মুসলিম হওয়ায় চিকিৎসা করতে চাননি ডাক্তার, অভিযোগ নারীর

টিবিএন ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭ ২০২৫, ১৮:০৯ হালনাগাদ: নভেম্বর ৯ ২০২৫, ২৩:৩৬

গত ১ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, এতে দৃশ্যত শামা পারভিনকে কর্তব্যরত ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে দেখা যায়। ছবি: এনডিটিভি

গত ১ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, এতে দৃশ্যত শামা পারভিনকে কর্তব্যরত ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে দেখা যায়। ছবি: এনডিটিভি

  • 0

সমাজবাদী পার্টির মাচলিশাহরের বিধায়ক রাগিনী শঙ্কর বিষয়টিকে ‘লজ্জাজক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি রাজ্যজুড়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে যাওয়ার ফল। প্রসব বেদনায় থাকা কোনো নারী চিকিৎসা দিতে না চাওয়ার বিষয়ে মিথ্যাচার করতে পারেন না।

ভারতের উত্তর প্রদেশের জৌনপুরে ধর্মীয় কারণে ডাক্তার চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এক নারী।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

চিফ মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট-সিএমএস ডাক্তার মাহেন্দ্র গুপ্তের বরাতে এনডিটিভি মঙ্গলবার জানায়, অভিযোগকারী নারী শামা পারভীন বিরিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে সন্তান প্রসবের জন্য তাকে হাসপাতালে আনা হয়। ওই রাতে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন দায়িত্বে থাকা এক নারী চিকিৎসক।

গত ১ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, এতে দৃশ্যত শামা পারভিনকে কর্তব্যরত ডাক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে দেখা যায়।

ওই চিকিৎসকের বক্তব্য উদ্ধৃত করে শামা বলেন, ‘আমি একজন মুসলিম নারীকে চিকিৎসা দেব না। আমি আপনার ডেলিভারি করব না।’

ওই নারীর অভিযোগ, শামাকে অপারেশন থিয়েটারে না নিতে নার্সকে নির্দেশনা দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ ছাড়া শামাকে অন্য কোনো স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার কথা পরিবারকে বলেন ওই ডাক্তার।

সিএমএস মাহেন্দ্র গুপ্তর ভাষ্য, তিনি অভিযোগ শুনে বিস্মিত। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন তিনি।

মাহেন্দ্র বলেন, ধর্মের কারণে এমন কোনো মন্তব্য করার কথা অস্বীকার করেছেন চিকিৎসক। তদন্ত শুরুর পাশপাশি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

এদিকে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মায়াঙ্ক শ্রীবাস্তবা ও মোহাম্মদ উসমান নামের স্থানীয় দুই সাংবাদিকের নামে ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট-এফআইআর বা এজাহার করা হয়েছে।

সিএমএস মাহেন্দ্র গুপ্ত কোতোয়ালি থানায় এফআইআরটি করেন। এতে তিনি বলেন, দুই সাংবাদিক জোরপূর্বক সন্তান প্রসব কক্ষে ঢুকে ভিডিও ধারণ করে হাসপাতালের ক্ষতি করেন।

এ ঘটনায় কড়া রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

সমাজবাদী পার্টির মাচলিশাহরের বিধায়ক রাগিনী শঙ্কর বিষয়টিকে ‘লজ্জাজক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি রাজ্যজুড়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে যাওয়ার ফল। প্রসব বেদনায় থাকা কোনো নারী চিকিৎসা দিতে না চাওয়ার বিষয়ে মিথ্যাচার করতে পারেন না।

তিনি বলেন, অভিযোগ থাকা ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় যে, সরকার সত্যকে নিতে পারে না।

ওই এমএলএ আরও বলেন, তিনি এ ব্যাপারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং প্রয়োজনে বিষয়টি বিধানসভায় উত্থাপন করবেন।

কংগ্রেস নেতা ভিকেশ উপাধ্যায় ভিকি ঘটনার সমালোচনা করে বলেন, এটি চরম লজ্জার যে, সমাজের সবাইকে সেবার শপথ নেওয়া একজন চিকিৎসক ধর্মীয় কারণে চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনায় ভুক্তভোগীর বর্ণ বা ধর্ম কোনো বিষয় নয়। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

ক্ষমতাসীন বিজেপির মুখপাত্র অবিনাশ তিয়াগি বিরোধীদের অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, সমাজে বিভাজন তৈরি করতে এ ধরনের অভিযোগ করা হচ্ছে।