
গাজা যুদ্ধ অবসান নিয়ে ট্রাম্পের আশাবাদে বিস্মিত ইসরায়েলি কর্মকর্তারা

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ৩০ ২০২৫, ৭:১৯
.jpg)
নেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও ডনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সিএনএন
- 0
যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আশাবাদী বলে মন্তব্য করলেও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে এখনও হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে কোন অগ্রগতি হয়নি।
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার গাজায় আসন্ন সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর বিষয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দেন। ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে শীঘ্রই একটি যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি তিনি বলেন,’ অ্যামেরিকা গাজা নিয়ে কাজ করছে এবং যুদ্ধ বন্ধে অত্যন্ত গুরুত্ব নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তবে গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনার সাথে যুক্ত ঊর্ধ্বতন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা ট্রাম্পের এই ঘোষণা নিয়ে বিভ্রান্তি প্রকাশ করেছেন।
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি সংবাদপত্র ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ডনাল্ড ট্রাম্পের আশাবাদ নিয়ে কোন ইতিবাচক অগ্রগতি সম্পর্কে তাদের অবহিত করা হয়নি ।
এছাড়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধ অবসানে লক্ষ্যে হামাস বা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু কেউই কোন ধরণের নমনীয়তা বা ছাড় দেয়ার জন্য প্রস্তুত নয়।
এরিমধ্যে রোববার ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া একটি পোস্টে, ইসরায়েল এবং হামাস উভয়কেই গাজার বিষয়ে চুক্তি করার আহ্বান জানিয়েছেন পাশাপাশি অবশিষ্ট বন্দীদের ফিরিয়ে দেয়ারও আহ্বান জানান।
তবে, সাম্প্রতিক ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, ট্রাম্পের এমন আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি মূলত প্রকৃত অগ্রগতি প্রতিফলিত করার পরিবর্তে, রাজনৈতিক বিজয় অর্জনের উদ্দেশ্যে তার ব্যক্তিগত ইচ্ছা হতে পারে।
ইয়েদিওথ আহরোনোথের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন যে, পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। তারা দাবি করেছেন যে, কাতার ও ইজিপ্টের সাথে আলোচনা সত্ত্বেও কোন সাফল্য আসেনি।
এছাড়া অ্যামেরিকার রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ শীঘ্রই দেশটিতে সফর করবেন এমন খবর অস্বীকার করেছেন কর্মকর্তারা।
বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে শনিবার যুদ্ধবিরতি আলোচনা এবং গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় কিছু অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি ব্রডকাস্টিং অথ্যারিটি জানিয়েছে , আলোচনা এগিয়ে গেলেও, সরাসরি আলোচনার জন্য ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল পাঠানোর পর্যায়ে এখনও তা পৌঁছায়নি।
বলা হচ্ছে, যুদ্ধ শেষ করার প্রধান শর্ত এবং হামাসের দাবি করা নিরাপত্তা নিশ্চয়তাই মূল সমস্যা।
হোয়াইট হাউযের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজ জানিয়েছে যে, ওয়াশিংটন একটি সমাধানে পৌঁছানোর ব্যাপারে আশাবাদী, তবে ইসরায়েলের ওপর অ্যামেরিকা কতটা চাপ প্রয়োগ করতে প্রস্তুত তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এই বছরের শুরুতে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের সময় আট সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি কার্যকর ছিল। তবে সেসময় নতুন চুক্তির আলোচনার প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়।
হামাস কর্মকর্তা মাহমুদ মেরদাউই নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টির অভিযোগ এনে টেলিগ্রামে একটি পোস্টে বলেছেন যে নেতানিয়াহু একটি সীমিত চুক্তির জন্য চাপ দিচ্ছেন যা মাত্র ১০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেবে।
জবাবে, নেতানিয়াহুর মুখপাত্র ওমর দোস্ত্রি দাবি করেন যুদ্ধ শেষ করার ক্ষেত্রে হামাসই একমাত্র বাধা। তবে তিনি সরাসরি মারদাওয়ের অভিযোগের বিষয়ে কিছু বলেননি।
ইসরায়েল গাজা থেকে সম্পূর্ণ সামরিক প্রত্যাহারের জন্য হামাসের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে যে যুদ্ধ কেবল তখনই শেষ হবে যদি হামাস নিরস্ত্র হয়ে আত্মসমর্পণ করে এবং তাদের নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়। তবে এই শর্তগুলো হামাস দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।