পিটিআই-এর পক্ষ থেকে পাকিস্তান ‘অচল’ করে দেয়ার ডাক এসেছে। দলের কর্মীরা দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে যাত্রার পরিকল্পনাও সাজাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ চলছে।
ব্যাপক সহিংসতার মুখে পাকিস্তানের চার প্রদেশের তিনটিতে জরুরি আদেশ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। সেখানে সব ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশজুড়ে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, বিক্ষোভ মোকাবিলায় পাঞ্জাবে সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। প্রদেশটিতে অন্তত ১ হাজার পিটিআই কর্মীকে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বালুচিস্তান প্রদেশ কর্তৃপক্ষও সেনা মোতায়েনের জন্য কেন্দ্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারে অন্তত চার বিক্ষোভকারী প্রাণ হারিয়েছেন। সেখানকার লেডি রিডিং হসপিটালের মুখপাত্র মুহাম্মদ আসিমের বরাতে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, সংঘর্ষে আহত ২৫ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পেশোয়ারে রেডিও পাকিস্তান ভবন হামলার শিকার হয়েছে। রেডিও পাকিস্তানের মহাপরিচালক তাহির হুসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বিক্ষোভকারীরা ভবনে হামলা চালিয়ে প্রধান গেট ভেঙে ফেলে। এরপর ভবনে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
এদিকে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আট দিনের পুলিশি হেফাজতে দিয়েছে ইসলামাবাদের একটি আদালত। ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি বিউরো এই আট দিন আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
দুটি মামলার শুনানির নির্ধারিত দিন মঙ্গলবার ইমরান খান হাইকোর্টে গেলে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার দেখানোর তথ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ইমরান ও তার স্ত্রী একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির ৫০ বিলিয়ন রুপি বৈধ করার বিনিময়ে কয়েক বিলিয়ন রুপি উৎকোচ গ্রহণ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইমরান খান গেট পেরিয়ে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে ঢোকার পরপরই আধা-সামরিক বাহিনী রেঞ্জার্সের সদস্যরা সাঁজোয়া যান নিয়ে সেখানে প্রবেশ করে।
সাঁজোয়া যানের বহর গেটের সামনে রেখে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয় এবং কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ইমরানকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনার পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে।