
অ্যামেরিকায় সিটিজেনশিপ ইন্টারভিউর সময় গ্রেপ্তার এড়াতে কী করবেন?

টিবিএন ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৮ ২০২৫, ০:৫৩

অ্যামেরিকায় নাগরিকত্বের সাক্ষাৎকারের কল্পিত দৃশ্য। ছবি: বাউন্ডলেস
- 0
‘আপনাদের যারা বন্ধুবান্ধব যারা আছে, যারা অভিজ্ঞজনের সাথে আলাপ করতে পারেন কী করলে ভালো হবে, কিন্তু এখানে শেষ কথা না। যদি এই ধরনের থাকে কিছু এক্সেপশন ছাড়া, যেমন: সিটিজেনশিপের যদি ব্যাপার হয়, তাহলে হবে না।’
অ্যামেরিকায় সিটিজেনশিপ ইন্টারভিউ বা নাগরিকত্বের সাক্ষাৎকারের সময় ফেডারেল বাহিনী ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইসের হাতে গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের বাস্তবতা এবং গ্রেপ্তার এড়াতে করণীয় নিয়ে অ্যাটর্নি মীর মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চেয়েছেন টিবিএন অ্যানালাইসিসের সঞ্চালক রানা আহমেদ। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে সে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন আইনজীবী।
টিবিএন: একটি গুরুত্বপূর্ণ খবর। ২৪ আগস্ট রাত্রিবেলায় নিউজউইকে একটি গুরুত্বপূর্ণ খবর ছাপা হয়েছে। আমি একটু পরে সেখান থেকে আপনাকে ইংরেজি থেকে বাংলা হয়তো একটু বলতে পারব যে, এই ভদ্রলোক পাকিস্তানের নাগরিক ছিলেন; মার্কিন সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন। তাকে বৃহস্পতিবার সকালে ওয়াশিংটন স্ট্রিটে তার নাগরিকত্বের যে ইন্টারভিউ চলছিল, সেই সময় ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট বা আইস গ্রেপ্তার করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি বা খবরে বলা হয়েছে।
তো তিনি এই নর্থ ওয়েস্ট ডিটেনশন সেন্টারে বর্তমানে আটক আছেন এবং এই ভদ্রলোক ২৫ বছর ধরে এই অ্যামেরিকাতে বসবাস করছেন এবং ১৯৯০ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি মার্কিন সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন।
এই সেনাবাহিনীতে কাজ করার কালে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন, যে কারণে তার পিঠ এবং কাঁধে ব্যথা আছে। ঘাড়ে ব্যথা আছে বা সমস্যা আছে। সে কারণে তিনি হুইল চেয়ারেও চলাফেরা করেন এবং চিকিৎসাজনিত কারণে, অর্থাৎ এই অসুস্থ হওয়ার কারণে তাকে সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি বা রিটায়ারমেন্ট যেটাই আমরা বলি না কেন, সেটা দেওয়া হয়েছে।
এখন এই ভদ্রলোক ওয়াশিংটনের চুকুইলায় তার ন্যাচারালাইজেশন (নাগরিকত্ব) শুনানি যেটা আমরা বলছিলাম, উপস্থিত হন বৃহস্পতিবারে এবং তিনি কিন্তু গ্রিন কার্ডধারীও ছিলেন।
বছরের পর বছর ধরে তিনি নাগরিকত্বের জন্যে আবেদন করেছেন বা পাওয়ার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তাকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়নি। কেন দেওয়া হয়নি যে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল অস্ট্রেলিয়াতে তিনি যখন হয়তো ছিলেন বা গেছেন একটি মিসড্রিমিনাল ফ্রড, যেটাকে আমরা প্রতারণা বা জালিয়াতি বলতে পারি।
২০০১ সালে যখন তিনি ভিসার জন্য আবেদন করেন, সেই আবেদনে এই বিষয়টি উল্লেখ করেননি এবং তা ছাড়াও পরবর্তী সময়ে তিনি ইয়াকিমা পুলিশ ডিপার্টমেন্টের রিজার্ভ অফিসার হওয়ার আবেদনেও তিনি নাকি নিজের নাগরিকত্বের ব্যাপারে ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন।
সে কারণেই এই ভদ্রলোককে ঘিরে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এবং তিনি যেটা বলেছেন যে অস্ট্রেলিয়ার মামলার প্রভাবটা তিনি বুঝতে পারেননি এবং পুলিশ রিজার্ভ আবেদনে নাগরিকত্ব সম্পর্কিত ভুলের কথাও তিনি মনে করতে পারছেন না, কিন্তু এই যে আপনার কাছে যে প্রশ্নটি, ঘটনাটি অনেক আগে। প্রায় ২৫ বছর আগের বিষয়।
তখন থেকে আজ ২৫ বছর পরে তিনি গ্রিন কার্ড পাওয়ার পরেও এবং আমরা দেখেছি নিউজে যে, তিনি চেষ্টা করেছেন নাগরিকত্ব লাভের জন্য, কিন্তু পারেননি।
এই গত বৃহস্পতিবার যখন নাগরিকত্ব পরীক্ষা দিতে গেছেন, তখনই তাকে আইস গ্রেপ্তার করেছে। সেই প্রতারণা মামলার দায়। বিষয়টি বর্তমান প্রেক্ষাপটে বা আমাদের কমিউনিটিতে এর প্রভাবটা কি হতে পারে বা এ রকম পরিস্থিতিতে একজন আইন বিশারদ হিসেবে, বিশেষজ্ঞ হিসেবে বা আপনি একজন ইমিগ্রেশন লয়ার হিসেবে কী পরামর্শ আপনার কাছে আছে? বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন, বিশেষ করে যখন এই ইমিগ্রেশনের ওপরে একটা খড়্গ চলছে।
মীর মিজানুর রহমান: ধন্যবাদ। আমি ব্যাপারটাকে হালকা করে দেখতে চাচ্ছি। কারণ না হলে হয়তো কান্নাকাটি হবে, কিন্তু কোনো সমাধান হবে না। ভয় আসবে, কিন্তু সেটা কোনো সমাধানের দিকে আমাদেরকে নিয়ে যাবে না। এটা আজকের নতুন ঘটনা না।
সেই সাতানব্বইয়েও এ রকম একটা ঘটনা ঘটল। যখন নাইনটিসিক্সের যে ট্রানজিশন পিরিয়ড চলছিল অ্যামেরিকান ইমিগ্রেশনে, একটা মানে শুধু কঠিন না, একেবারে ডিফারেন্ট ধরনেরভাবে কিছু আইনকানুন হলো। মানে নাইনটিসিক্সের যে ইমিগ্রেশন ল, যেগুলো আসল, সেই সময় এক ভদ্রলোক ডমিনিকান রিপাবলিক থেকে আমেরিকাতে ফিরছিলেন।
তো সেই সময় ওই ট্রানজিশনের সময় একটা আইন হলো এবং সেটা রেট্রোঅ্যাকটিভলি প্রয়োগ করা হলো ওই লোকের ওখানে এবং তাকে ম্যাক্সিমাম সিকিউরিটি প্রিজনে নিয়ে যাওয়া হলো যখন ফিরতেছিলেন। কারণ উনি বহু আগে ছোটবেলা যখন, ইভেন মানে আই থিংক ১৭ বছর ছিল কিছু একটা। বাট সেই সময়ে একটা মাইনর, তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে একটা স্ট্যাটিউটরি রেপের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। তো সেই সময় সেটা সমস্যা ছিল না। উনার এত বছর ধরে গ্রিন কার্ড…উনার এখন ছেলেমেয়ে আছে। তাদেরও বিয়ে হয়েছে। নাতিপুতি আছে এটসেট্রা, কিন্তু এতদিন পরে এখন যে আইন হলো, সেই নাইনটিসিক্সের কথা বলতেছি। ফলে সেই নাইনটিসিক্সে এ রকম ঘটনা ঘটেছিল।
তারও কিছুদিন পরে এক ভদ্রলোকের ঘটনা। উনি রাশান সায়েন্টিস্ট। উনার গ্রিন কার্ড রয়েছে সাম ১২ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে। উনি এর মধ্যে আট থেকে ১০ বার বাইরেও গেছেন, কিন্তু একবার ফেরার সময় উনি আবারও সেই ম্যাক্সিমাম সিকিউরিটি প্রিজনে উনাকেও নিয়ে যাওয়া হলো। তো ঘটনাটা হচ্ছে যেমন এই যে সিটিজেনশিপের ইন্টারভিউর কথাটা বললেন, ঠিক তেমনই যখন গ্রিন কার্ডধারী কোনো মানুষও বাইরে থেকে অ্যামেরিকাতে প্রবেশ করতে নেন, বাইরে বেড়াতে যাওয়ার পরে, কোনো কনফারেন্সে গেলেন, কী দাদি, নানিকে দেখতে গিয়েছেন, বাবা-মাকে দেখতে গিয়েছেন, ফেরত হচ্ছেন। প্রতিটাবার এটা একটা নিউ অ্যাডমিশন হয় বা আপনি আই- নাইনটি, আপনার গ্রিন কার্ড রিনিউ করবেন। ১০ বছর পরে কী সিটিজেনশিপের ইন্টারভিউর সময় যে অপ্লিকেশন করলেন, তখন বিভিন্ন ধরনের স্ক্রুটিনি হয় এবং সেই সময় একটা সুযোগ আসে তাদেরকে আপনার আগের ব্যাকগ্রাউন্ডগুলো আবার দেখান। অনেক সময়ই অনেক ঘটনা উঠে আসে না।
যেমন: গ্রিন কার্ড পাওয়ার যে স্ক্রুটিনি লেভেলটা তার থেকে সিটিজেনশিপ পাওয়ার স্ক্রুটিনি আরও বেশি হায়ার লেভেলে হয়। তখন অনেক কিছু বেরিয়ে আসে, যেটা আগে হয়তো জানা যায়নি। হয়তো এফবিআইয়ের কাছে পাঠিয়েছে।
ছয় মাস হয়েছে, এক বছর হয়ে গেছে। ওরা কোনো রিপোর্ট দিচ্ছে না গ্রিন কার্ড দিয়ে দিল। এর মধ্যেও যেহেতু পাওয়া যায় না, অতকিছু নাই। আর না থাকলে যদি পরে পাওয়াও যায়, তারা তো তার গ্রিন কার্ড নিয়ে নিতেই পারে। কারণ যতই আপনার গ্রিন কার্ড থাকুক আর যেই মানুষ ইললিগ্যালও আছে, তারা সবাই এখানে এলিয়েন (বিদেশি)। যার ফলে আপনি যে কথাটা বললেন, এটা অবাক কোন ব্যাপার না।
আরেকটা জিনিস হচ্ছে, এখানে বলা হচ্ছে তার কোনো ক্রাইম ছিল কি না, তার কোনো মিসরিপ্রেজেন্টেশন ছিল কি না, তার কোনো ফ্রড ছিল কি না। এই যে ব্যাপারগুলা, যেগুলাকে একপর্যায়ে নিয়ে এগ্রিভেটেড ফেলোনির মধ্যে নিয়ে ফেলা যায়। এরা ঠিক ফেলোনিও না, আবার এক ধরনের একটু হাই লেভেল মিসডেমিনার। এগুলা যদি থাকে তাহলে আপনার এই যে সিটিজেনশিপের উনার অপ্লিকেশন করার আগেই উনার…ওই রোগী যেমন প্লেনে উঠার আগে ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত তার হার্টের কী অবস্থা, তেমনই তাদেরকে বিবেচনা করা উচিত উনি এই সিটিজেনশিপের এই অ্যাপ্লাইটা করা উনার উচিত হয়েছে কি না। বাইরে যে যাবেন উনি ফিরে আসার সময় কোন বিপদ হবে কি না।
আপনার হংকংয়ের এক ছেলে দাদিকে দেখতে গিয়েছিল। আসার সময় তাকে এ রকম ধরে রেখে দিয়েছে। বিকজ সে ওই রচনা লিখতে বলেছিল। সে তার স্বপ্নের কথা বলছে। ওই টিচারকে দেখে সে মেরে ফেলবে। কারণ তাকে নাম্বারটা কম দেয় বা কিছু একটা। হ্যাঁ, সাথে সাথে পুলিশ কলা করা হয়েছিল এবং অ্যান্টি টেররিজম আইনে তাকে জেলে নিয়ে যায়।
তো যাই হোক পরে ছেড়ে দিয়েছে, কিন্তু ক্রাইমটা তো রয়ে গেল। সে যখন দাদিকে দেখে ফিরে আসছিল তাকে আবার এই ডিপোর্টেশনের মধ্যে পুরো দিয়েছে এবং জাজ আমাকে ক্লিয়ার বলে দিছে, যদি গভর্নমেন্ট লইয়ার প্রসিকিউটর কেসটা উঠিয়ে নেয়, তাহলে যদি সে তার কপাল ভালো থাকে। আমার কিছু করার নাই।
তখন আমি ওই জাজ বাদ দিয়া প্রসিকিউটরের পেছনে পেছনে দৌড়ানো শুরু করলাম যেটা বেইজড অন প্রসিকিউটরাল ডিসক্রেশন। তার ওই কেসটাই উইথড্র করা যায় কি না এই ধরনের একটা ব্যাপার। এটার জন্য ফোরফোর্টি মোশন আছে, বিভিন্ন কিছু আছে। গেল।
তো আমার কথা হচ্ছে এই যে ব্যাপারটা আপনি বললেন, এইটা আমি মনে করি সঞ্চালক মহোদয় একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন কমিউনিটির এই স্বার্থে। এটার যে ব্যাখ্যাটা সবাই জানে মোটামুটি। ক্রাইম মানে খারাপ জিনিস, কিন্তু এটার যে আপনি যে সংবাদটা তুলে নিয়ে এসেছেন, এটার জন্য আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ এই জন্য যে, ব্যাপারটা এটা অস্ট্রেলিয়াতেই হোক আর পাকিস্তানেই হোক আর যেখানেই হোক, এটা ওই পাকিস্তান মুসলমান কান্ট্রি, ব্যাপারটা এখানে না।
মানে ব্যাপারটা হচ্ছে সে এতদিন তো ভালোই ছিল। ওই যে বললেন কোথায় কোথায় চাকরি-বাকরিও করেছে। আর্মিতে, ভেটেরান একদম। এখন সেই যেখানে ফ্রড করেছে, ওটা তো বলে নাই যে অন্য কিছু ছিল; তার দুই নাম ছিল…আমি জানি কত যে বাঙালি মানুষের… এখানে যারা মানে আসছেন, এ পর্যন্ত যে তাদের যে কত ফ্রড আছে। মানে দুই নাম। মানে আপনি হয়তো ফ্রড কথা শুনলে খুব খারাপভাবে নিবেন। দুইটা নাম। আচ্ছা ভালো কথা। আপনি…মাইক অমুক হয়ে গেছে, টম। সেটা না। আপনার ডেট অব বার্থ পর্যন্ত ডিফরেন্ট।
এই যে এগুলা করা আছে, এখন তারা যদি এই যে এগুলার মধ্যে দিয়ে আবার যায়... যেমন: তাদের ছেলেপেলে ২১ হয়েছে। তারা ভাবল যে, আমার তো এখন সব আলহামদুলিল্লাহ। এখন সে অ্যাপ্লাই করবে, গ্রিন কার্ড পেয়ে যাবে? দ্য আনসার ইজ নো।
…এই যে আপনি এটা বললেন যে, সেটা শুধু অ্যামেরিকার ভিতরে না, এটা যদি বাংলাদেশেও থাকে, কী ব্রাজিলেও থাকে, অস্ট্রেলিয়া তো আপনি বললেনই। অন্যখানেও থাকে, এটা যদি উঠে আসে, কোনোই অবাক হওয়ার কিছু নাই। হ্যাঁ, এই যে বললাম গ্রিন কার্ড নিয়ে আটবার গেছেন ১০ বছরের মধ্যে। ধরা পড়ে নাই, কিন্তু শেষবার গিয়ে ধরা পড়ে গেছেগা।
উনি এসে ওই অন্য নামে কেউ হয়তো একজন একটা ওয়ার্ক পারমিট করে দিয়েছে। এটা তো আর হুটহাট করে ওয়ার্ক পারমিট হয় না। একটা অ্যাসাইলাম সিক করেছিল অন্য নামে। হ্যাঁ, তো অ্যাপ্লাই করেছেন। তো ওটার আর উনি খোঁজখবর নেন নাই ও ব্যাপারে। উনার ডিপোরটেশন (বিতাড়ন) অর্ডার হয়ে রয়েছে। ওগুলার উনি খবরই নাই। উনি এদিক দিয়ে বড় সায়েন্টিস্ট। উনি সায়েন্টিস্ট হিসেবে গ্রিন কার্ড করে ফেলেছে। হ্যাঁ, ও আর চিন্তা করে নাই, কিন্তু ওটা তো রয়ে গেছে। একটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট এখন কাচের ওপরে দেন। আর ওই যে কী জানি কাগজের ওপরে দেন, একই কথা। কোনো চান্স নেবেন না। কোনো সুযোগ নেবেন না। ধন্যবাদ।
টিবিএন: তার মানে যে বিষয়টি দাঁড়াচ্ছে, আপনার এই আলোচনায় এবং এই নিউজের প্রেক্ষাপটে আমরা হয়তো কনক্লুশন এভাবে করতে পারি যে, যে কেউ যেখানেই পৃথিবীর যে প্রান্তেই হোক, বিশেষ করে যদি তার শুধু যে তার নেটিভ কান্ট্রি, তাই নয়, যেকোনো দেশেই যাক না কেন, সেখানে যদি কেউ যেকোনো অন্যায় করে থাকে বা মিসডেমিনার ফ্রড বা প্রতারণা যেটাই করে থাকুক না কেন, যখন কেউ গ্রিন কার্ড বা সিটিজেনশিপের জন্য আবেদন করে, আবেদনের সাথে সাথেই তো সেটা দেওয়া হয় না। দীর্ঘদিন সময় লাগে। অর্থাৎ এই সময়টি যে আবেদনকারী, তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
সেই তথ্য সংগ্রহ করাকালে তার বিরুদ্ধেই এই খবরগুলো সে যতই আমাদের ১০ হাজার (কিলোমিটার) দূরে, বাংলাদেশের কথাই যদি, যেটা আপনি একটু আগে বলছিলেন যে অনেকেই ফ্রডের কথাই বলেছেন অনেকেই আছে। তো সেই ধরনের কোনো খোঁজখবর পাওয়াটা এই অ্যামেরিকার ইমিগ্রেশন সিস্টেম যেভাবে আছে, সেটা বের করা খুব কঠিন নয় এবং সেটা বের করলে এখানে এসে হয়তো খুব সাধুভাবেই আমরা থাকি বা যেই থাকুক না কেন, ওই অপরাধের কারণে আমার গ্রিন কার্ডটা বাতিল হতে পারে বা আমি গ্রিন কার্ড নাও পেতে পারে বা সিটিজেনশিপ নাও পেতে পারি বা ডিটেনশনে যেতে পারি। এটাই তো মূল কথা।
মিজানুর রহমান: আমাকে যদি একটু সুযোগ দেন, আমি আরও একটা মিনিট কথা বলতে চাই…এখন কথা হচ্ছে, ঠিক আছে ভাই। এটা হলো। এখন করবটা কী? যেকোনো মানুষেরই তো আমরা শুধু সমস্যা বললেই তাদেরকে কাঁদিয়ে দিলাম। এখন অনেককে মন খারাপ করিয়ে দিলাম। আসল কথায় আসেন। এখন কী করব?
যদি কেউ ফলস ক্লেম অব সিটিজেনশিপ করে থাকেন, তাতে কিন্তু পুরা ব্যাপারটা খারাপ হয়ে গেলগা। কারণ এগুলা থাকলেও আপনার বিভিন্ন ওয়েভারের ব্যবস্থা আছে। এটা নিয়ে এখন আমি কথা বলতে চাই, কিন্তু তার আগে একটা কথা খুব ক্লিয়ার বলে নেই।
ফলস ক্লেইম অব সিটিজেনশিপ যদি থাকে, ধরেন কেউ গলা কাটা পাসপোর্টের কথা শোনা যায় না? তো কেউ যদি ইউএস পাসপোর্ট ইউজ করে এখানে আসার চেষ্টা করে, যেটা সত্যি না, কী কেউ এখানে ভোট দিয়েছে, মানে তার অ্যাকশনের মাধ্যমে সে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে যে, সে ওই ফলস ক্লেইম অব সিটিজেনশিপ করেছে। এগুলার কোনো ক্ষমা নাই; এগুলার কোনো ওয়েভার নাই, কিন্তু যদি অন্য কোনো ধরনের প্রতারণা থাকে, তখন আপনার যদি কোয়ালিফাইং রিলেটিভ থাকে এবং তাদের এক্সট্রিম হার্ডশিপ হবে, এটা প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা চান্স আছে এবং কোয়ালিফাইং রিলেটিভ হচ্ছে বাবা-মা বা স্পাউজ, যাদের গ্রিন কার্ড বা সিটিজেনশিপ আছে। বাচ্চাকাচ্চা কাউন্ট হয় না। গেল তো।
ফলে আপনারা এই জিনিসটা মনে রাখবেন যে আপনার স্পাউজ এবং বাবা-মার যাদের গ্রিন কার্ড বা সিটিজেনশিপ আছে, তাদের যদি এক্সট্রিম হার্ডশিপ…মানে বাবা-মা থাকলেই হলো না। তো তাদের অনেক সমস্যা হবে এটা দেখাইতে হবে।
তো এই জিনিসটা যাদের এ ধরনের সম্ভাবনা আছে, তারা কিন্তু এই জিনিসটার জন্য রেডি থাকবেন।
যদি কখনও এটা উঠে আসে এই যে যেমন এই ভদ্রলোকের যে কথা বললেন, এখন তার কি কিছুই করা যাবে না? করা যাবে। এই হচ্ছে একটা ব্যাপার।
আরেকটা জিনিস হচ্ছে যখন এখন উনাকে ডিপোর্টেশনে নিয়ে যাবে, নিয়ে গেলে তখন ২৩৭ ওয়েভার বলে একটা জিনিস আছে। এটা দিয়ে আরেকটা ওয়েভারের ব্যবস্থা আছে, যাদের গ্রিন কার্ড অলরেডি আছে এবং তাদের যেমন এখানে যদি বাচ্চাকাচ্চা থাকে, যাদের মানে এখানে জন্ম হয়েছে বা অন্য কোনোভাবে উনার মাধ্যমে না, যদি ই থাকে, সিটিজেনশিপ আর গ্রিন কার্ড থাকে। সেখানেও এটা কাজ করবে।
হ্যাঁ তো এই ধরনের বিভিন্ন রকম কিছু এক্সেপশন আছে এবং এ ব্যাপারে আমি শিউর, আপনাদের যারা বন্ধুবান্ধব যারা আছে, যারা অভিজ্ঞজনের সাথে আলাপ করতে পারেন কী করলে ভালো হবে, কিন্তু এখানে শেষ কথা না। যদি এই ধরনের থাকে কিছু এক্সেপশন ছাড়া, যেমন: সিটিজেনশিপের যদি ব্যাপার হয়, তাহলে হবে না। অন্য কোনোভাবে হলে আপনাদের এখনও যেমন এই যে ভদ্রলোক এ রকমের কত যে মানুষ এ রকম ধরা পড়ে আছে, তখন আপনারা কী করবেন? যাদের পরিবারবর্গ এ রকমের কষ্টে আছে, তাদের বাবাকে নিয়ে গেছে, তাদের মাকে নিয়ে গেছে, ভাইকে নিয়ে গেছে। তারা একদম হতাশ হবেন না।
তারা আপনাদের যারা বন্ধুবান্ধবরা আছে, তাদের সাথে কথা বলেন। হয়তো একটা কোনো ব্যবস্থা হয়ে যাবে। ধন্যবাদ।