
কী বলে এআই
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ কি অবশ্যম্ভাবী?

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৩০ ২০২৫, ১৭:০১

ইসরায়েল ও ইরানের পতাকার মাঝে প্রশ্নবোধক চিহ্ন। ছবি: জেআইএসএস
- 0
ইরান হিজবুল্লাহ এবং হামাসের মতো গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে লড়াই করেছে। আর ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করতে এবং এর প্রভাব কমাতে বিভিন্ন অভিযান চালিয়েছে।
প্রশ্ন: ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ কি অবশ্যম্ভাবী?
এআইয়ের (গ্রোক) উত্তর: ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী কি না, তা নির্ধারণ করা জটিল এবং বহুমাত্রিক বিষয়। আজ ৩০ মে, ২০২৫ পর্যন্ত উপলব্ধ তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সাম্প্রতিক ঘটনা এবং সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করব।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে বৈরিতা দীর্ঘদিনের। ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লবের পর থেকে ইরান ইসরায়েলের প্রতি ক্রমাগত সমালোচনামূলক অবস্থান নিয়েছে। এরপর থেকে দুই দেশ প্রক্সি যুদ্ধে জড়িয়েছে, বিশেষ করে লেবানন, সিরিয়া এবং ফিলিস্তিন অঞ্চলে।
ইরান হিজবুল্লাহ এবং হামাসের মতো গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে লড়াই করেছে। আর ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করতে এবং এর প্রভাব কমাতে বিভিন্ন অভিযান চালিয়েছে।
সাম্প্রতিক উত্তেজনা
২০২৪ সালে এই বৈরিতা সরাসরি সংঘাতে রূপ নিয়েছে। ১ এপ্রিল, ২০২৪-এ ইসরায়েল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে বোমা হামলা চালায়, যাতে বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ ইরানি কর্মকর্তা নিহত হন। এর প্রতিশোধ হিসেবে ইরান ১৩ এপ্রিল ইসরায়েলের ওপর সরাসরি হামলা চালায়, যার কোডনাম ছিল ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ’। এ হামলায় ২০০টিরও বেশি ড্রোন এবং মিসাইল ব্যবহৃত হয়।
ইসরায়েলও ১৯ এপ্রিল ইরানে পাল্টা হামলা চালায়, তবে এটি সীমিত ছিল এবং উত্তেজনা কমানোর ইঙ্গিত দেয়। এরপর ১ অক্টোবর, ২০২৪-এ ইরান আবারও ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ-২’ নামে ইসরায়েলে প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা চালায়, যা হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ এবং হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে করা হয়।
ইসরায়েল এ হামলার বেশির ভাগ মিসাইল প্রতিহত করে এবং উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করে।
২০২৫ সালে এসে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। ২১ মে, ২০২৫-এ ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সিএনএনের সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছেন যে, তারা ইরানের ওপর একতরফা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং কোনো ‘খারাপ চুক্তি’ মেনে নেবে না। একই দিনে একজন উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, ইসরায়েল যদি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করে, তবে তা মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের সংঘাতের সূচনা করতে পারে।
২২ মে, ২০২৫-এর একটি পোস্টে বলা হয়, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে অপ্রচলিত যুদ্ধ বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে। ২৩ মে, ২০২৫-এ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এক্সে ভিডিও বার্তায় বলেন, ইরান ও তার প্রক্সিদের সঙ্গে ইসরায়েল সাতটি ফ্রন্টে তীব্র যুদ্ধে জড়িত।
বিশ্লেষণ: যুদ্ধ কি অবশ্যম্ভাবী?
যুদ্ধের পক্ষে যুক্তি
১. বৈরিতার তীব্রতা: দুই দেশের মধ্যে সরাসরি হামলা-পাল্টা হামলা এখন ঘন ঘন হচ্ছে। ইরানের প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর ওপর ইসরায়েলের আক্রমণ এবং ইরানের সরাসরি মিসাইল হামলা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে।
২. ইসরায়েলের আগ্রাসী অবস্থান: নেতানিয়াহু ইরানের সঙ্গে সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়ানোর চেষ্টা করছেন বলে মনে হচ্ছে, যা একটি আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ায়।
৩. পারমাণবিক উত্তেজনা: ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে হুমকি হিসেবে দেখে এবং এটি বন্ধ করতে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
৪. আন্তর্জাতিক সমর্থন ও বিভক্তি: যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ ইসরায়েলের পক্ষে আর রাশিয়া, লেবানন ইরানের পক্ষে। এই বিভক্তি সংঘাতকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
যুদ্ধের বিপক্ষে যুক্তি
১. উভয় পক্ষের সংযম: ২০২৪ সালের এপ্রিলে ইসরায়েলের পাল্টা হামলা সীমিত ছিল এবং ইরানও তখন আর পাল্টা জবাব দেয়নি। এটি দেখায় উভয় পক্ষই পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ এড়াতে চায়।
২. আন্তর্জাতিক চাপ: জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয় পক্ষকে সংযমের আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবে বলেছে, তারা ইরানের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলায় অংশ নেবে না।
৩. অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি: মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ হলে হরমুজ প্রণালি, সুয়েজ খালের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ বন্ধ হতে পারে, যা বিশ্বব্যাপী তেলের বাজারে সংকট তৈরি করবে। এ ছাড়া সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর অর্থনৈতিক পরিকল্পনা (যেমন রূপকল্প–২০৩০) ব্যাহত হবে।
৪. ইরানের কৌশলগত ধৈর্য: ইরান প্রায়ই ‘কৌশলগত প্রতিরোধ’ নীতি অনুসরণ করে, অর্থাৎ সরাসরি যুদ্ধের বদলে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের ওপর ভরসা করে।
সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ
সাধারণ ধারণা যে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। তা পুরোপুরি সঠিক নাও হতে পারে। উভয় দেশই সামরিকভাবে শক্তিশালী—গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার অনুযায়ী ইরান ১৪তম এবং ইসরায়েল ১৭তম অবস্থানে, তবে যুদ্ধের ফলাফল কেবল সামরিক শক্তির ওপর নির্ভর করে না; ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং অর্থনৈতিক প্রভাবও গুরুত্বপূর্ণ।
ইসরায়েলের আগ্রাসী অবস্থান এবং ইরানের প্রতিশোধমূলক মনোভাব সংঘাতের ঝুঁকি বাড়ালেও আন্তর্জাতিক চাপ এবং পারস্পরিক কৌশলগত সংযম এটিকে এখনও ঠেকিয়ে রাখছে।
উপসংহার
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী নয়, তবে ঝুঁকি অনেক। বর্তমানে (৩০ মে, ২০২৫) পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত এবং ইসরায়েলের সম্ভাব্য একতরফা হামলা বা ইরানের পাল্টা প্রতিক্রিয়া বড় ধরনের সংঘাতের সূত্রপাত করতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা এবং উভয় পক্ষের কৌশলগত সিদ্ধান্ত এখনও যুদ্ধ এড়াতে পারে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা এবং আন্তর্জাতিক সংবাদের ওপর নজর রাখা এখন জরুরি।
নোট: বানান ও যতি চিহ্ন বাদে এআইয়ের উত্তরের কোনো অংশে পরিবর্তন আনা হয়নি।