নিউ ইয়র্কের সাবওয়েতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্ডান নিলিকে হত্যায় সাবেক মেরিন সেনা ড্যানিয়েল পেনিকে অভিযুক্ত করেছে গ্র্যান্ড জুরি। তার বিরুদ্ধে সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডারের অভিযোগে মামলা হয়েছিল।
ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি (ডিএ) অ্যালভিন ব্র্যাগ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও বিষয়টি বুধবার দুপুরে নিশ্চিত করেছেন নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস।
তিনি বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘জর্ডান নিলির মৃত্যুর ঘটনা ভালোমতো খতিয়ে দেখায় ডিএ ব্র্যাগকে সাধুবাদ জানাই। আমি যেমনটি বলেছিলাম, এ ঘটনায় অভিযোগ ওঠার পর বিচারিক প্রক্রিয়ার ওপর আমার পূর্ণ আস্থা ছিল। এখন ড্যানিয়েল পেনিকে অভিযুক্ত করেছে গ্র্যান্ড জুরি। এখন বিচারকাজ ও ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
এ খবর পেয়ে পেনির আইনজীবী স্টিভেন র্যাইজার ও থমাস কেনিফ যৌথ বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘মামলাটি বিচারপ্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে দেয়ায় গ্র্যান্ড জুরির সিদ্ধান্তের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। তবে এটা জেনে রাখুন, গ্র্যান্ড জুরি যেসব প্রমাণ দেখে সিদ্ধান্ত নেয়, সেগুলো খুবই দূর্বল। পেনি ভুল কিছু করেছেন বলে সেখানে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আমরা নিশ্চিত, বিচারক সেসব প্রমাণ দেখলেই বুঝতে পারবেন যে ট্রেনে পেনি যা করেছিলেন তার যথাযত কারণ ছিল।’
কৃষ্ণাঙ্গ নিলি ছিলেন গৃহহীন। পরিবার ও আইনজীবী লেনন এডওয়ার্ডসের দাবি, মাইকেল জ্যাকসনের মতো সেজে সাবওয়েতে নেচে-গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। ১৪ বছর বয়সে তার সামনে হত্যা করা হয় তার মাকে। এরপর থেকেই মানসিক রোগে আক্রান্ত নিলি।
সিটির সাবওয়ের নর্থবাউন্ড এফ ট্রেনে গত ১ মে বরাবরের মতো চড়ে বসেন নিলি। একই ট্রেনে ছিলেন পেনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেদিন অন্য যাত্রীদের সঙ্গে বেশ আক্রমণাত্মক আচরণ করছিলেন নিলি। ডলার চেয়ে হইচইও করছিলেন। এক পর্যায়ে পেনি তার গলায় জাপটে ধরেন। প্রায় ১৫ মিনিট তার গলা চেপে রাখা হয়। এ সময় অন্য দুই যাত্রী তার হাত-পা চেপে ধরেন। ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়েন নিলি।
পরে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পেনি দাবি করেন, নিলি চিৎকার করে যাত্রীদের বলছিলেন, ‘আমি তোমাদের মেরে ফেলব… আমি জেলে যেতে প্রস্তুত…’। এ কারণে নিজেকে ও অন্য যাত্রীদের রক্ষায় তিনি নিলিকে চেপে ধরেছিলেন।
সাবওয়ের ঘটনাটি এক যাত্রী মোবাইল ফোনে ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেন। এরপর নিলি হত্যার বিচার চেয়ে নিউ ইয়র্কজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ।
পেনি গত ১২ মে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন ১০০ হাজার ডলার বন্ডে জামিন নেন। দোষি সাব্যস্ত হলে তার ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।