খোঁজ মিলেছে বিমানে সহযাত্রীর থাপ্পড়ের পর নিখোঁজ সেই যাত্রীর

টিবিএন ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩ ২০২৫, ৭:৩৯ হালনাগাদ: সেপ্টেম্বর ৭ ২০২৫, ১২:০৫

খোঁজ পাওয়া গেছে নিখোঁজ সেই বিমান যাত্রীর। ছবি: এনডিটিভি

খোঁজ পাওয়া গেছে নিখোঁজ সেই বিমান যাত্রীর। ছবি: এনডিটিভি

  • 0

হঠাৎ মাঝ–আকাশে আতঙ্কজনিত মানসিক বিপর্যয়ের (প্যানিক অ্যাটাকের) শিকার হয়েছিলেন হুসেইন।

অবশেষে খোঁজ মিলেছে বিমানে সহযাত্রীর থাপ্পড় খাওয়া সেই ব্যক্তির। আসামের বরপেটা রেলস্টেশনে পাওয়া গেছে হুসেইন আহমেদ মজুমদার নামে সেই ব্যক্তিকে।

ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, কলকাতায় যেখানে বিমানটি অবতরণ করেছিল, সেখান থেকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার দূরে এবং শিলচর, যেখানে তার যাওয়ার কথা ছিল,সেখান থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে তাকে পাওয়া গেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় তার বাড়ি ফেরার কথা ছিল বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। জানা গেছে, ৩২ বছর বয়সী হুসেইন আহমেদ মজুমদার আসামের কাছাড় জেলার বাসিন্দা। শিলচর এই জেলার সদর শহর। বৃহস্পতিবার তিনি মুম্বাই থেকে কলকাতা যাওয়ার জন্য একটি ফ্লাইটে ওঠেন। পরদিন সেখান থেকে শিলচর যাওয়ার জন্য আরেকটি ফ্লাইট ধরার কথা ছিল তার।

মুম্বাই থেকে ইন্ডিগো বিমানের ফ্লাইট ৬ই-১৩৮ এ উঠে ছিলেন হুসেইন। কিন্তু হঠাৎ মাঝ–আকাশে আতঙ্কজনিত মানসিক বিপর্যয়ের (প্যানিক অ্যাটাকের) শিকার হন তিনি। হঠাৎ ভয় পাওয়া এবং শারীরিক প্রতিক্রিয়া থেকে প্যানিক অ্যাটাক বোঝা যায়।

ঘটনার সময় বিমানের দুই কেবিন ক্রু হুসেইনকে সাহায্য করছিলেন। তাকে যখন বিমানের মধ্যবর্তী করিডোর দিয়ে নিচে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেসময় তার এক সহযাত্রী হাফিজুল রহমান তাকে চড় মারেন।

অন্য একজন যাত্রী এ ঘটনার ভিডিও মোবাইলে ধারণ করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, কেবিন ক্রুরা ওই যাত্রীকে শান্ত থাকতে বলেন। অন্য একজন যাত্রী প্রতিবাদ করে আক্রমণকারী ব্যক্তিকে বলছেন, ‘আপনি কেন তাকে মারলেন।’

বিমানটি কলকাতায় পৌঁছানোর পর হুসাইনকে আটক করা হয় এবং পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তবে পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর হুসেইনও বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে কাজ করেন হুসেইন। এর আগেও বহুবার এই রুটে ভ্রমণ করেছেন তিনি।

তার পরিবার শুক্রবার তাকে নিতে শিলচর বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়।এদিকে হুসেইন শিলচরে না পৌঁছানোয় পরিবারের লোকজন চিন্তিত হয়ে পড়েন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তারা জানান, হুসেইন বাড়িতে আসেননি, ফোনও করেননি।

তার বাবা আবদুল মান্নান মজুমদার বলেন, ভাইরাল ভিডিওটি দেখার পর তারা হুসেইনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

খুঁজে না পেয়ে হুসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করা হয়। পরে তদন্তে জানা যায়, মজুমদার শুক্রবার শিলচরগামী ফ্লাইটে ওঠেননি এবং শনিবারও কলকাতা বিমানবন্দর থেকে কোনও ফ্লাইটে ওঠেননি। এরপর পুলিশ খবর পায় যে তিনি বরপেটা রেলস্টেশনে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। একজন কর্মকর্তা জানান,তাকে অসুস্থ দেখাচ্ছিল। বর্তমানে তাকে বাড়িতে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে ইন্ডিগো জানিয়েছে, হুসেইনকে থাপ্পড় মারা হাফিজুর রহমানকে ইন্ডিগোর সবধরনের বিমান পরিষেবা থেকে নিষিদ্ধ করেছে তারা।

ইন্ডিগো এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমাদের গ্রাহক এবং ক্রুদের নিরাপত্তা এবং সুস্থতা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বিমানে এই ধরনের অবাধ্য আচরণ নিরুৎসাহিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই নিয়ম অনুযায়ী আক্রমণকারী ব্যক্তির ইন্ডিগোর সব ফ্লাইটে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’