নিউ ইয়র্ক টাইমসের ‘ডাবল স্ট্যান্ডের’ সমালোচনায় প্রতিষ্ঠান-কর্মী

টিবিএন ডেস্ক

এপ্রিল ১৬ ২০২৩, ২১:১৫

নথি ফাঁসে জড়িত হিসেবে সন্দেহভাজন জ্যাক টাশিরা (বাঁয়ে) এবং নিউ ইয়র্ক টাইমস অফিস। ছবি: সংগৃহীত

নথি ফাঁসে জড়িত হিসেবে সন্দেহভাজন জ্যাক টাশিরা (বাঁয়ে) এবং নিউ ইয়র্ক টাইমস অফিস। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

পেন্টাগনের গোপন গোয়েন্দা নথি ফাঁসে জড়িত হিসেবে সন্দেহভাজন এয়ার ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য জ্যাক টাশিরার পরিচয় ফাঁস করে দেয়ায় নিউইয়র্ক টাইমসের কঠোর সমালোচনা করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানেরই এক কর্মী।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের মিলিটারি করসপন্ডেন্ট ডেভিড ফিলিপস এক টুইটে তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্বৈত সম্পাদকীয় নীতির অভিযোগ তুলেছেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে টুইটটি মুছে দেন তিনি। 

টুইটে ফিলিপস লেখেন, ‘এনওয়াইটি (নিউ ইয়র্ক টাইমস) ডিসকর্ডে টিএস ডক্স ফাঁস করা তরুণের পরিচয় খুঁজে বের করতে বেপরোয়া কাজ করেছে। হাস্যকরভাবে, যদি সেই একই ব্যক্তি এনওয়াইটির হাতে নথিগুলো তুলে দিতেন, তখন আমরা তার পরিচয় গোপন রাখতে বেপরোয়া থাকতাম।’ 

২১ বছর বয়সী টাশিরা যেসব গোপনীয় গোয়েন্দা নথি ছড়িয়ে দিয়েছেন তাকে অ্যামেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় তথ্য ফাঁসের ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসই প্রথম তাকে চিহ্নিত করে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দুই ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার হন টাশিরা। 

 

 

ম্যাসাচুসেটসের ডাইটনে নিজ বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেফতার করে এফবিআই। জ্যাক টাশিরা ম্যাসাচুসেটসের এয়ার ন্যাশনাল গার্ডের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের একজন আইটি স্পেশালিস্ট।

ফিলিপস অবশ্য কিছুক্ষণ পরেই তার টুইটটি মুছে দেন। পরে আরেক টুইটে তিনি লিখেন, ‘আমি এইমাত্র একটি টুইট মুছে দিয়েছি, যেখানে সূক্ষ্মতার ঘাটতি ছিল। শিগগিরই আরও অনেক কিছু আসছে।’

তবে তার মুছে দেয়া টুইটের স্ক্রিনশট স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ইনডিপেনডেন্ট জার্নালিস্ট গ্লেন গ্রিনওয়াল্ড ফিলিপসের ওই পোস্টের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে টুইটারে লিখেছেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল এনওয়াইটি-এর মিলিটারি রিপোর্টার ডেভিড ফিলিপস তার টুইটটি মুছে ফেলবেন (অথবা এটি মুছে ফেলতে বলা হবে), যেখানে তিনি নিজের অনুভূতির স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন।  তাই আমি গত রাতে এটির স্ক্রিনশট রেখেছি। এটি আসলে একটি  দারুণ ও গুরুত্বপূর্ণ স্বীকারোক্তি।’

এক অ্যামেরিকান কর্মকর্তা গত ৭ মে ‘টপ সিক্রেট’ চিহ্নিত এসব নথি ফাঁস হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ইউক্রেন সেনাবাহিনীর যুদ্ধ কৌশলের বিবরণ রয়েছে এসব নথিতে।

নথিগুলোর স্ক্রিনশট সোশ্যাল মিডিয়ায় কে ছড়িয়েছে- তা তদন্ত করছিল অ্যামেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস।

 

 

এর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলো কতটা বস্তুনিষ্ঠ তা যাচাইয়ে তদন্তের ঘোষণা দেয় পেন্টাগন। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, ইউক্রেনের যুদ্ধ সম্পর্কিত ছবিগুলো অন্তত এক মাসের পুরোনো।

অ্যামেরিকান কর্মকর্তারা বলছেন, ছড়িয়ে পড়া স্ক্রিনশটগুলো ইউক্রেন যুদ্ধ সংক্রান্ত পেন্টাগনের কিছু গোয়েন্দা স্লাইডের। তবে এগুলোর কিছু জায়গায় সম্পাদনা করা হয়েছে।

এক বিবৃতিতে পেন্টাগনের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সাবরিনা সিং বলেন, ‘আমরা ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোর ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছি। এসব ছবি ও নথি অ্যামেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা এবং আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রের উপর কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে কিনা তা ডিফেন্স ডিপার্টমেন্ট এবং ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস যৌথভাবে যাচাই করছে।’

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন জানিয়েছে, কয়েক মাস আগে নথিগুলো ফাঁস হয়। শুরুতে সেগুলো সামাজিক মাধ্যমে একটি ছোট গেমিং গ্রুপের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। পরে তা অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে।

নথি ফাঁসের অভিযোগ প্রমাণিত হলে জ্যাক টাশিরার ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। 


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন