পাল্টাপাল্টি হামলায় ইজরায়েল-লেবাননে উত্তেজনা

টিবিএন ডেস্ক

এপ্রিল ৭ ২০২৩, ১৭:৫৩

ইজরায়েলের বিমান হামলার পর গাজায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। ছবি: এএফপি

ইজরায়েলের বিমান হামলার পর গাজায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। ছবি: এএফপি

  • 0

দক্ষিণ লেবানন ও গাজায় প্যাল্টেস্টিনিয়ান চরমপন্থী সংগঠন হামাসের ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলি সেনাবাহিনী।

গাজা থেকে হামাসও এরপর কয়েক ডজন রকেট হামলা চালায়।

বিবিসির প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।

ইজরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, লেবানন থেকে হামাসের চালানো রকেট হামলার জবাবে এই হামলা করা হয়েছে। 

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, তার অঞ্চলে এই সামরিক অভিযান পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলেছে।

এসব কিছুর শুরু হয় গত বুধবারের আল আকসা মসজিদে তুলকালাম কান্ডের পর। সেদিন মসজিদে অভিযান চালায় ইজরায়েলি পুলিশ। সেখানে প্যালেস্টিনিয়ান মুসল্লিদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ পরে অন্তত ৪০০ প্যালেস্টিনিয়ানকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় গোটা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। লেবানন থেকে পরদিন ইজরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ছোড়া হয় ৩৪টি রকেট।

এতে উত্তরাঞ্চলের শ্রাপনেইল এলাকায় এক ব্যক্তি আহত হন দাবি করেছে সেদেশের সংবাদমাধ্যম।

ওই রকেট হামলা ক্ষতিগ্রস্থ হয় দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী শ্লোমি শহরের রাস্তা, একটি ভবন ও কিছু গাড়ি। কাছের ফাসুটা গ্রামেও কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়।

 

 

সেদিন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছিলেন, শত্রুপক্ষের কাছ থেকে এই হামলার চড়া মাশুল আদায় করা হবে।

ইজলায়েল এই রকেট হামলার জন্য হামাসকে দায়ি করলেও সংগঠনটি এর দায় নেয়নি। 

ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছে, এই হামলার পেছনে হামাসের হাত আছে। আর লেবানিজ চরমপন্থী সংগঠন হেজবুল্লাহ এই হামলার বিষয়ে অবগত ছিল। হামলায় ইরানের ইন্ধন আছে বলে সন্দেহ করছে সেনাবাহিনী।

এর আগে আল আকসা মসজিদে ইজরায়েলি পুলিশের অভিযান ও ধরপাকড়ের পর হেজবুল্লাহ একটি বিবৃতি দিয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, মসজিদ ও সেখানে প্রার্থনাকারীদের সুরক্ষায় ও হামলাকারীদের ঠেকাতে প্যালেস্টিনিয়ানদের নেয়া সব ধরনের পদক্ষেপকে সংগঠনটি সমর্থন দিবে।

হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহও সেদিন বলেছেন, ‘ইজরায়েলের এই আগ্রাসনের পর প্যালেস্টিনিয়ানরা নির্বিকার থাকতে পারবে না।’

এসব ঘটনার পর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘটে ইজরায়েল থেকে লেবাননে বিমান হামলার ঘটনা।

লেবাননের উপকূলীয় শহর টায়ার থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে রাশিদিয়েহ প্যালেস্টিনিয়ান রিফিউজি ক্যাম্পে দুই থেকে তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে।

লেবানিজ সংবাদমাধ্যম জানায়, ওই এলাকা থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে আল কুলায়লা গ্রামে আরও কিছু বিস্ফোরণ হয়। এতে সেখানকার একটি ছোট্ট সেতু উড়ে যায়।

 

 

এরপর গাজায় হামাসের অন্তত ১০টি ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়।

ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস- আইডিএফ টুইট করে জানায়, তাদের যুদ্ধবিমান থেকে লেবাননের চরমপন্থী ঘাঁটিগুলোতে হামলা করা হয়েছে।

এর মধ্যে কয়েকটি অস্ত্র তৈরির কারখানা ও সুরঙ্গপথ আছে বলে দাবি করেছে বাহিনীটি।

টুইটে বলা হয়, ‘লেবানন থেকে ইজরায়েলে হামলা চালিয়ে সেদেশের ওপর দায় চাপিয়ে জঙ্গি সংগঠন হামাস পার পাবে না। আইডিএফ তা কোনোভাবেই হতে দিবে না।’

এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, টায়ার শহরে ইহুদিরা নির্লজ্জ আগ্রাসন চালিয়েছে।

এদিকে ইজরায়েল বাহিনীর হামলার পরপরই গাজা থেকে অন্তত ৪৪টি রকেট ছোড়া হয়েছে বলে দাবি করেছে ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো। 

দেশটির আয়রন ডোম ডিফেন্স সিস্টেমের কারণে বেশিরভাগ রকেটই বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে একটি রকেট ইজরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের স্ডেরোট শহরের একটি বাড়িতে গিয়ে পড়েছে।

হামলার ঘটনাগুলোতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন