আইএমএফ চলতি মাসে একটি প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলেছে, ক্রিপ্টোর ওপর কার্যকরী নিয়ন্ত্রণ রাখতে বিস্তৃত আইনি ভিত্তির প্রয়োজন, যার আওতায় থাকবে ব্যক্তিগত ও আর্থিক আইনের বিভিন্ন দিক।
সংস্থাটির দাবি, গত বছর ক্রিপ্টো ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম এফটিএক্স ও স্টেবলকয়েন টেরা লুনার ব্যর্থতার পর ডিজিটাল মুদ্রায় বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে ও এই অর্থের অপব্যবহার রোধে স্পষ্ট নীতি প্রয়োজন।
আইএমএফের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক শিল্প চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, বিনিয়োগকারীদের আশাবাদ পর্যায়ক্রমে পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে। চলতি বছর ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েনের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হওয়া থেকেই বোঝা যাচ্ছে বিনিয়োগকারীরা ডিজিটাল পেমেন্টের দিকে ঝুঁকছেন। ফলে, শক্তিশালী সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকলে জালিয়াতি ও অসদাচরণের ঝুঁকি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশিত রিটার্নে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।’
প্রকাশিত প্রতিবেদনে আইএমএফ উল্লেখ করেছে, নীতিনির্ধারক গ্রাহকদের সুরক্ষা ও আর্থিক অখণ্ডতা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন। এক্ষেত্রে ক্রিপ্টোর বিস্তৃত প্রভাবগুলি বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ।
এই ধরনের সম্পদ, বিশেষ করে হার্ড কারেন্সির স্টেবলকয়েনগুলো ভবিষ্যতে যেকোনো দেশের সরকারী মুদ্রাগুলোকে প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম। যে সব দেশে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে আর্থিক লেনদেন করা হয়, সেই দেশগুলোর আর্থিক নীতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে এই ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবস্থা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘উঠতি বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রভাব সত্য। ক্রিপ্টোর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বাজারের অর্থনৈতিক লেনদেনে একটি বিস্তৃত, সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সমন্বিত নীতি প্রয়োজন।’
ক্রিপ্টোর ব্যবহারে আইএমএফ বেশ কিছু নিয়ম-নীতি ও দিক নির্দেশনা জারি করে দাবি করেছে, সার্বভৌম মুদ্রার প্রতিস্থাপক ক্রিপ্টো কিংবা ডিজিটাল মুদ্রার বিরুদ্ধে যেকোনো পদক্ষেপ নির্ভরযোগ্য দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য অপরিহার্য।
তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ক্রিপ্টোকারেন্সির জন্য যেসব চ্যালেঞ্জ সামনে এসেছে তার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপের জন্য স্বচ্ছ, সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সুসঙ্গত আর্থিক নীতি কাঠামোর কোনো বিকল্প নেই।’
আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নীতিনির্ধারকদের ক্রিপ্টো ব্যবহারে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ও সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ক্যাপিটাল ফ্লো সম্পর্কিত আইনগুলোতে ক্রিপ্টোকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। একই সঙ্গে ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেনে ট্যাক্স নিয়েও কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ, এফটিএক্সের পতনে গত বছর ক্রিপ্টো বাজারে ধস নামে। কোম্পানিটি দেউলিয়া হওয়ায় প্রায় ১.৪ ট্রিলিয়ন ডলারের সংকট সৃষ্টি হয়।