একাত্তরসহ সব সময়ের ভুলের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির

এহসান জুয়েল, নিউ ইয়র্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩ ২০২৫, ২১:৪৩ হালনাগাদ: অক্টোবর ৩১ ২০২৫, ১৮:২৫

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ফাইল ছবি

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ফাইল ছবি

  • 0

নিউ ইয়র্কে বুধবার এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ অবস্থান তুলে ধরেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধসহ সব সময়ের ভুলের জন্য জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

নিউ ইয়র্কে বুধবার এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ অবস্থান তুলে ধরেন।

সপ্তাহব্যাপী সফরের প্রথম দিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে জামায়াতের আমির বলেন, ‘সাতচল্লিশ থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের আজ ২২ অক্টোবর রাত ৮টা ১১ মিনিটে পর্যন্ত আমাদের দ্বারা যে যেখানে যত কষ্ট পেয়েছেন, আমরা বিনা শর্তে তাদের কাছে মাফ চাই। এটা গোটা জাতি হলেও চাই, ব্যক্তি হলেও চাই। কোনো অসুবিধা নাই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষ। আমাদের সংগঠন একটা মানুষের সংগঠন। আমাদের ১০০টির মধ্যে ৯৯টি ডিসিশন (সিদ্ধান্ত) সঠিক, একটা তো বেঠিক হতে পারে। সেই বেঠিক সিদ্ধান্তের জন্য জাতির তো ক্ষতি হতে পারে।

‘‌তাহলে সেই ক্ষেত্রে আমার কোনো ডিসিশনে জাতির ক্ষতি হলে আমার মাফ চাইতে অসুবিধা কোথায়?’

একাত্তরে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, ‘একাত্তরে জামায়াতের কোনো ভূমিকা ছিল না? অবশ্যই ছিল। জামায়াত তখন ফিল (বিবেচনা) করেছিল যে, পাকিস্তান ইউনাইটেড (অখণ্ড) থাকা দরকার।

‘তখনও কিন্তু পাকিস্তান; আওয়ামী লীগের বহু লিডার পাকিস্তান সরকারের আন্ডারে চাকরি করেছে, বেতন নিয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগের লিডার পরিবারের অনেকে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের রেশন নিয়েছে, বেনিফিট নিয়েছে।’

ওই সময় সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি সম্পর্কে জামায়াতের অবস্থান তুলে ধরেন শফিকুর রহমান।

তিনি জানান, বিএনপির সঙ্গে সরকার গঠনে জামায়াতের কোনো আপত্তি নেই। বিএনপি ভবিষ্যতে ক্ষমতা গ্রহণ করলে সব দলের সঙ্গে দায়িত্ব ভাগাভাগি করে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশ নিতে ইচ্ছুক জামায়াত।

এ ছাড়া সেনাবাহিনীর কতিপয় সদস্যের বিচারের বিষয়েও জামায়াতের অবস্থান পরিস্কার করেন শফিকুর রহমান।

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের শুধু নয়, এ ধরনের অপরাধে জড়িত সবারই স্বচ্ছ বিচার দাবি করেন তিনি।

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে ভারতের সঙ্গে সম্মান ও সমতার ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের কারণে পুরোনো কোনো চুক্তি বাতিল হয়তো সম্ভব হবে না।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‌মেজরিটি-মাইনোরিটি নয়; সব মানুষের ঐক্যে বিশ্বাসী জামায়াত।

অ্যামেরিকা সফরকালে এখানকার কোনো রাজনীতিবিদ কিংবা শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও বিষয়টি এড়িয়ে যান এ নেতা।