বেঁচে যাওয়া কয়েক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে বিবিসি জানায়, তারা অন্তত ৮০টি মরদেহ পেয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বেশি বলে আশংকা করা হচ্ছে।
দেশটির উত্তর-পশ্চিম স্যাগাইং অঞ্চলে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা দেশটির সেনাবাহিনী বিরোধীদের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে। সামরিক জান্তার মুখপাত্র জেনারেল জাও মিন টুন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা বিমান হামলাটি চালিয়েছি।
‘আমরা পাযিগিতে এ হামলা চালাতে বাধ্য হয়েছি। কারণ গ্রামটি তাদের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য একটি অফিস উদ্বোধন করছিল।’
সামরিক শাসনের বিরোধিতা করা পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফএস) মিলিশিয়ারা মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই চালাচ্ছে।
হামলার শিকার গ্রামটির বাসিন্দারা সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে নিজস্ব বাহিনী গঠনসহ স্কুল ও ক্লিনিক পরিচালনা করছিলেন।
বিবিসিকে গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, একটি সামরিক বিমান সকাল ৭টার দিকে বোমা ফেলে। এরপর একটি সামরিক হেলিকপ্টারের মাধ্যমে গ্রামে ২০ মিনিট ধরে হামলা চালানো হয়।
হামলার সময়কার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মাটিতে বেশ কিছু মরদেহ পড়ে আছে, আগুন জ্বলছে কয়েকটি ভবনে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। দেশ ছাড়া হয়েছেন প্রায় ১.৪ মিলিয়ন। দেশটির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নাগরিকের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
সংঘাত পর্যবেক্ষণকারী গ্রুপ অ্যাকলেডের (আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রযেক্ট) তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারির পর্যন্ত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কমপক্ষে ৬০০টি বিমান হামলা চালিয়েছে।
সেনা অভ্যুত্থানের পরে গঠিত মিয়ানমারের নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকারের হিসাবে, সামরিক বাহিনীর হামলায় ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৫৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।
গত অক্টোবরে কাচিন রাজ্যে একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কনসার্টে বিমান বাহিনীর জেট তিনটি বোমা ফেলে। এতে কমপক্ষে ৫০ জন প্রাণ হারান।
গত মাসে মিয়ানমারের লেট ইয়েট কোন গ্রামের একটি স্কুলে বিমান হামলায় অন্তত পাঁচ শিশু নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়।
সামরিক সরকার প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং গত মার্চে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ কঠোর হাতে দমন করা হবে।