পরীক্ষায় ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়েও অসন্তুষ্ট একাদশ শ্রেণির ছাত্র গণিত শিক্ষিকার ওপর হামলা চালিয়েছেন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে থাইল্যান্ডের উথাই থানি প্রদেশের বান রাই জেলার একটি প্রাইভেট স্কুলে।
গালফ নিউজ জানায়, গত ৫ আগস্ট স্কুলের মিডটার্ম পরীক্ষায় ২০ নম্বরের মধ্যে ১৮ নম্বর পায় ঐ ছাত্র। ৯০ শতাংশ নম্বর সত্ত্বেও প্রত্যাশা অনুযায়ী নম্বর না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ঐ শিক্ষার্থী গণিত শিক্ষিকাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
ছাত্রের দাবি সব গাণিতিক সমাধান সঠিক হওয়ার পরও শিক্ষিকা তার নম্বর কেটেছেন। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, উত্তর সঠিক হলেও সমাধানের ধাপগুলো ব্যাখ্যা না করায় তাকে পূর্ণ নম্বর দেয়া হয়নি।
প্রথমে ছাত্রটি শিক্ষিকার কাছে গিয়ে তার গ্রেড নিয়ে কথা বলেছিল। তবে শিক্ষিকা তার অনুরোধে সাড়া দেননি। পরবর্তীতে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপের আশায় সে অন্যান্য শিক্ষক ও স্টাফদের সাহায্য চায়। কিন্তু স্টাফরা শিক্ষিকার সিদ্ধান্তই বহাল রাখে।
পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে ওঠে যখন ছাত্রটি আবার ক্লাসে এসে শিক্ষিকার মুখোমুখি হয় এবং ক্ষমা চাইতে বলে। কেন তাকে গ্রেডিং নিয়ম অনুযায়ী কাজ করার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে শিক্ষিকা এমন প্রশ্ন করার পরেই ছাত্রটি হিংস্র হয়ে হামলা চালায়।
কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর চোখের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এসময় কয়েকজন সাহসী শিক্ষার্থী শিক্ষিকাকে ঢেকে রাখে এবং হামলা থামানোর চেষ্টা করে। তাদের এই সাহসী পদক্ষেপ সম্ভবত আরও গুরুতর আঘাত থেকে রক্ষা পান ঐ শিক্ষিকা।
হামলার পর, থাইল্যান্ডের শিশু ও কিশোর আইনের অধীনে নাবালকের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। ছাত্রটিকে স্কুল থেকে বরখাস্ত করা হয়।
আহত শিক্ষিকা ঘটনার চারদিন পর নং চ্যাং থানায় একটি অফিসিয়াল পুলিশ রিপোর্ট দায়ের করেন।
তবে ছাত্রের বাবা-মা তাদের ছেলের কর্মকাণ্ডের জন্য শিক্ষকের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চেয়েছেন। মানসিক ও শারিরিকভাবে ভেঙে পড়া ঐ গণিতের শিক্ষিকা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে আবার শিক্ষকতায় ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
এই ঘটনাটি থাই স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের আচরণ, শিক্ষাগত চাপ এবং সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে শান্তভাবে সমস্যা মেটানো যায় এবং রাগ নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা স্কুলগুলোতে শেখানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।