কাখোভকা বাঁধ ধসে ইউক্রেইনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত
টিবিএন ডেস্ক
জুন ৭ ২০২৩, ১৬:৫৮
- 0
রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেইনের খেরসন শহরের কাছে কাখোভকা বাঁধ ধসের পর ডিনিপ্রো নদীতীরের ইউক্রেইনের ২৯টি শহর ও গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
কাখোভকা বাঁধের নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৪০ মাইল পর্যন্ত এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার পানিবন্দী মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে উদ্ধার করছেন খেরসন শহরের উদ্ধারকর্মীরা।
এতে রাশিয়ার নিম্ন অঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে। বাড়িঘর হারিয়েছেন দুই দেশের সীমান্তবর্তী জনগণ। বাঁধ ধসের পর উভয় দেশের হাজার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
ইউক্রেইনের মিনিস্ট্রি অফ এগ্রিকালচারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্যার পানি কমে আসলেও মানবসৃষ্ট এই দুর্যোগের প্রভাব থাকবে দীর্ঘদিন। তারা বলেন, ‘বাঁধ ধসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অন্তত পাঁচ বছর সময় লাগবে।’
কাখোভকার এই বিশাল জলরাশি একসময় সমুদ্রে গিয়ে মিশবে। এতে উঁচুভুমিতে দেখা দিবে খরা। বিশেষজ্ঞরা দুই দেশের কৃষি জমিতে সেঁচের পানি ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
এমনকি উভয় দেশের কৃষি অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়ার ভয়াবহতা সম্পর্কেও তারা সতর্ক করেছেন।
ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির যেলেনস্কি বলেছেন, কয়েক হাজার মানুষ পানীয় জলের অভাবে আছেন। ৪২ হাজার মানুষ বন্যার ঝুঁকিতে আছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক সংস্থা দ্য ইন্টারন্যাশনাল মনেটরি ফান্ড (আইএমএফ) বন্যার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ জানিয়েছেন।
দ্য ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটি (আইআরসি) জানিয়েছে, বন্যায় সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার বাসিন্দাকে উদ্ধারে তারা সর্বোচ্চ সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে।
বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র উড়িয়ে দেয়ার জন্য রাশিয়ান বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছে ইউক্রেইন। তবে রাশিয়ান কর্মকর্তারা সীমান্তবর্তী এলাকায় বাঁধটি ধসের জন্য ইউক্রেইনের হামলাকে দায়ী করেছেন।
প্রধান ইঞ্জিনিয়ার মাইকোলি কালিনিন বলেন, ‘সম্ভবত বাঁধটির ভেতরে মাইন স্থাপনের মাধ্যমে এটিকে ধ্বংস করা হয়েছে।
‘বাঁধটির বাইরে থেকে প্রচণ্ড শক্তিশালী আঘাত প্রতিরোধ করার সক্ষমতা রয়েছে। এটিকে সেভাবেই ডিজাইন করা হয়েছিলো। তবে ভেতর থেকে বাঁধটিকে এতো শক্তিশালী করা হয়নি।’
ইউক্রেইনের যুদ্ধে পরিবেশগত প্রভাব পর্যবেক্ষক উইম যুইজেনবার্গ বলেছেন, ‘ যদিও কোন স্পষ্ট প্রমাণ নেই তবে বাঁধ ধ্বংস রাশিয়ার ইচ্ছাকৃত পদক্ষেপ। এর সঙ্গে অ্যামেরিকার ইন্টিলিযেন্সও জড়িত রয়েছে।’