
অলৌকিকভাবে বেঁচে থাকার রেকর্ড গড়েছেন যারা

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৪ ২০২৫, ৭:৪২ হালনাগাদ: ডিসেম্বর ৪ ২০২৫, ৭:৩৫
.jpg)
অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া ফ্রানে সেলাক। ছবি: এনডিটিভি
- 0
৩০০ ফুট নিচে পড়ে গাড়ি বিস্ফোরিত হলেও গাছের ডালে ঝুলে থেকে বেঁচে যান বিশ্বের সর্বকালের সেরা ভাগ্যবান হিসেবে খ্যাত এই ব্যক্তি।
কিছু মানুষ এমন আছেন, যাদের নাম ইতিহাসে লেখা হয় না। কারণ তারা ইতিহাসের নিয়ম ভেঙে বেঁচে থাকে। তাদের গল্প হয় গল্পের মতো, তবু প্রতিটি ঘটনা একদম সত্য। তারা কখনো হিরো ছিলেন না, কখনো যুদ্ধ করেননি, তবে তাদের একটাই অস্ত্র ছিল—এক অসম্ভব ভাগ্য। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তাদের ভাগ্যের নীরব লড়াই আজও বিশ্বের কাছে এক অদ্ভুত রহস্য।
বিশ্বের সর্বকালের ভাগ্যবান দুই অসাধারণ মানুষের কথা উঠলেই প্রথমেই নাম আসবে ফ্রানে সেলাকের।
ফ্রানে সেলাক ছিলেন একজন সাধারণ সঙ্গীত শিক্ষক। কিন্তু তার জীবন গল্প যেন কোনো কল্পকাহিনি। সাতবার মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন তিনি! শুরু হয় ১৯৬২ সালে, যখন একটি ট্রেনে চড়ে তিনি বরফে ঢাকা নদীতে পড়ে যান। ১৭ জন নিহত হলেও ফ্রানে বেঁচে যান। পরের বছর বিমান ভ্রমণের সময় আকাশ থেকে ছিটকে পড়েন, নিচে ছিল এক খড়ের স্তূপ, ১৯ জন মারা গেলেও ফ্রানে প্রাণে বেঁচে যান।
১৯৬৬ সালে একটি বাস নদীতে পড়ে চারজন ডুবে গেলেও ফ্রানে সাঁতার কেটে বেঁচে যান। এরপর ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালে তার গাড়িতে আগুন লাগলেও প্রাণে বেঁচে যান। ১৯৯৫ সালে বাসের ধাক্কায় সামান্য আহত হন। এক বছর পর পাহাড় থেকে ৩০০ ফুট নিচে পড়ে গাড়ি বিস্ফোরিত হলেও গাছের ডালে ঝুলে থেকে বেঁচে যান। ২০০৩ সালে ৭৩ বছর বয়সে একটি লটারি জিতে প্রায় নয়শো হাজার ইউরো পান। ফ্রানের জীবন এক অবিশ্বাস্য ভাগ্যের মায়াজালে বাঁধা।
ভায়োলেট জোসেফ একজন নার্স, যিনি বিশ্বের তিনটি ভয়ঙ্কর জাহাজ দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরেছেন। ১৯১২ সালের রাতে টাইটানিকের ডেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। বরফখণ্ডের ধাক্কায় জাহাজ কেঁপে উঠলে যাত্রীদের শান্ত করার চেষ্টা করলেন। “দ্রুত লাইফবোটে উঠুন, ভয় পাবেন না,” বারবার বললেন। সেই রাতে বেঁচে গেলেও এটি তার প্রথম মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা নয়।
১৯১৫ সালে ব্রিটানিক যুদ্ধজাহাজে নার্স হিসেবে কাজ করার সময় গোলাবর্ষণ ও আগুনের মাঝেও বেঁচে যান তিনি। ১৯১১ সালে অলিম্পিক জাহাজের ঝড়ঝাপটার রাতে বরফখণ্ডের ধাক্কায় জাহাজ ডুবে যেতে থাকে, তবু ভায়োলেট ভয় পাননি। যাত্রীদের শান্ত রেখে লাইফবোটে উঠতে সাহায্য করেন এবং আবারও বেঁচে যান।
ফ্রানে সেলাক ও ভায়োলেট জোসেফের জীবন শেখায়, মৃত্যুর সীমানায় দাঁড়িয়ে বেঁচে থাকা মানে শুধু ভাগ্য নয়, অবিশ্বাস্য সাহস, অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও এক জীবনের লড়াই। তাদের গল্প মনে করিয়ে দেয় জীবনের পথে যত ঝুঁকি আসুক, লড়াই কখনো থামানো যাবে না। কারণ ভাগ্যের খেলায় যাদের নাম ইতিহাসে লেখা হয় না, তারা হয়তো প্রকৃত নায়ক।