মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে কর্মকর্তাদের আশঙ্কা।
গভর্নর জশ গ্রিন গত ১০ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘হাওয়াই স্টেইটের ইতিহাসে সম্ভবত এটিই সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ।’
হোনোলুলুতে অবস্থিত ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসেস (এনডব্লিউএস) কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ রবার্ট বোহলিন বলেন, হাওয়াইয়ের বিগ আইল্যান্ডের কিছু দাবানলের পাশাপাশি বিধ্বংসী মাউইয়ের দাবানল আবহাওয়ার বিরূপ সংমিশ্রণের ফল। এর কারণগুলোর মধ্যে আছে, জোরাল বাতাস, শুষ্ক গাছপালা এবং কম আর্দ্রতা।
স্টেইটের বিভিন্ন দ্বীপপুঞ্জ, বিশেষত মাউই খরা পরিস্থিতি কারণে শুষ্ক হয়েছিল। বোহলিন বলেন, ‘এখন বছরের সেই সময় যখন পরিবেশ শুকিয়ে যেতে শুরু করে।’
অ্যামেরিকা ড্রউট মনিটরের মতে, স্বাভাবিকের চেয়ে কম আর্দ্র বাতাসের কারণে এই শুষ্কতা আরও বেড়েছে। খরায় ঘাস এবং অন্য গাছপালা শুকিয়ে যায়, যার ফলে এগুলো দাবানলে জ্বালানি হিসেবে সাহায্য করে।
সেই সঙ্গে তীব্র বাতাস দ্রুত আগুন ছড়িয়ে দিতে পারে। মাউই কাউন্টির ফায়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ জেফ গিসিয়া সম্প্রতি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘আগুন আপনার বাড়ি থেকে এক মাইল বা তারও বেশি দূরে লাগতে পারে, তবে এক বা দুই মিনিটের মধ্যে এটি আপনার বাড়িকে গ্রাস করে নিতে পারে।’
বাতাস ও অন্যান্য অবস্থার কারণে ফায়ার ফাইটারদের পক্ষে আগুন নেভানো খুব কঠিন হয়ে পড়ে। আগুন দ্রুত এবং আরও অপ্রত্যাশিতভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। খবরে আরও বলা হয়েছে, তীব্র বাতাসের কারণে ফায়ার ফাইটিং বিমান উড়তে পারেনি।
মাউয়ের পশ্চিম পাশে লাহাইনা শহরের ফ্রন্ট স্ট্রিটের প্রধান পর্যটন স্ট্রিপের অসংখ্য বাড়িঘর, ঐতিহাসিক ভবন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছড়িয়ে পড়া দাবানলে পুড়ে গেছে। সিএনএনকে বৃহস্পতিবার গ্রিন বলেন, ‘লাহাইনার প্রায় ৮০ শতাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে।’
কাউন্টি সরকার জানিয়েছে, দ্বীপের কিছু অংশে বর্তমানে ল্যান্ডলাইন বা সেল-ফোন পরিষেবা নেই। হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন। দ্বীপটিতে সীমিত সম্পদের কারণে দর্শনার্থীদের মাউই ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হাওয়াইয়ে বিশাল বিপর্যয়ের ঘোষণা করেছেন। ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে এবং ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি ত্রাণ বিতরণের জন্য মাঠে কাজ করছে।
লাহাইনায় ছড়িয়ে পড়া আগুন বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। দক্ষিণে পুলেহুর আগুন ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। দ্বীপের দক্ষিণ অংশের মাঝখানে আপকান্ট্রিতে আগুন নেভানোর জন্য কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নজরে আসেনি।
রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা এবং বীমা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দাবানলে অর্থনৈতিক ক্ষতি বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। অ্যামেরিকা এ বছর ইতোমধ্যে রেকর্ডসংখ্যক, ১৫টি আবহাওয়া এবং জলবায়ু বিপর্যয় দেখেছে, যা বছরের প্রথম সাত মাসে কমপক্ষে ১ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি করেছে।