এসসিএমপির প্রতিবেদন
পানির নিচে ৫ দিন, জীবিত ফিরলেন ডুবোৎসাহী

টিবিএন ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৪ ২০২৫, ০:৫৬ হালনাগাদ: নভেম্বর ২ ২০২৫, ২২:৩১

উদ্ধারের পর ওয়াংকে ভালো অবস্থায় পাওয়া গেছে। স্ট্রেচার ছাড়াই তিনি অ্যাম্বুলেন্সে উঠতে সক্ষম হন। ছবি: এসসিএমপি

উদ্ধারের পর ওয়াংকে ভালো অবস্থায় পাওয়া গেছে। স্ট্রেচার ছাড়াই তিনি অ্যাম্বুলেন্সে উঠতে সক্ষম হন। ছবি: এসসিএমপি

  • 0

ডুবোৎসাহীর নিখোঁজের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু করে পুলিশ। বাহিনীটি শিয়াংজি শুগুয়াং রেসকিউ টিম ও দক্ষিণ চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গুয়াংজির বেইজ শহরের বিশেষ পুলিশ বাহিনীর সাহায্য চায়।

পানির নিচের একটি গুহায় আটকা পড়ে পাঁচ দিন ও রাত যাপন করে জীবিত ফিরেছেন চীনের ডুবে উৎসাহী এক ব্যক্তি। ঘটনাটি বিস্ময় ও অবিশ্বাস তৈরি করেছে অনেক নেটিজেনের মধ্যে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট-এসসিএমপি শনিবার জানায়, ঘটনাটি শুরু ১৯ জুলাই। ওই দিন মধ্য চীনের হুনান প্রদেশের জিয়াংশির ফুরং শহরের বাসিন্দা চল্লিশোর্ধ্ব ডু্বোৎসাহী ওয়াং বন্ধুর সঙ্গে একটি নদীতে ডুব দেন। এর পাঁচ মিনিটের মধ্যে তিনি নিখোঁজ হন।

ওই নদীর পৃষ্ঠ থেকে ৯ মিটার নিচে ছিল জটিল এক গুহা ব্যবস্থা। এতে ডুবোৎসাহীর নিখোঁজের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু করে পুলিশ। বাহিনীটি শিয়াংজি শুগুয়াং রেসকিউ টিম ও দক্ষিণ চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গুয়াংজির বেইজ শহরের বিশেষ পুলিশ বাহিনীর সাহায্য চায়।

বেইজের বিশেষ বাহিনীর গুহা ডুবুরি দল নদীর নিচের গুহাটিতে দুইবার তল্লাশি চালায়। প্রথম উদ্ধার অভিযানে তারা ব্যর্থ হন। দ্বিতীয়বার অভিযানের সময় উদ্ধারকারীরা বুঝতে পারেন, কেউ একজন গুহার শিলায় আঘাত করছেন।

আওয়াজের পরিপ্রেক্ষিতে ডুবুরি দল তাৎক্ষণিকভাবে নদীর উপরিভাগে থাকা দলকে তাদের নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ করতে বলে। এর লক্ষ্য ছিল শব্দ আরও ভালোভাবে শোনা, কিন্তু একই ধরনের শব্দ আর পায়নি দলটি।

ডুবুরিরা পরবর্তী সময়ে নদীর প্রায় ১৩০ মিটার গভীরে প্রবেশ করেন, কিন্তু তারা কিছুই পাননি, তবে ফেরার পথে প্রায় ১০০ মিটার নিচের এলাকায় তারা ব্রেকথ্রু পান।

জিয়াংশি শুগুয়াং রেসকিউ টিমের দলনেতা তিয়ান ইয়াংলিন জিয়াওজিয়াং মর্নিং হেরাল্ডকে ঘটনার বিষয়ে জানান। তার ভাষ্য, গুহা ডুবুরিরা কাছাকাছি এলে ওয়াং শিলায় ধাক্কা দিলেও কোনো সাড়া পাননি। ওয়াং তার নিচ দিয়ে ডুবুরি দলকে গুহার আরও গভীর অংশে যেতে দেখেছেন।

ইয়াংলিন জানান, ওয়াংয়ের দেহে অক্সিজেন সরবরাহের স্তর কমে মাত্র চার শতাংশে চলে আসে। ওই সময় গুহার এয়ার পকেট থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন তিনি। সৌভাগ্যজনকভাবে সে সময় তিনি ডুবুরিদের ফিরতে দেখেন এবং ফ্ল্যাশলাইট মারেন। এর মধ্য দিয়েই ডুবুরিরা তার সন্ধান পেয়ে তাকে উদ্ধার করেন।

তিয়ান জানান, ওই মুহূর্তটিই ছিল তার শেষ সুযোগ। এসসিএমপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গুহার একটি ফাঁপা অংশ খুঁজে পেয়ে বাঁচার পথ পান ওয়াং। নদীর বেশ গভীরে হলেও ওই এয়ার পকেটে নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো জায়গা ছিল।

ওয়াং পরবর্তী সময়ে জানান, দুর্ঘটনাবশত গুহাটিতে প্রবেশ করে তিনি সময়ের হিসাব-নিকাশ থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে কাঁচা মাছ খেয়ে বেঁচে ছিলেন।

উদ্ধারকারীরা জানান, উল্লেখযোগ্য দিক হলো উদ্ধারের পর ওয়াংকে ভালো অবস্থায় পাওয়া। স্ট্রেচার ছাড়াই তিনি অ্যাম্বুলেন্সে উঠতে সক্ষম হন।

উদ্ধারকারীদের উদ্দেশে তার প্রথম শব্দ ছিল, ‘আপনাদের কাছে কি সিগারেট আছে?’