
কী বলে এআই
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কবে বন্ধ হতে পারে?

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৭ ২০২৫, ১৬:০৪

ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলে ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাশিয়ার সেনাদের লক্ষ্য করে গোলা ছোড়েন ইউক্রেনের এক সেনা। ছবি: রয়টার্স
- 0
ইউক্রেন সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়ার অস্ত্রাগারে আঘাত হানার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি সাধন করেছে, যার মধ্যে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র মজুতের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে, তবে রাশিয়া এখনও তার সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
প্রশ্ন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কবে বন্ধ হতে পারে?
এআইয়ের (গ্রোক) উত্তর: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কবে শেষ হতে পারে, তা নির্ভর করছে ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং উভয় পক্ষের সামরিক ও রাজনৈতিক লক্ষ্যের উপর। বর্তমানে (মে ২০২৫) এই যুদ্ধ ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। নিচে সাম্প্রতিক তথ্যের ভিত্তিতে এই যুদ্ধের সমাপ্তির সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করা হলো।
বর্তমান পরিস্থিতি
যুদ্ধের অবস্থা: ইউক্রেন সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়ার অস্ত্রাগারে আঘাত হানার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি সাধন করেছে, যার মধ্যে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র মজুতের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে, তবে রাশিয়া এখনও তার সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধের প্রথম দিকের তুলনায় ইউক্রেন এখন কিছুটা দুর্বল অবস্থায় আছে, কারণ দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ এবং সম্পদের অভাব তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে।
রাশিয়ার পক্ষে সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে, তবে তারা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে কিছু অগ্রগতি অর্জন করেছে।
কূটনৈতিক প্রচেষ্টা: যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, রাশিয়া ও ইউক্রেন শীঘ্রই যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা শুরু করবে। তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে প্যারিসে বৈঠক করেছেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে ফোনে দুই ঘণ্টা আলোচনা করেছেন।
ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, ক্ষমতায় আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সংঘাতের অবসান ঘটাবেন। তবে, বিশ্লেষকরা মনে করেন যে এটি এত দ্রুত সম্ভব নয়, কারণ সমস্যাটি দশকব্যাপী জটিলতার ফল।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তুরস্কে পুতিনের সাথে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন, তবে পুতিন যুদ্ধবিরতি বা আলোচনায় আগ্রহী নন বলে জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন।
উভয় পক্ষের অবস্থান
ইউক্রেন: কিয়েভ তাদের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানা পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে অটল। তারা ক্রিমিয়া এবং পূর্বাঞ্চলের (ডনবাস) নিয়ন্ত্রণ হারাতে রাজি নয়।
রাশিয়া: পুতিন ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিরোধিতা করছেন এবং ক্রিমিয়া ও পূর্বাঞ্চলের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চান। তিনি যুদ্ধবিরতির জন্য এমন শর্ত দিয়েছেন যা ইউক্রেনের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
অন্যান্য প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সমর্থন ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে ট্রাম্পের নীতি এই সমর্থন কমিয়ে দিতে পারে, যা যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি বদলে দিতে পারে।
ইসরায়েল-হামাস সংঘাত এবং মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ বিভক্ত করছে, যা ইউক্রেনের জন্য সহায়তার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা
অল্প সময়ের মধ্যে (২০২৫-২০২৬): ট্রাম্পের সক্রিয় হস্তক্ষেপ এবং যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ সৃষ্টি করার কারণে ২০২৫ সালে আলোচনার গতি বাড়তে পারে। তবে, উভয় পক্ষের কঠোর অবস্থান এবং ইউক্রেনের ভূখণ্ড হারানোর অনিচ্ছা দ্রুত সমাধানের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধ সহসা শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই, কারণ শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য উল্লেখযোগ্য উদ্যোগের অভাব রয়েছে।
মধ্যমেয়াদি (২০২৬-২০৩০): যদি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশ রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করে এবং ইউক্রেনকে অব্যাহত সামরিক সহায়তা দেয়, তবে রাশিয়া অর্থনৈতিক ও সামরিক চাপে আলোচনায় বসতে বাধ্য হতে পারে।
তবে রাশিয়ার সামরিক অভিযান এখনও টিকিয়ে রাখার ক্ষমতা রয়েছে, এবং পুতিনের বর্তমান অবস্থান যুদ্ধবিরতির জন্য অনুকূল নয়।
দীর্ঘমেয়াদি (২০৩০-এর পর): যদি উভয় পক্ষের সম্পদ এবং সামরিক ক্ষমতা ক্ষয় হয়, তবে একটি স্থবির অবস্থা (stalemate) সৃষ্টি হতে পারে, যা আলোচনার পথ প্রশস্ত করতে পারে।
অন্যদিকে, বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে সংঘাত (যেমন মধ্যপ্রাচ্য বা চীন-তাইওয়ান) বৃদ্ধি পেলে এই যুদ্ধের গুরুত্ব কমে যেতে পারে, যা একটি সমঝোতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
সম্ভাব্য ফলাফল
যুদ্ধবিরতি বা শান্তি চুক্তি: ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক চাপের ফলে একটি যুদ্ধবিরতি সম্ভব, তবে ইউক্রেনের ভূখণ্ড হারানোর বিষয়টি চুক্তির পথে বড় বাধা।
স্থবির অবস্থা: যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হয়ে একটি ‘ফ্রোজেন কনফ্লিক্ট’-এ রূপ নিতে পারে, যেখানে উভয় পক্ষ সক্রিয় যুদ্ধ বন্ধ করলেও কোনো স্থায়ী সমাধান হয় না।
অন্যান্য সংঘাতের প্রভাব: মধ্যপ্রাচ্য বা অন্যান্য অঞ্চলে নতুন সংঘাত এই যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি বদলে দিতে পারে।
উপসংহার
বর্তমানে (মে ২০২৫) রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। ট্রাম্পের নেতৃত্বে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ২০২৫-২০২৬ সালে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা বাড়িয়েছে, তবে উভয় পক্ষের কঠোর অবস্থান এবং জটিল ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দ্রুত সমাধানের সম্ভাবনা কম। মধ্যমেয়াদে (২০২৬-২০৩০) অর্থনৈতিক ও সামরিক চাপ একটি সমঝোতার পথ তৈরি করতে পারে, তবে এটি অনিশ্চিত।
নোট: লেখাটিতে বানান ও যতিচিহ্নে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। এআইয়ের উত্তরে কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।