২০২৬ সালে স্বর্ণের দাম নিয়ে বড় ব্যাংকগুলো ইতোমধ্যে পূর্বাভাস দিয়েছে। তথ্যনির্ভর বিশ্লেষণের ভিত্তিতে বড় বড় আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো ২০২৬ সালের স্বর্ণের দামের পূর্বাভাস প্রকাশ করেছে। তবে এই পূর্বাভাসে কিছুটা পার্থক্য আছে। যা নির্ভর করছে সুদের হার, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিশ্বব্যাপী চাহিদার মতো বিষয়গুলোর ওপর।

ইকোনমিক টাইমস জানায়, বিশ্বের প্রভাবশালী ব্যাংকগুলোর প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, সামগ্রিকভাবে স্বর্ণের বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।

জেপি মর্গান তাদের পূর্বাভাসে ধারণা করছে, ২০২৬ সালের শেষ প্রান্তিকে স্বর্ণের গড় দাম প্রায় প্রতি আউন্সে ৫,০৫৫ ডলার হতে পারে।

তাদের মতে, অ্যামেরিকার ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানো, স্ট্যাগফ্লেশন (অর্থনৈতিক স্থবিরতা ও মূল্যস্ফীতি) এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিনিয়োগকারীদের বাড়তি ক্রয়চাহিদা এই বৃদ্ধির মূল কারণ হবে।

ব্যাংক অব অ্যামেরিকা ২০২৬ সালে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ৫,০০০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছে সরকারি বাজেট ঘাটতি, বাড়তি ঋণের পরিমাণ, এবং ৩ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে ফেডের সম্ভাব্য সুদহ্রাস।

গোল্ডম্যান স্যাকস আশা করছে ২০২৬ সালের মধ্য নাগাদ স্বর্ণের দাম প্রায় ৬ শতাংশ বেড়ে ৪,০০০ ডলার প্রতি আউন্সে পৌঁছাতে পারে। তাদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) থেকে দীর্ঘমেয়াদি চাহিদাই এই ঊর্ধ্বগতির মূল কারণ।

এইচএসবিসির পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৬ সালের শেষে স্বর্ণের দাম ৫,০০০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে। এর কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, এবং দুর্বল অ্যামেরিকান ডলার। তবে তাদের হিসাবে ২০২৬ সালের গড় দাম হতে পারে প্রায় ৩,৯৫০ ডলার প্রতি আউন্স।

অন্যান্য বড় আন্তর্জাতিক ব্যাংকের পূর্বাভাসগুলোও সামগ্রিকভাবে স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

আইএনজির মতে, ২০২৬ সালে স্বর্ণের গড় দাম প্রায় ৪,১৫০ ডলার প্রতি আউন্স হতে পারে।

ডয়চে ব্যাংক আশা করছে স্বর্ণের গড় দাম প্রতি আউন্সে ৪,০০০ ডলার হবে।

এদিকে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড ব্যাংকিং গ্রুপ এএনজেড বলছে, ২০২৬ সালের জুন নাগাদ স্বর্ণের দাম ৪,৬০০ ডলারে চূড়ান্ত উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে, বছরের শেষে কিছুটা কমতে পারে দাম।

ব্যাংকগুলোর পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৬ সালে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ৪,০০০–৫,০০০ ডলারের মধ্যে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পেছনে কয়েকটি প্রধান কারণ রয়েছে।

প্রথমত, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা। দ্বিতীয়ত, বিশ্বব্যাপী ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা। তৃতীয়ত, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বর্ণের প্রতি নিরাপদ বিনিয়োগের বাড়ছে। এই সব কারণ একসাথে স্বর্ণের দামকে ২০২৬ সালে ঊর্ধ্বমুখী রাখবে।