পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আইএইএর নজরদারি ক্যামেরা নিষিদ্ধ করল ইরান

টিবিএন ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৯ ২০২৫, ১২:১৩

রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসির সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ছবি: দ্য হিন্দু

রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসির সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ছবি: দ্য হিন্দু

  • 0

ইরানের সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়,নজরদারি ক্যামেরার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসির ইরানে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি শনিবার ঘোষণা দেন যে, দেশটিতে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসিকে তার ভূখণ্ডে প্রবেশ নিষিদ্ধ করবে এবং সংস্থাটিকে পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে নজরদারি ক্যামেরা স্থাপনের অনুমতিও আর দেবে না।

ইরানের জাতীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আব্বাস আরাঘচি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থাকে আমাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ক্যামেরা স্থাপনের অনুমতি দেব না এবং এই সংস্থার প্রধানকে দেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে।’

ইসরায়েলের সরকার আইএইএর মাধ্যমে ইরানের সংবেদনশীল স্থাপনার তথ্য পেয়েছে এমন অভিযোগ এনে ইরানের পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত বুধবার ইরানের পার্লামেন্ট আইএইএ-র সাথে সহযোগিতা স্থগিত করার জন্য আইন পাস করার পর এই পদক্ষেপ নেয়া হল।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা মেহরের বরাত দিয়ে তুর্কিয়ের আনাদুলু নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইরানের পার্লামেন্টের ভাইস স্পিকার হামিদ রেজা হাজি বাবাই শনিবার ইসরায়েলি হামলায় নিহত শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এবং পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের শেষকৃত্যে আইএইএ মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসিকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন।

ইসরায়েল ও অ্যামেরিকার সাথে সাম্প্রতিক সামরিক সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে প্রবেশাধিকার পর্যবেক্ষণ এবং স্বচ্ছতা নিয়ে তেহরান এবং জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই ঘোষণা দেয়া হল।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের সামরিক, পারমাণবিক এবং বেসামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালালে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে কমপক্ষে ৬০৬ জন নিহত এবং ৫,৩৩২ জন আহত হন।

২০১৫ সালে ফ্রান্স, রাশিয়া, বৃটেইন, অ্যামেরিকা, জার্মানি এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার হিসেবে ইরান আইএইএ কে তার পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে প্রবেশাধিকার এবং পরিদর্শন ও অত্যাধুনিক নজরদারি ডিভাইস ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা এড়াতে এ পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।

পরবর্তীতে প্রথম ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ সালে সেই চুক্তি থেকে সরে আসে। ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সাম্প্রতিক আলোচনার সময় নজরদারি ক্যামেরা সরিয়ে নেয়ার হুমকি দিয়েছিল।