মোনার্ক বা রাজা প্রজাপতি নিমফালিডাই গোত্রের একটি মিল্কউইড প্রজাপতি। অঞ্চলভেদে মোনার্ক প্রজাপতিকে মিল্কউইড, কমন টাইগার, পরিভ্রমণকারী হিসেবেও চেনে মানুষ। ধারণা করা হয়, ইংল্যান্ডের রাজা তৃতীয় উইলিয়ামের সম্মানে মোনার্ক নামকরণটি হয়েছে।
মোনার্ক প্রজাপতি এর পরিভ্রমণের জন্য বেশ বিখ্যাত। ইস্ট নর্থ অ্যামেরিকার মোনার্করা প্রতিবছর গ্রীষ্মের শেষে বা শরতে মধ্য অ্যামেরিকা, ক্যানাডার দক্ষিণাঞ্চল থেকে ফ্লোরিডা ও মেক্সিকোতে পরিভ্রমণে যায়।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, একটি মোনার্ক প্রজাপতির ডানায় সাদা দাগ যত বেশি থাকে তার ভ্রমণে সফল হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।
ইউনিভার্সিটি অফ জর্জিয়ার গবেষকরা ৪০০টি প্রজাপতির ডানার উপর জরিপ চালিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। তারা গবেষণায় দেখেছেন সফল প্রজাপতিদের ডানায় ৩ শতাংশ কম কালো এবং ৩ শতাংশ বেশি সাদা দাগ উপস্থিত ছিল।
দাগের এই পার্থক্য কীভাবে প্রজাপতিটিকে সাহায্য করে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেননি গবেষকেরা। তবে তাদের ধারণা, দাগগুলো ডানার চারপাশের বাতাসের প্রবাহকে পরিবর্তন করে মোনার্ককে সাহায্য করে।
জর্জিয়ার ওডাম স্কুল অফ ইকোলজি ইউনিভার্সিটির সহকারী গবেষক অ্যান্ডি ডেভিস বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম গাঢ় ডানাযুক্ত মোনার্করা পরিভ্রমণে বেশি সফল হবে কারণ অন্ধকার দাগগুলো ওড়ার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারে। তবে গবেষণায় আমরা এর বিপরীত ঘটনা খুঁজে পেয়েছি।’
মোনার্ক প্রজাপতি প্রবল ঠান্ডা ও উত্তরের দীর্ঘ শীতে টিকে থাকতে পারে না। তাই এরা মধ্য মেক্সিকোতে শীত কাটাতে যায়। এ যাত্রায় এদের ৩০০০ মাইল (৪৮২৮ কিলোমিটার) পর্যন্ত দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়।
মেক্সিকোতে পৌঁছানোর পরে মোনার্ক প্রজাপতি ২১০০-৪১০০ মিটার উচ্চতায় জন্মানো ওয়ামেল ফির গাছকে ঘিরে একসঙ্গে জড়ো হয়ে কম্বলের মতো ঢেকে দেয়। বসন্তে তারা আবার নিজ বাসস্থানে ফিরে আসার সময় পথে মিল্কউইড গুল্মে ডিম দেয়। বছরের পর বছর ধরে এভাবেই মোনার্ক প্রজাপতি বংশবিস্তার ও পরিভ্রমণ করে আসছে।
ডেভিস বলেন, ‘বেশিরভাগ সময় ডানা খোলা রেখে উড়ে যাওয়ার জন্য যাত্রার সময় মোনার্করা যে পরিমাণ সৌর শক্তি পায় তা ব্যাপক। হাজার বছর ধরে এই অভিযাত্রার কারণে তারা বাতাসে ওড়ার ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সৌর শক্তিকে পুঁজি করার একটি উপায় বের করেছে।’
গবেষকরা আরও বলেন, হতে পারে মোনার্কদের দীর্ঘ এ যাত্রায় বেশি পরিমাণে সৌরশক্তি গ্রহণের জন্য এরা সাদা দাগের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে।