পাপুয়া নিউ গিনিতে ভূমিধসে ২ হাজারের বেশি নিহতের আশঙ্কা

টিবিএন ডেস্ক

মে ২৭ ২০২৪, ১৩:২৮

স্থানীয়রা কোদাল হাতে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।ছবি: সংগৃহীত

স্থানীয়রা কোদাল হাতে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।ছবি: সংগৃহীত

  • 0

পাপুয়া নিউ গিনিতে ব্যাপক ভূমিধ্বসে ২ হাজারের বেশি লোক মাটি চাপা পড়ে নিহত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির সরকার সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে।

জাতিসংঘের অন্যতম সংস্থা আইওএম রোববার আশঙ্কা করেছে পাপুয়া নিউগিনিতে ভূমিধসে ৬৭০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে পাপুয়া নিউ গিনির ন্যাশনাল ডিজাস্টার সেন্টার জাতিসংঘের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে জানায়, তারা দুই হাজার মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা করছে।

সরকার বলছে, নৃগোষ্ঠীদের অসহযোগিতার কারণে ত্রাণ পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। তাই জীবিত ব্যক্তিদের খুঁজে পাওয়ার আশা ক্ষীণ হয়ে আসছে।

পাপুয়া নিউ গিনির এনগা প্রদেশের ইয়ামবালি গ্রামের কাছে মাইপ-মুলিতাকা জেলার ছয়টি গ্রামে শুক্রবার ভোর ৩টার দিকে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এসময় বেশির ভাগ মানুষ ঘুমাচ্ছিল। প্রায় দুই তলা উঁচু ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে দেড় শতাধিক বাড়ি। উদ্ধারকারীরা স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা মাটির নিচ থেকে চিৎকার শুনেছেন।

এ ঘটনায় মৃত মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে।

তবে স্থানীয় লোকজনের সংখ্যা আসলে কত তার সঠিক সংখ্যা জানা কঠিন। কারণ, পাপুয়া নিউ গিনিতে ২০০০ সালের পর আর নির্ভরযোগ্য কোন আদমশুমারি হয়নি। দেশটির পার্বত্য গ্রামগুলোতে অনেক মানুষের বাস রয়েছে।

ভূমিধসের ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় পার হয়েছে। তবে বাসিন্দারা এখনও কোদাল, লাঠি ও খালি হাত ব্যবহার করে ধ্বংসাবশেষ সরানোর চেষ্টা করছে এবং বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। এখন পর্যন্ত মাত্র সাতজনের লাশ পাওয়া গেছে।

দুর্ঘটনা কবলিত গ্রামগুলোর দূরবর্তী অবস্থানের কারণে ভারী সরঞ্জাম ও সাহায্য পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে। এছাড়া কাছাকাছি জায়গায় নৃগোষ্ঠীগুলোর সংঘাতের কারণে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।

জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রথম খননযন্ত্রটি পৌঁছাতে দেরি হয়েছে। এটি রোববার রাতে পৌঁছায়।

প্রাইমমিনিস্টার জেমস মারাপের অফিসে বলেছে যে বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে কাজ করছে পাপুয়া নিউ গিনির (পিএনজি) জরুরি কর্তৃপক্ষ।

অস্ট্রেলিয়া সোমবার পিএনজির জন্য প্রাথমিকভবে ১.৬৬ মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করে বলেছে, তারা উদ্ধার ও পুনরুদ্ধারের জন্য প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞদের পাঠাবে। অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স ইতোমধ্যে দেশটিতে লজিস্টিক সহায়তা দিচ্ছে।

চায়না পিএনজির দুর্যোগ ত্রাণ ও দুর্যোগ-পরবর্তী পুনর্গঠনের জন্য সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

পিএনজিতে ইউএন মাইগ্রেশন এজেন্সির চিফ সেরহান অ্যাক্টোপ্রাকের মতে, নৃগোষ্ঠীদের সংঘাত, বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে উদ্ধারকারী দলগুলো বিপজ্জনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাদের পক্ষে ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পুনরায় ভূমি ধসের আশঙ্কায় কর্মকর্তারা স্থানীয়দের সরিয়ে নেয়ায় প্রায় ২৫০ টিরও বেশি বাড়ি পরিত্যক্ত হয়েছে এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১,২৫০ জনেরও বেশি মানুষ।

অ্যাক্টোপ্রাক বলেন, ‘মানুষ বুঝতে পারছেন যে কাউকে জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা খুব কম।’


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন