দীর্ঘদিন ধরে চলা এই মামলার নিষ্পত্তিতে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে চুক্তির অংশ হিসেবে অপরাধের দায় স্বীকার করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হান্টার।

ডিস্ট্রিক্ট জাজ ম্যারিয়েলেন নোরেইকা ওই চুক্তিতে সই করলে তা বাস্তবায়ন হবে। তবে এদিনই রায় ঘোষণা হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হান্টারের আইনজীবীরা এরইমধ্যে জানিয়েছেন, মামলার তদন্ত চলাকালে হান্টার বাইডেন সুদ ও জরিমানাসহ তার ফেডারেল ট্যাক্স বিল পুরোপুরি পরিশোধ করেছেন। মামলা সংশ্লিষ্ট এক সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, হান্টারের মোট বিল ছিল প্রায় ২ মিলিয়ন ডলার।

মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে সময়মতো ট্যাক্স পরিশোধ না করার দুই অভিযোগ ও আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত একটি অভিযোগ রয়েছে হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে।

জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, তিনি আদালতে ট্যাক্সে অনিয়মের দায় স্বীকার করে নেবেন ও প্রবেশনের জন্য সম্মত হবেন। বিনিময়ে তিনি প্রি-ট্রায়াল ডাইভারশন অ্যাগ্রিমেন্টের অংশ হিসেবে কিছু শর্ত মেনে অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র কেনার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাবেন।

প্রবেশন হিসেবে হান্টারকে ২৪ মাস মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে এবং তিনি আর কখনও আগ্নেয়াস্ত্র রাখতে পারবেন না। আর প্রবেশন মেনে নিলে ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরেও তিনি কারাদণ্ড এড়াতে পারবেন।

হান্টার বাইডেনের লিগ্যাল টিম ও ফেডারেল প্রসিকিউটরদের মধ্যে কয়েক মাস ধরে এই চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে। রিপাবলিকানরা এটিকে ‘সুইটহার্ট ডিল’ বলে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের ব্যাপক সমালোচনা করেন।

হান্টারের আইনজীবী ক্রিস্টোফার ক্লার্ক এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, চুক্তির মধ্য দিয়ে পাঁচ বছর ধরে চলা মামলা অবশেষে নিষ্পত্তির দিকে যাচ্ছে।

তিনি বলেছিলেন, ‘আমি জানি হান্টার বিশ্বাস করেন যে জীবনের নাজুক সময়ে মাদকাসক্তির কারণে যেসব ভুল করেছেন, সেগুলোর দায়ও নিতে হবে… তিনি সম্পূর্ণ সেড়ে উঠতে এবং সামনে এগোতে এখন প্রস্তুত।’

প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন এক বিবৃতিতে জানান, তারা ছেলেকে অত্যন্ত ভালবাসেন। জীবন নতুন করে শুরু করার প্রচেষ্টায় ছেলেকে তারা সবধরনের সহায়তা করবেন।

৫৩ বছর বয়সী হান্টার বাইডেন এক সময় ছিলেন আইনজীবী। চায়না ও ইউক্রেইনে লবিস্ট হিসেবেও কাজ করেছেন। কোকেইন গ্রহণের প্রমাণ পাওয়ায় ২০১৪ সালে তাকে ইউএস নেভি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বড় ছেলে বাও বাইডেনের মৃত্যুর পর থেকে পুরোপুরি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন ছোট ছেলে হান্টার। আসক্তি কমাতে নিজের সঙ্গে যুদ্ধের কথা প্রকাশ্যেই তিনি বলেছেন।

এরপর তার বিরুদ্ধে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ১০০ হাজার ডলার ট্যাক্স শোধ না করার অভিযোগ ওঠে। একইসঙ্গে মাদকাসক্ত থাকা অবস্থায় ২০১৮ সালে আগ্নেয়াস্ত্র কেনার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। বলা হয়, সে সময় আগ্নেয়াস্ত্র কেনার ফর্মে মাদকে আসক্তি আছে কিনা- এমন তথ্যের ঘরে তিনি ‘নো’ লিখেছিলেন।

ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তিতে এমন চুক্তির ঘটনা অ্যামেরিকায় বিরল।