গাযায় অনাহার ও অপুষ্টিতে ২৯০ হাজার শিশু মৃত্যু ঝুঁকিতে

টিবিএন ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৪ ২০২৫, ১৬:০০

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • 0

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ আগেই সতর্ক করে বলেছে, গাযায় ২৯০ হাজার শিশু মৃত্যু ঝুঁকিতে। এছাড়া শুধুমাত্র অনাহারের কারণে মৃত্যুর মুখে রয়েছে পাঁচ বছরের কম বয়সি সাড়ে ৩ হাজার শিশু।

দুই মাসের বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ গাযা উপত্যকা। ইযরায়েলের বাধার কারণে কোনো ধরনের ত্রাণসামগ্রী সেখানে প্রবেশ করতে পারছে না। তার ওপর ইযরায়েলি সেনাদের হামলায় প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছে শিশুরা। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, পথে-ঘাটে খাবার খুঁজে বেড়াচ্ছে তারা। এখন পর্যন্ত অপুষ্টির কারণে ৫৭টি শিশু মারা গছে। আর অপুষ্টি ও অনাহারে মৃত্যুর মুখোমুখি প্রায় ২৯০ হাজার শিশু।

গাযার বাসিন্দা হাশেম। বিভিন্ন স্থানের আবর্জনা ঘেটে শুকনো পুড়ে যাওয়া, পচে যাওয়া রুটি সংগ্রহ করেন তিনি। একটা সময় এসব রুটি বিক্রি করতেন গবাদী পশুর মালিকদের কাছে। কিন্তু এখন এটাই তার পরিবারের খাবার।

তিনি জানান, ‘এসব পচে যাওয়া রুটি আমি আবর্জনার ডিপো থেকে নিয়ে এসেছি। এর মাঝে যেগুলো কিছুটা খাওয়ার যোগ্য সেগুলো বেছে আমি আর আমার পরিবার খাচ্ছি। এগুলো খেয়ে আমার সন্তানরা অসুস্থ্য হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি নিরুপায়। রাতের বেলা ওরা যখন ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাঁদে তা সহ্য করতে পারি না। গাযা আর মানুষের বসবাসযোগ্য নেই।’

ইযরায়েল গাযার প্রবেশপথগুলো বন্ধ করে রাখায় দুই মাসের বেশি সময় ধরে কোন ত্রাণ সামগ্রী ঢুকতে পারছে না উপত্যকায়। তারা শিশুদের ফর্মুলা দুধ ও পুষ্টিকর খাবারও ঢুকতে দিচ্ছে না। প্রয়োজনীয় খাবারের অভাবে শিশুমৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ আগেই সতর্ক করে বলেছে, গাযায় ২৯০ হাজার শিশু মৃত্যু ঝুঁকিতে। এছাড়া শুধুমাত্র অনাহারের কারণে মৃত্যুর মুখে রয়েছে পাঁচ বছরের কম বয়সি সাড়ে ৩ হাজার শিশু।

বেশ কয়েকটি দাতব্য সংস্থা বিভিন্ন স্থানে স্যুপ ও খিুচড়ি জাতীয় কিছু খাবার খোলা চুলায় রান্না করে মানুষকে দিতে চেষ্টা করছে। কিন্তু তা নিতেও কয়েকশ মানুষকে দীর্ঘ লাইন দিতে হচ্ছে। একটু খাবারের জন্য এমন লড়াই চালিয়েও এক বেলা পেট ভরে খেতে পারছে না গাযাবাসী।

ভয়াবহ এই মানবিক বিপর্যয়ের মাঝেও চলছে ইযরায়েলি বাহিনীর নিয়মিত হামলা। প্রতিটি মূল্যবান প্রাণ বাঁচাতে সর্বস্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে উদ্ধারকর্মীরা। কিন্তু বোমা হামলা থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারলেও, অনাহার থেকে মুক্তি মিলছে না অবরুদ্ধ এই উপত্যকার মানুষগুলোর।