রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার শিয়ালবাড়িতে মঙ্গলবার পোশাক কারখানা ও গুদামের আগুনে প্রাণ হারানো ১৬ জনের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা লাগতে পারে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বাহিনীর পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তৈরি পোশাক কারখানা ও একটি রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ আগুনের পর কারখানার ভবন থেকে ১৬টি অগ্নিদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
মরদেহগুলো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
খালি চোখে কোনো মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব নয় জানিয়ে তাজুল বলেন, তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘গার্মেন্টসটির ছাদ টিনশেড ছিল। ছাদ ও গেট তালা মারা থাকায় দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তলায় লোকজন আটকে পড়ে। মৃতদেহগুলো সেই দুই তলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
‘এই ঘটনায় একজন স্বেচ্ছাসেবক আহত হয়েছেন। মরদেহগুলো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, প্রচণ্ড তাপে তাদের মুখ সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। তাই পরিচয় শনাক্ত সম্ভব হচ্ছে না। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমেই পরিচয় শনাক্ত করতে হবে।
রাসায়নিক বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্ট বিষাক্ত গ্যাসের কারণে তারা অচেতন হয়ে সঙ্গে সঙ্গে মারা যান বলে জানান তিনি।
‘কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আরও সময় লাগবে। কেমিক্যাল গোডাউনে ছয় থেকে সাত ধরনের কেমিক্যাল ছিল। সাধারণত আগুন ধরার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত ছড়িয়েছে। তাই গার্মেন্টস অংশে থাকা কর্মীরা বাইরে বের হতে পারেনি’, বলেন তাজুল।
‘গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনের কোনো লাইসেন্স ও অনুমোদন ছিল না। এখানে কতজন কাজ করত সেই হিসাবও পাওয়া যায়নি’, যোগ করেন তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের কাছে আগুনের খবর আসে। খবর পাওয়ার পর বাহিনীর প্রথম ইউনিট ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
প্রথমে পাঁচ ইউনিট পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে আরও সাতটি ইউনিট যোগ দেয় আগুন নিয়ন্ত্রণে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ করে পোশাক কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশে থাকা রাসায়নিকের গুদামে। খবর পেয়ে একে একে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অগ্নিনির্বাপণে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস।
ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভিড় সামলাতে মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী। এরপর তাদের সঙ্গে সহায়তায় যোগ দেন পাশে থাকা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, স্বেচ্ছাসেবক, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি।