পোল্যান্ডের আকাশসীমায় রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনাকে একটি সম্ভাব্য দুর্ঘটনা হিসেবে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প, তবে পুরো পরিস্থিতি নিয়ে খুশি নন বলে জানান তিনি।
মেরিল্যান্ডের জয়েন্ট বেইজ অ্যান্ড্রুতে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ট্রাম্প।
অন্যদিকে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডনাল্ড টুস্ক ঘটনাটিকে এড়িয়ে না গিয়ে গুরুত্ব সহকারে নিতে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে পোল্যান্ডের আকাশপথ সুরক্ষায় সহায়তার জন্য রাফাল যুদ্ধবিমান পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, তবে ইউরোপের দেশগুলোর অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া।
পোল্যান্ডের আকাশসীমায় বুধবার রাশিয়ার অসংখ্য ড্রোন ঢুকে পড়া নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ইউরোপের নেতারা।
ঘটনাটিকে রাশিয়ার ইচ্ছাকৃত উসকানি বলে আখ্যায়িত করেন তারা, তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে এ নিয়ে তেমন কড়া প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়নি।
মেরিল্যান্ডের জয়েন্ট বেইজ অ্যান্ড্রুতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রুশ ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনা একটি ভুল হতে পারে।
ওই সময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে পুরো পরিস্থিতি নিয়ে নিজের অসন্তোষের কথা জানান তিনি। শিগগিরই এর সমাপ্তির বিষয়েও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রেসিডেন্ট।
অন্যদিকে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারসতে সংবাদ সম্মেলনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডনাল্ড টুস্ক বলেন, রাশিয়া উসকানি দিতেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে তারা পুরোপুরি নিশ্চিত।
কিছুই ঘটেনি এমন ভান করে বিষয়টি এড়িয়ে না যেতেও মিত্রদের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু মনেই করি না যে, এটা রাশিয়ার উসকানি; আমরা এটা নিশ্চিতভাবে জানি। আমি এটাও বুঝি যে, যারা রাশিয়ার সঙ্গে স্বাভাবিক, স্থিতিশীল বা বোঝাপড়ার নীতি চায়, তাদের জন্য এই পরিস্থিতি খুবই অস্বস্তিকর, তবে ১০ সেপ্টেম্বর রাতে পোল্যান্ডের আকাশে যা ঘটেছে, আমি আশা করি আমাদের কোনো মিত্রই এমন ভান করবে না যে, কিছুই ঘটেনি।’
টুস্ক আরও বলেন, অ্যামেরিকা পোল্যান্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।
তিনি নিশ্চিত অ্যামেরিকার কোনো নির্দিষ্ট রাজনীতিকের মনোভাব যেমনই হোক না কেন, পোল্যান্ড তার নিরাপত্তার বিষয়ে অ্যামেরিকার ওপর নির্ভর করতে পারে।
টুস্ক জানান, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারসহ ইউরোপের বেশ কিছু নেতা পোল্যান্ডকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছেন, পোল্যান্ডের আকাশপথ রক্ষায় সহায়তার জন্য চলতি সপ্তাহেই দেশটিতে তিনটি রাফাল যুদ্ধবিমান পাঠাবে ফ্রান্স।
তিনি বলেন, ইউরোপের নিরাপত্তা তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান ভয়ভীতি প্রদর্শনের কাছে নতি স্বীকার করবেন না তারা।
ক্রেমলিনের অবস্থান
রাশিয়াকে অভিযুক্ত করে পোল্যান্ড এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশের বিবৃতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে ক্রেমলিন।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, রাশিয়াকে নিয়ে তাদের এমন অভিযোগ নতুন কিছু নয়। এ বিষয়ে মস্কো আর কোনো মন্তব্য করবে না বলে জানান তিনি।