জীবন ও মৃত্যুর পর্দা সরিয়ে প্রেমের বহিঃপ্রকাশ যে নতুন নয়, সেটিই আরেকবার প্রমাণ করলেন ভারতের মহারাষ্ট্রের এক তরুণী। জীবিত অবস্থায় প্রণয়কে পরিণয়ে রূপ দিতে না পারলেও মৃত প্রেমিকের কপালে সিঁদুর পরিয়েছেন এ প্রেমিকা। তিনি ইচ্ছা পোষণ করেছেন আঘাতে নিহত প্রেমিকের বাড়িতে স্ত্রী হিসেবে থেকে যাওয়ার।
এনডিটিভি রবিবার জানায়, মহারাষ্ট্রের নানদেদ এলাকার ২০ বছর বয়সী ওই তরুণকে পিটিয়ে, গুলি করে হত্যা করা হয়। পাথর দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয় তার মাথা।
শেষকৃত্যে এসে সে তরুণের কপালে সিঁদুর পরিয়ে দেন তার প্রেমিকা। তিনি বাড়িটিতে পুত্রবধূ হিসেবে থাকার নেন ব্রত।
সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, আঁচল নামের তরুণী তার ভাইয়ের মাধ্যমে সাকশাম তাতে নামের তরুণের সঙ্গে পরিচিত হন। সাকশামের বাড়িতে প্রায়ই যাওয়ার মধ্য দিয়ে তাদের সম্পর্ক গভীর হয়। সাকশামের পরিবারের সঙ্গে আঁচলের পরিবারের বর্ণগত পার্থক্য থাকার তাদের তিন বছরের সম্পর্ক সম্প্রতি চাপে পড়ে।
সাকশামের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখতে আঁচলকে হুমকিও দেয় তার পরিবার, কিন্তু তা সত্ত্বেও তরুণী সম্পর্ক অব্যাহত রাখেন।
একপর্যায়ে আঁচলের ভাই ও বাবা সাকশামকে বিয়ের পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে পারেন। বিষয়টি আটকাতে তারা বৃহস্পতিবার তরুণকে মারধরের পাশাপাশি তার মাথায় গুলি করেন। এ ছাড়া পাথর দিয়ে থেঁতলে দেন তার মাথা।
মারধরে নিহত সাকশামের শেষকৃত্যের সময় তার বাড়িতে হাজির হন আঁচল। তিনি প্রেমিকের প্রাণহীন দেহে মাখিয়ে দেন হলুদ। কপালে পরিয়ে দেন সিঁদুর। এভাবে মৃতদেহকে করেন বিয়ে।
এরপর সারা জীবনের জন্য সাকশামের স্ত্রী হিসেবে বাড়িটিতে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আঁচল।
‘আমাদের ভালোবাসা জিতেছে। সাকশামের মৃত্যু সত্ত্বেও আমার বাবা ও ভাই হেরেছে’, বলেন তরুণী।
সাকশামের হত্যায় জড়িতদের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আঁচল বলেন, প্রেমিক মারা গেলেও তাদের ভালোবাসা জীবিত, যে কারণে তাকে বিয়ে করেছেন তিনি।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছয়জনের নামে বিভিন্ন ধারায় মামলা করে তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।