ফোরডোর বাইরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন ভেতরের অবস্থা অজানা

টিবিএন ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৩ ২০২৫, ৮:৪১ হালনাগাদ: ডিসেম্বর ৯ ২০২৫, ১৪:৫৫

স্যাটেলাইটে হামলার আগে ও পরের চিত্র। ছবি: এনডিটিভি

স্যাটেলাইটে হামলার আগে ও পরের চিত্র। ছবি: এনডিটিভি

  • 0

অ্যামেরিকা ইরানের ফোরডো, নাতানজ এবং ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, যার ফলে ইরানের সাথে নতুন করে উত্তেজনা বেড়ে যায় অ্যামেরিকার।

রোববার ভোরে ইরানে হামলা চালায় অ্যামেরিকা। অপারেশন মিডনাইট হ্যামার নামে এই হামলায় অংশ নেয় অ্যামেরিকার ১২৫ টি বিমান। যার মধ্যে সাতটি বি-টু বোমারু বিমানও রয়েছে। প্রতিটি বি-টু বোমারু বিমান দুটি করে বাংকার বিধ্বংসী বোমা বহনে সক্ষম। প্রতিটি বোমার ওজন ৩০ হাজার পাউন্ড।

প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া এক বার্তায় দাবি করেন অ্যামেরিকার হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে। পাশাপাশি অ্যামেরিকার এই হামলার লক্ষ্য সফল হয়েছে বলেও দাবি করেন ট্রাম্প।

হামলায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে ইরানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন তথ্য এখনও প্রকাশ করা না হয়নি। তবে আল জাজিরার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে স্যাটেলাইট হতে পাওয়া ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে হামলায় দেশটির ফোরডো পারমাণবিক স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

আল জাজিরার ফ্যাক্ট-চেকিং এজেন্সি সানাদের মতে, তিনটি স্থানে ক্ষতির প্রমাণ পাওয়া গেছে যার মধ্যে রয়েছে, বাঙ্কার-বিধ্বংসী বোমার ফলে সৃষ্ট দুটি গর্ত এবং পারমাণবিক চুল্লিকে রক্ষা করার জন্য তৈরি একটি ক্ষতিগ্রস্ত বিমান প্রতিরক্ষা সাইট।

স্যাটেলাইট ছবিতে ছয়টি গর্ত দেখা যাচ্ছে যেখানে বাঙ্কার-বিধ্বংসী বোমাগুলো পাহাড়ের ভেতরে ঢুকেছে বলে মনে হচ্ছে, এবং তারপর ধুলোয় ঢাকা দেখাচ্ছে।

তবে ভূগর্ভস্থ ধ্বংসের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। সিএনএ কর্পোরেশনের সহযোগী গবেষক ও স্যাটেলাইট ছবি বিশেষজ্ঞ ডেকার এভলেথ বলেন, ‘শত শত সেন্ট্রিফিউজ ধারণকারী হলটি এত গভীরে চাপা পড়ে আছে যে আমরা স্যাটেলাইট চিত্রের উপর ভিত্তি করে ক্ষতির মাত্রা মূল্যায়ন করতে পারছি না।’

বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলেছেন যে, অ্যামেরিকার হামলার আগে ইরান সম্ভবত ফোরডো থেকে প্রায় অস্ত্র-গ্রেডের উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের একটি মজুদ সরিয়ে নিয়েছে এবং অ্যামেরিকা, ইসরায়েল এবং জাতিসংঘের পারমাণবিক পরিদর্শকদের অজানা স্থানে অন্যান্য পারমাণবিক উপাদান লুকিয়ে রাখতে পারে।

ম্যাক্সার টেকনোলজিসের স্যাটেলাইট ছবিতে বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার ফোরডোতে অস্বাভাবিক কার্যকলাপ দেখানোর বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন। যেখানে স্থাপনার প্রবেশপথের বাইরে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন অপেক্ষা করছে। ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে যে অ্যামেরিকার হামলার আগে অস্ত্র-গ্রেড ৬০ শতাংশ উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের বেশিরভাগই একটি অজ্ঞাত স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

তেহরানের প্রায় ৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত ইরানের ফোরডো জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রটি বিমান হামলা এবং বাঙ্কার ধ্বংসকারী আক্রমণ থেকে বাঁচতে পাহাড়ের গভীরে, ভূগর্ভস্থ ৮০-৯০ মিটার পর্যন্ত জুড়ে নির্মিত হয়েছে বলে জানা গেছে।