হাউয রুলস কমিটিতে মঙ্গলবার রাতে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠকে এই বিল নিয়ে ব্যাপক তর্ক হয়। এরপর ৭-৬ ভোটে ফ্লোরে পৌঁছানোর অনুমোদন পায় এটি।
দুই বছরের জন্য সরকারের ঋণসীমা বাড়াতে গত শনিবার নীতিগতভাবে চুক্তিতে পৌঁছান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও হাউয স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি। সেটিই ‘ফিসক্যাল রেসপন্সিবিলিটি অ্যাক্ট’ আকারে হাউয রুলস কমিটিতে তোলা হয়।
রয় ও নরম্যান ছাড়াও চার ডেমোক্র্যাটিক কংগ্রেসম্যান বিলটির বিপক্ষে ভোট দেন। এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তারা। কংগ্রেসওম্যান লরেন বোবার্ট চুক্তি সংশোধনের প্রস্তাবও দেন।
হাউযে এই বিল পাশ হলে ম্যাকার্থির পক্ষে স্পিকারের দায়িত্ব ধরে রাখা কঠিন হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন চিপ রয়।
৯৯ পৃষ্ঠার ফিসক্যাল রেসপন্সিবিলিটি অ্যাক্ট নিয়ে আলোচনার শুরুতে কমিটির চেয়ার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান টিম কোল বলেছেন, বিভক্ত কংগ্রেসের বাস্তবতায় এমন একটি সমঝোতা করতে হয়েছে দেশের সার্বিক স্বার্থের কথা মাথায় রেখে। তাই এর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তিনি।
এরপর কথা বলেন কমিটির র্যাংকিং মেম্বার ডেমোক্র্যাটিক কংগ্রেসম্যান জিম ম্যাকগভার্ন। ফেডারেল খাদ্য সহায়তায় সুনির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা রাখার বাধ্যবাধকতা নিয়ে হাউযের কোনো কমিটি সরব না হওয়ায় লাল শিবিরের সমালোচনা করেন তিনি। এ নিয়ে রিপাবলিকান বর্ষীয়ান কংগ্রেসম্যান র্যালফ নরম্যানের সঙ্গে তর্কাতর্কিও হয়।
রিপাবিলিকান কংগ্রেসম্যান চিপ রয় এরপর জানান, দুই বছরের জন্য ঋণসীমায় লাগাম টেনে ধরা হয়েছে। এরপর আবারও এর সীমা বৃদ্ধি করা যাবে ইচ্ছামতো। তাহলে আগামী ছয় বা ১০ বছরে কী ধরণের প্রভাব পড়বে সে বিষয়ে কথা বলা অর্থহীন।
রয়ের একের পর এক প্রশ্নে কমিটির লাল শিবিরের আইনপ্রণেতাদের অস্বস্তিতে পড়তে দেখা যায়। তবে বিলের পক্ষে কট্টর রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান থমাস মেসি ভোট দিয়েছেন।
তিনি বিরোধীতাকারী রিপাবলিকানদের ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এই কমিটিতে আমি আমার আদর্শের ছাপ রাখতে বসিনি। আমার মনে হয় এটা করলে কমিটির সঠিক ব্যবহার হবে না।’
পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, পূর্ণাঙ্গ হাউয ফ্লোরেও বিলের পক্ষে ভোট দেবেন।
বৈঠকে সমঝোতা চুক্তির প্রশংসা করেন রিপাবলিকান কংগ্রেনম্যান রন এস্টেস। তিনি জানান, দেশের সাধারণ মানুষের জন্য অনেক বড় অর্জন এটি।
রুলস কমিটির বৈঠকে কংগ্রেসওম্যান লরেন বোবার্ট বিলে সাতটি সংশোধনীর প্রস্তাব দেন।
এরপর ৭-৬ ভোটে বিলটি হাউয ফ্লোরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে, বাইডেন-ম্যাকার্থির সমঝোতা চুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন সেনেট মেজোরিটি লিডার চাক শুমার। হাউযে পাশ হয়ে বিলটি সেনেটে গেলে দ্রুত গতিতে পাশের উদ্যোগ নেবেন বলেও জানান তিনি।
শুমার জানান, এ চুক্তি দেশকে ঋণখেলাপী হওয়া থেকে ও দেশের অর্থনীতিকে ধসের কবল থেকে রক্ষা করবে। বিল পাস না হলে অর্থনৈতিক যে বিপর্যয় ঘটবে, তা পুনরুদ্ধারে অনেক বছর সময় লেগে যাবে বলে জানান তিনি।
সেনেট লিডার বলেছেন, ঋণখেলাপী হওয়ার আগে খুব কম সময় হাতে আছে। এর আগেই সেনেটে এটি পাস করতে তৎপর হবেন। এ ব্যাপারে সেনেটরদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন শুমার।
বাইডেন-ম্যাকার্থির চুক্তির প্রশংসা করে ন্যাশনাল ইকোনোমিক কাউন্সিলের প্রধান লেইল ব্রেইনার্ড জানিয়েছেন, এ চুক্তি ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকানদের নয়, দেশের মানুষের বিজয়।
তিনি জানান, এতে করে দেশের সার্বিক অর্থনীতির এগিয়ে যাওয়া ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়টি সুরক্ষিত হয়েছে।