গ্র্যামিজয়ী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিল্পী ডিউক ফকির

নাহিদ আল-কাদরী, টিবিএন ডেস্ক

মার্চ ২৫ ২০২৩, ২০:২২

ডিউক ফকির। ছবি: সংগৃহীত

ডিউক ফকির। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

ফকির ১৯৫৩ সালে স্কুল বন্ধু লিভাই স্টাবস, রেনাল্ডো ‘ওবি’ বেনসন ও লরেন্স পেইটনকে নিয়ে গঠন করেন কোয়ার্টেট ব্যান্ড ‘ফোর টপস’।

কোয়ার্টেট বা চারজন মিলে পারফর্ম করা ব্যান্ড ইতিহাসের অন্যতম নায়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সংগীতশিল্পী ডিউক ফকির। তিনি অ্যামেরিকার জনপ্রিয় মিউজিক্যাল ব্যান্ড ‘ফোর টপস’ -এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ভোকাল।

এই সংগীতশিল্পী ৮৮ বছর বয়সেও কাজ করছেন গান নিয়ে। অর্জন করেছেন দেশ-বিদেশের অসংখ্য সম্মাননা।

ডিউক ফকিরের পুরো নাম আব্দুল করিম ফকির। জন্ম ১৯৩৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর; অ্যামেরিকার মিশিগান স্টেইটের ডিট্রইট শহরে। বাবা ছিলেন একজন কারখানা শ্রমিক, যিনি জীবিকার তাগিদে বাংলাদেশ থেকে অ্যামেরিকায় পাড়ি জমান।

ফকির ১৯৫৩ সালে স্কুল বন্ধু লিভাই স্টাবস, রেনাল্ডো ‘ওবি’ বেনসন ও লরেন্স পেইটনকে নিয়ে গঠন করেন কোয়ার্টেট ব্যান্ড ‘ফোর টপস’। সোউল মিউজিক, রিদম অ্যান্ড ব্লুয, কান্ট্রি, ডিস্কো, প্যারোডি, অ্যাডাল্ট কনটেমপোরারি, পপ, জ্যায, শো টিউনস ও ডু-উপ জনরার গান করা এই ব্যান্ডটি টানা ১০ বছর ধরে সক্রিয় ছিল।

১৯৬৩ সালে ফোর টপস যুক্ত হয় ব্যারি গোডি জুনিয়রের মোটাউন রেকর্ড লেবেলের সঙ্গে। এরপর থেকে তাদের গানগুলো তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। তাদের করা বিখ্যাত ও জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘আই ক্যান্ট হেল্প মাইসেলফ-সুগার পাই হানি বাঞ্চ’, ‘রিচ আউট আই'ল বি দেয়ার’ এবং ‘এইন্ট নো উইমেন’।

এত জনপ্রিয়তার পরেও লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে জন্মভূমি ডিট্রইটে ফেরেন ডিউক ফকির। আবার গঠন করেন ব্যান্ড ‘ফোর টপস’। ফেরার কারণ হিসেবে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ডিট্রইট তার জন্মভূমি। বন্ধুদের ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাওয়াটা তার জন্য কষ্টের। এখনও বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত গলফ খেলেন। তাদের মধ্যে এ বয়সে একমাত্র তিনিই কাজ করে চলেছেন।

ফোর টপসের সদস্য হিসেবে ১৯৯০ এর রক অ্যান্ড রোল হল অব ফেমে জায়গা করে নেন ফকির। ১৯৯৭ সালে তিনি হলিউড ওয়াক অব ফেমেও স্থান পান। ১৯৯৮ সালে জায়গা পান গ্র্যামি হল অব ফেমে আর ভোকাল গ্রুপ হল অব ফেমে ১৯৯৯ সালে।

২০০৯ সালে ডিউক ফকির গ্র্যামি লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পান। বিলবোর্ড ম্যাগাজিনের সেরা ১০০ আর্টিস্টের তালিকাতেও জায়গা করে নেন এই শিল্পী। ২০০৪ সালে ‘রোলিং স্টোন’ তার গঠন করা ব্যান্ডকে ‘হান্ড্রেড গ্রেটেস্ট আর্টিস্টস অব অল টাইম’ এর তালিকায় ৭৯ তম স্থান দেয়।

ব্যক্তিগত জীবনে ফকির বিয়ে করেন পাইপারকে। তাদের সন্তান সাত জন, নাতি নাতনি সাত জন, আর আছে এক গ্রেট গ্র্যান্ড চাইল্ড। ফকিরের মিউজিক্যল আর্টিস্ট হয়ে ওঠার পেছনে ডিট্রইটের অবদান অনেক। পরিবার, বন্ধুবান্ধব নিয়ে চার্চের দলগত সংগীত ফকিরকে একজন পরিপূর্ণ সংগীতশিল্পী হিসেবে গড়ে উঠতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

ফোর টপসের সফলতার পেছনে বিশ্বের প্রথম রক ব্যান্ড ‘বিটেলস’ - এর ভূমিকাও স্বীকার করেন ডিউক ফকির। বৃটেইনের এ ব্যান্ডটির ম্যানেজার ব্রায়ান অ্যাপস্টেইন ফোর টপসকে অ্যামেরিকান এক মিউজিক্যাল ট্যুরেও নিয়ে গিয়েছিলেন। জনপ্রিয় ব্যান্ড হিসেবে গড়ে ওঠার সাহস জুগিয়েছেন।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন