্ছে একজনের কেইস হচ্ছে অ্যাসাইলাম কেইস ওয়াজ কমপ্লিটলি আনপ্রিপিয়ার্ড (সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত ছিল)। কন্ট্রাডিকটরি স্টোরি, একটা কথা আছে, যদি কোনো প্রসিডিং বা কেইস যদি জাজ মনে করে বা এমন কোনো কেইস দেওয়া হয়, যেটা আউটরাইট রিজেক্ট (সরাসরি প্রত্যাখ্যান) করার মতো, সামারালি ডিসমিস করার মতো, এ ধরনের কেইস যদি দেওয়া হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে, ওখানে ফরমের নিচেই লেখা থাকে, বোগাস, বানোয়াট, মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকেন, শুধু কেইস বানোয়াট না, আপনাকে ডিটেইনও করতে পারে।

‘ওই ধরনের ক্ষেত্রে লেখা থাকলে ইতোপূর্বে এগুলা ইমপোজ করা হতো না। বর্তমান প্রশাসন, আপনি যেটা বলছেন, কঠোর নীতিমালা পালন করতেছে এবং এগজিস্টিং লকে (বিদ্যমান আইন) কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করছে। সো সেই নীতিতে অন দ্য স্পট ডিটেইন (ঘটনাস্থলে আটক) করা হইছে একজনকে ফলস পিটিশন (ভুল আবেদন) ফাইল করার জন্য।’

ঘটনাটির প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আরেকজনকে সিটিজেনশিপ অ্যাপ্লিকেশন করতে যে গিয়েছে, দেখা গেল তার দুই নামে গ্রিন কার্ড সে নিয়েছে। একবার গ্রিন কার্ড নিয়েছিল, সেটা রিভোক (বাতিল) হইছে। টেম্পোরারি গ্রিন কার্ড পেয়েছিল। ওইটাকে রিনিউ না করিয়া, আর বউকেও পাওয়া যায় নাই, সে ওইটা এদিকে না যাইয়া, অথচ ওখানে বউকে না পাওয়া গেলেও কিন্তু গ্রিন কার্ড পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ওইটা না করিয়া সে আরেকজনকে বিয়ে করে আরেকটা কেইস দিয়া আবার ওখানে গেছে।

‘মোস্ট ইম্পরট্যান্টলি লইয়ার শুড ডিগ ইনটু ইট (সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আইনজীবীর উচিত বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা)। লইয়ারের তাকে প্রিপেয়ার করে সেখানে নেওয়া উচিত ছিল।’

বাংলাদেশি কমিউনিটির উদ্দেশে মুজুমদার বলেন, ‘আমি আজকে জনগণের উদ্দেশে বলব, আপনার কী সমস্যা আছে, আপনার থেকে বেশি লইয়ার জানে না। কোনো জাজও জানে না। যদি আপনার এ ধরনের সমস্যা থাকে, যেমন গ্রিন কার্ডটা আপনি ভালো পথে নেন নাই, সে ক্ষেত্রে আপনার উচিত হবে না সেই গ্রিন কার্ড নিয়া ভ্রমণ করা। কোনো কারণে ডিফেক্টিভ হইতে পারে। তখন আপনাকে সেখানে ডিটেইন করতে পারে। এখানে একটা রিউমার ছড়ানো হচ্ছে গ্রিন কার্ডধারীদেকেরও ডিটেইন করা হবে; গ্রিন কার্ডধারীকেও ফেরত দেওয়া হবে। এটা ঠিক না।

‘আরেকটা কথা আমি বলি, ভেরি রিলায়েবল সোর্স থেকে আমি জানি, ট্রাম্প প্রশাসনের কাজ হচ্ছে প্যানিক করা; ভয় পাওয়া, যাতে ভয় পাইয়াও মানুষ সেলফ ডিপোর্ট (স্বেচ্ছা বিতাড়ন) হয়ে যায়। সো হাফ অব দি জব হয়ে যাবে যদি মানুষ এমনি চলে যায়।’