শুল্কযুদ্ধ থেকে সরে এলো অ্যামেরিকা-চীন, বিশ্ববাজারে চাঙা ভাব

টিবিএন ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১২ ২০২৫, ১২:০০ হালনাগাদ: ডিসেম্বর ১১ ২০২৫, ২২:৫১

স্কট বেসেন্ট এবং জামিসন গ্রিয়ার। ছবি: রয়টার্স

স্কট বেসেন্ট এবং জামিসন গ্রিয়ার। ছবি: রয়টার্স

  • 0

অ্যামেরিকা ও চীনের মধ্যে সাময়িকভাবে শুল্ক বিরতি চুক্তি হয়েছে। এ চুক্তির ফলে বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বস্তির আভাস মিলেছে এবং বিশ্ববাজারে ইতিবাচক সাড়া দেখা গেছে।

আগামী ৯০ দিনের জন্য পাল্টাপাল্টি শুল্ক স্থগিত রাখতে সম্মত হয়েছে অ্যামেরিকা ও চীন। একসঙ্গে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশ।

সুইটযারল্যান্ডের জেনিভায় সোমবার যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে দেশদুটি। পরে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট।

সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প প্রশাসনের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানান, তারা ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন এবং শুল্কের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পারস্পরিক শুল্কের ক্ষেত্রে দু’পক্ষই তাদের শুল্ক ১১৫ শতাংশ কমিয়ে আনবে। তাদের মধ্যে খুবই ইতিবাচক, গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলেও জানান বেসেন্ট।

ইউএস ট্রেইড রেপ্রেযেন্টেটিভ জেইমিসন গ্রিয়ার জানান, এই চুক্তির মাধ্যমে, অ্যামেরিকা তাদের শুল্ক ১০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। এতে করে তা প্রায় ১৫ শতাংশ কমবে। চায়নাও তাদের আরোপ করা শুল্ক ১০ শতাংশে নামিয়ে আনবে বলে জানান গ্রিয়ার।

চায়না ও অ্যামেরিকার শুল্ক স্থগিত করার সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট চায়নার সাধারণ মানুষ। সাংহাইয়ের বাসিন্দা অ্যালেক্স ঝু জানান, দুই দেশের পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত সবার জন্যই ক্ষতিকর। তাই এ সিদ্ধান্ত তারা খুব খুশি।

অ্যালেক্স ঝু বলেন, ‘সাধারণ মানুষের জীবনের জন্য, আমি মনে করি যে এই ধরনের একটি চুক্তি আমাদের ভবিষ্যতকে ইতিবাচক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে। এটি মানুষকে আশা দেয় যে এই সমস্যাটি চূড়ান্তভাবে সমাধানের সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

আরেক বাসিন্দা ডলি ইয়াং জানান, ‘আমি আসলে বেশ অবাক। আমি ভেবেছিলাম একটা চুক্তিতে পৌঁছাবে, কিন্তু এত তাড়াতাড়ি এটা ঘটবে, তা আশা করিনি। আমি ভেবেছিলাম এটি একটি দীর্ঘ লড়াই হবে এবং আলোচনায় অনেক সময় লাগবে। আমি বেশ অবাক যে তারা এতো তাড়াতাড়ি একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে।’

এদিকে বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনৈতিক শক্তির পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তে শেয়ারবাজারে চাঙাভাব দেখা গেছে। বিশেষ করে চায়নার সাংহাই, হংকং, জাপানের টোকিও ও সাউথ কোরিয়ার শেয়ারবাজারে উচ্চ সূচক দেখা গেছে।

এমন খবরের পর এশিয়া ও ইউরোপের শেয়ারবাজারে ব্যাপক উত্থান দেখা গেছে। ইউরোপের স্টক্স ৬০০ সূচক ১ শতাংশ বেড়েছে, জার্মানির ডিএএক্স এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে, আর হংকংয়ের শেয়ারবাজার প্রায় ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ওয়াল স্ট্রিটেও ইতিবাচক সাড়া দেখা গেছে। নাসডাক ফিউচারস ৩ দশমিক শতাংশ, এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচারস ২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ডাও জোন্স ফিউচারস ৩ দশমিক ১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

জেপি মরগান অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান বাজার কৌশলবিদ তাই হুই এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শুল্ক কমানোর মাত্রা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। তবে ৯০ দিনের সময়সীমায় পূর্ণাঙ্গ চুক্তি হওয়া কঠিন হতে পারে। তবুও, এটি আলোচনার ওপর চাপ বজায় রাখবে।’

তিনি আরও বলেন, বাজারে ইতিবাচক মনোভাব ফেরাতে এই পদক্ষেপ সহায়ক হবে এবং নিকট ভবিষ্যতে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমানোর চাপ কিছুটা কমে যেতে পারে।