ঈদ উদযাপনে মুসলিম মেয়রকে শামিল করেনি হোয়াইট হাউয
টিবিএন ডেস্ক
মে ২ ২০২৩, ২০:১৬
- 0
হোয়াইট হাউযের ঈদুল ফিতর উদযাপনের আয়োজনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি নিউ জার্সিতে মুসলিম এক মেয়রকে। নিমন্ত্রিত হওয়া সত্ত্বেও ইউএস সিক্রেট সার্ভিসের ছাড়পত্র না পাওয়ায় তিনি হোয়াইট হাউয যেতে পারেননি।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি।
নিউ জার্সির প্রসপেক্ট পার্ক বরোর মোহাম্মদ খাইরুল্লাহর সঙ্গে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে এবিসি সেভেন নিউয।
৪৭ বছর বয়সী খায়রুল্লাহ এই বরোর মেয়র হিসেবে গত জানুয়ারিতে পঞ্চম মেয়াদে নির্বাচিত হন।
হোয়াইট হাউযে ঈদের আয়োজন ছিল গত সোমবার সন্ধ্যায়। তাতে যোগ দেয়ার নিমন্ত্রণ খায়রুল্লাহ আগেই পেয়েছিলেন।
মেয়র জানান, ঈদ উদযাপনের জমকালো ওই আয়োজনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কয়েকশ অতিথির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সময়মতো প্রস্তুত হচ্ছিলেন তিনি। সে সময় হোয়াইট হাউয থেকে তাকে কল করা হয়। জানানো হয় সিক্রেট সার্ভিস তাকে অনুষ্ঠানে প্রবেশের জন্য ছাড়পত্র দেয়নি। এ কারণে তিনি হোয়াইট হাউয যেতে পারবেন না। ছাড়পত্র না দেয়ার কারণ তাকে জানানো হয়নি।
ইউএস সিক্রেট সার্ভিসের মুখপাত্র অ্যান্থনি গুগলিয়েলমি বিষয়টি নিশ্চিত করলেও কারণ জানাতে চাননি।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘মেয়রকে আজ সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউয কমপ্লেক্সে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি। আমরা এ কারণে সৃষ্ট অসুবিধার জন্য দুঃখিত। দুর্ভাগ্যবশত হোয়াইট হাউযে আমাদের নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নেয়া সুনির্দিষ্ট প্রতিরক্ষা কার্যক্রম এবং পদ্ধতির বিষয়ে মন্তব্য করতে পারছি না।’
বিষয়টি কাউন্সিল অন অ্যামেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের (সিএআইআর) নিউ জার্সি চ্যাপ্টারকে জানান মেয়র খায়রুল্লাহ।
কাউন্সিল খায়রুল্লাহকে জানিয়েছে, ২০১৯ সালে রেকর্ড করা জঙ্গিদের একটি ডাটায় খায়রুল্লাহর নাম আছে। ওই নামের সঙ্গে দেয়া জন্মতারিখও মেয়রের সঙ্গে মিলে যায়।
মেয়র সোমবার সন্ধ্যায় টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘হোয়াইট হাউযের এমন ব্যবহার আমাকে বিস্মিত, হতবাক এবং হতাশ করেছে।
‘পার্টিতে যেতে না পারা কোনো বড় বিষয় নয়। আমি হতাশ হয়েছি দেখে যে একটি তালিকা কেবল নামের কারণে আমাকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। এটি খুবই দুঃখজনক। আমি মনে করি, অ্যামেরিকার সর্বোচ্চ অফিসের এই ধরনের প্রোফাইলিংয়ের সঙ্গ দেয়া একেবারেই অনুচিত।’
সিএআইআর-এর নিউ জার্সি চ্যাপ্টারের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সেলাদিন মাকসুত হোয়াইট হাউযের এমন পদক্ষেপকে ‘একেবারে অগ্রহণযোগ্য ও অপমানজনক’ বলে অভিহিত করেছেন।
মাকসুত বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনাগুলো যদি মেয়র খায়রুল্লাহর মতো উচ্চ-প্রোফাইল এবং সম্মানিত অ্যামেরিকান-মুসলিম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে ঘটতে পারে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে যে, সাধারণ মুসলমানদের সঙ্গে কী ঘটছে?’
এর আগেও হয়রানিতে পড়তে হয়েছিল খায়রুল্লাহকে।
তুর্কিয়ে থেকে ফেরার সময় নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এর আগে ২০১৯ সালে তাকে আটক করেছিল কর্তৃপক্ষ। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয় তাকে। জানতে চাওয়া হয় তিনি কোনো সন্ত্রাসীকে চেনেন কিনা।
অ্যামেরিকান-কানাডার সীমান্তেও একবার এ ধরনের জেরায় পড়েছিলেন বলে জানান মেয়র।
মেয়র খায়রুল্লাহর জন্ম সিরিয়ায়। দেশটিতে ১৯৮০ সালের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সময় তার পরিবারকে বাস্তুচ্যূত করা হয়। পরিবারের সঙ্গে তিনি সৌদি আরব চলে যান। পরে ১৯৯১ সালে তিনি অ্যামেরিকায় এসে প্রসপেক্ট পার্কে বসবাস শুরু করেন।
বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রম পরিচালনায় তিনি অ্যামেরিকান মেডিক্যাল সোসাইটি ও ওয়াতান ফাউন্ডেশনের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশ ও সিরিয়ায় সফর করেছেন।